সন্দীপ্তা সেন ও স্বামী সৌম্য মুখোপাধ্যায়।ছবি:সংগৃহীত
কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মনোবিদ সন্দীপ্তা সেন। আর কিছুদিনের মধ্যে প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করবেন স্বামী সৌম্য মুখোপাধ্যায়।
'ফুড ফর থট’ বিষয়টা খুবই ‘থটফুল’, জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী। খাওয়াদাওয়া নিয়ে অন-অফ চলতেই থাকে তাঁর। কখনও প্রচুর খেয়ে ফেলেন, কখনও থাকেন স্ট্রিক্ট ডায়েটে। জিম না-পছন্দ, তাই বাড়িতেই যোগাভ্যাস করেন। সামনেই একটি ছবির কাজ আছে তাঁর। ফলে ডায়েটে মন বসিয়েছেন।
অল্প বয়সে একেবারেই ডায়েটিং করতেন না সন্দীপ্তা। দু’টো শিঙাড়ার সঙ্গে দু’টো লাড্ডু পটাপট মুখে পুরতেন। বলেছেন, ‘আমি তখন ‘দুর্গা’ সিরিয়াল করি, কাঠির মতো ছিলাম। ভাবতে পারবেন না, আমার খাওয়াদাওয়ার বহর কী সাংঘাতিক ছিল! সেটে বিকেল নামলেই উল্টোপাল্টা খাওয়া শুরু করতাম। ‘প্রতিদান’, ‘তুমি আসবে বলে’ সিরিয়ালের সময়ে কখনও টানা মোমো খেয়েছি, কখনও আলুর রোল।’ স্বীকার করেছেন, কাজের মধ্যে থাকলে খাবার নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না অভিনেত্রী। স্যান্ডউইচ তাঁর গো টু ফুড। মাছ ভালোবাসেন বলে নিজেকে বিড়ালের সঙ্গে তুলনা করেছেন। চারটে বড় মাছের পিস অনায়াসে খেতে পারেন। মাছের মাথা তাঁর প্রিয়। বলেছেন, ‘আমি যখন পমফ্রেট মাছ খাই, প্লেটে কিছু পড়ে থাকে না।’ আগে ভালো না বাসলেও, এখন জমিয়ে ইলিশও খান। ডায়েটে আছেন বলে মায়ের হাতের টেস্টি চিঁড়ের পোলাও খাচ্ছেন খুব। আরও একটা কনফেশন করেছেন, ডায়েটে থাকুন আর না-ই থাকুন, সন্দীপ্তা চুরমুর লাভার। এতে নাকি তাঁর ওজন একেবারেই বাড়ে না। আর পিৎজ়া! মুড অন করতে সেটাই নাকি ভরসা।
বাঙালি খাবারের পরেই কেরলের খাবারকে নম্বর দিয়েছেন অভিনেত্রী। মালয়ালি রান্নার বিকল্প খুঁজে পাননি ভারতবর্ষের কোথাও। দক্ষিণ ভারতীয় রান্না মানেই ইডলি-দোসা, সেই মিথ ভাঙতে বলেছেন তাঁর অনুরাগীদের। বলেছেন, ‘কেরলের মালাবার পারাঠা, মালাবার প্রন কারি, মিট রোস্ট কারি, ফিশ মৌলি, মাটন স্টুর সঙ্গে আপ্পাম... আমার জিভে জল আসছে। কেরলের পরোটা মুখে দিলাম, গলে গেল। প্লিজ় জায়গাটাকে জাজ করবেন না, দে মেক অ্যামেজ়িং ফুড!’
সন্দীপ্তা বাটার ছাড়া নান খেতে পারেন না। দরকারে এক্সট্রা মাখন চেয়ে বসেন। প্রচণ্ড ঘুরতে ভালোবাসেন অভিনেত্রী। তাঁর সোলো ট্রিপের তালিকায় থাকে দেশ-বিদেশের নানা জায়গা। স্বামী সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বেশ কিছু দেশ ঘুরেছেন। সব জায়গায় গিয়ে একটা জিনিসের প্রতি লোভ সামলাতে পারেন না। তা হলো, ক্যান্ডি ফ্লস। যেটাকে বাংলায় মজা করে বুড়িমার চুলও বলা হয়। সন্দীপ্তা বলেছেন, ‘আমার ঘুরতে যাওয়ার টু-ডু লিস্টের মধ্যে রয়েছে ক্যান্ডি ফ্লস। আইফেল টাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়েও ক্যান্ডি ফ্লস খেয়েছি।’ মিষ্টি হেসে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ক্যান্ডি ফ্লস তাঁর দুর্বলতা। ক্যান্ডি ফ্লস হাতে নতুন জায়গায় ঘোরা তাঁকে আলাদাই আনন্দ দেয়।
অঙ্কুশের মুখে এই কথা শুনেই যিশু বলেন, ‘অসভ্য’
বেড়াতে গেলে আরও একটা বিষয় এক্সপ্লোর করেন সন্দীপ্তা। দেশের মধ্যে প্রত্যেক জায়গার ফুচকা ট্রাই করে দেখেন। বলেছেন, ‘দেশের প্রত্যেক অংশে গিয়ে ফুচকা খেয়েছি এবং গর্বের সঙ্গে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছি, কলকাতার মতো ফুচকা আর কোথাও পাওয়া যায় না।’ তামিলনাড়ুর ফুচকা খেয়ে খুবই হতাশ হয়েছেন অভিনেত্রী। বলেছেন, ‘ওটা যে কী ছিল, ফুচকার মধ্যে গরম ঘুগনি দিয়ে...’। এটাও জানিয়েছেন, ভালো ফুচকা তৈরিতে কলকাতার পরে রয়েছে আমেদাবাদ। গল্পের ছলে সন্দীপ্তা জানিয়েছেন তাঁর জীবনের ক্যান্ডি ফ্লস এবং ফুচকা কে? ক্যান্ডি ফ্লসের সুইটনেসের সঙ্গে স্বামী সৌম্যর মিষ্টি স্বভাবের তুলনা করেছেন। তাঁর জীবনে ফুচকার মতোই টক-ঝাল-মিষ্টি হলেন মা।
৭ ডিসেম্বর সন্দীপ্তা ও সৌম্যর প্রথম বিবাহবার্ষিকী। নতুন সাজানো বাড়ির কোজ়ি ঘরে বসে সৌম্যর সঙ্গে তাঁর কমফর্ট ফুড খাওয়াই অভিনেত্রীর কাছে দারুণ রোম্যান্টিক। স্বামীর হাতের রান্নার ফ্যান সন্দীপ্তা। বলেন, ‘সৌম্য রান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে খুবই পছন্দ করে। সৌম্য সি-ফুড খায় না। আমার স্বামী আমাকে কিচেনে একা থাকতে দেয় না। আমরা একসঙ্গে রান্না করি। ওঁর হাতের আন্ধ্রা পোলাও, জাস্ট ওয়াও। আমি জীবনে প্রথম কড়াইশুঁটির কচুরি বানাই, ও প্রথম আলুর দম তৈরি করে, দু’টোই দারুণ হয়েছিল।’ সৌম্যর সঙ্গে তাঁর এক বছরের দাম্পত্য কেমন কাটল, বলতে গিয়ে চোখ চিকচিক করে ওঠে সন্দীপ্তার। তিনি বলেন, ‘টাচ উড, খুব ভালো কেটেছে। আমাদের মধ্যে ঝগড়া প্রায় হয়ই না। আমরা আলোচনায় বিশ্বাসী। চেঁচাই না। তাই অশান্তি হয় না।
নাহিদা