হুমায়ূন আহমেদ ও নিষাদ হুমায়ূন।
গত ১৩ নভেম্বর ছিল বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। এ দিনটি উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ওঠে তার পুত্র নিষাদ হুমায়ূনের কিছু ভিডিও। যেখানে তিনি তার বাবা হুমায়ূন আহমেদ ও জীবনের নানা দিক নিয়ে নিজের ভাবনা শেয়ার করেছেন।
ভিডিওগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ ভিডিওতে নিষাদ তার বাবা হুমায়ূন আহমেদকে "পাগল" হিসেবে উল্লেখ করেন, এবং তার বিষন্নতার অনুভূতির গভীরতা নিয়ে আলোচনা করেন।
নিষাদ বলেন, "বিষন্নতা আসলে একটি ভয়ঙ্কর অনুভূতি, তবে প্রকৃতির মধ্যে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার এক অদ্ভুত শান্তি আছে।" তিনি আরও বলেন, প্রকৃত আনন্দ তখনই পাওয়া সম্ভব, যখন আমরা পৃথিবীর সুন্দরীতা ও প্রকৃতির শান্তি উপভোগ করি, না যে আমরা টাকা বা আধুনিক যন্ত্রপাতি চাই।
নিষাদ আরও বলেন, "ফোনে বা ইন্টারনেটে শান্তি পাওয়া যায় না। প্রকৃতিতে, বিশেষ করে নুহাশ পল্লীতে এসে আমি সব কিছু ভুলে যাই। শহরের মধ্যে যখন ইন্টারনেট নেই, তখন অনেকেই বলতে পারে 'কি করব?' কিন্তু এখানে এসে আমি বুঝেছি, প্রকৃতির মধ্যে বসে থাকা, রোদ, বাতাস, আকাশের সৌন্দর্য... এসবই আসল শান্তি।"
নিষাদ বলে, "যখন এখানে আসি, তখন ডেটা কিনে এনেছি, কিন্তু এরপর আর ফোনটা হাতে ধরিনি। প্রকৃতির মাঝে রয়েছি। কখনও কখনও মনে হয় যদি নতুন আইফোন বা এয়ারপডস থাকত, বা একটি নতুন গাড়ি থাকত, তাহলে কেমন হতো! কিন্তু এখানে এসে এসব সব ভুলে যাই। প্রকৃতির শান্তি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।"
এদিকে নিজের বাবা হুমায়ুন আহমেদকে পাগল উল্লেখ করে নিষাদ বলেন, পাগল ছাড়া কী পৃথিবী চলবে? পাগল ছাড়া কিন্তু পৃথিবী চলবে না। স্যার আইজাক নিউটন কত বড় পাগল! তার পাগলামি ছাড়া কী পদার্থবিজ্ঞান হতো? আমি শুয়ে আছি, আমার মাথার ওপর যদি একটা আপেল পড়ে আমি ভাবব, ওহ আপেল পড়ছে! কিন্তু স্যার আইজাক নিউটন কিন্তু নিজে নিজেই ভেবেছে কেন আপেলটা পড়ল? এরপর পুরো জীবন কাজ করেছে কেন আপেলটা নিচে পড়ল, এইটার ব্যাপারে। এরপর সে পদার্থবিজ্ঞান আবিষ্কার করল। আসলে পাগলটা আমাদের লাগে। আমার বাবা অবশ্যই পাগল তাই তিনি একজন অসাধারণ মানুষ। পাগল আমাদের লাগবে। পাগল ছাড়া আইডিয়া পাব না।
এ ভিডিওগুলোর মাধ্যমে নিষাদ হুমায়ূন তার দর্শকদের কাছে এমন এক বার্তা পৌঁছাতে চেয়েছেন, যেখানে প্রযুক্তি ও আধুনিকতা থেকে দূরে প্রকৃতির মাঝে শান্তি খোঁজা আরও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
নুসরাত
