ভারতের সবচেয়ে ধনী অভিনেত্রী হিসেবে জুহি চাওলার নাম উঠে এসেছে সম্প্রতি। ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট অনুযায়ী, তার সম্পদের পরিমাণ ৪৬০০ কোটি টাকা। ভারতের অন্য কোনো নারী অভিনেত্রী তার ধন-সম্পদের কাছাকাছি পৌঁছতে পারেননি। তবে প্রায় তিন দশক আগে একজন অভিনেত্রী ছিলেন, যিনি আজকের হিসাবে আরও ধনী ছিলেন। এই বিশাল সম্পদ কেবল অর্থেই সীমাবদ্ধ ছিল না; তার পোশাক এবং গহনার সংগ্রহ রাজপরিবারকেও হার মানায়।
৬০ এবং ৭০-এর দশকের সুপারস্টার জয়ললিতা
জয়লললিতা তামিল সিনেমার কিংবদন্তি এবং ভারতের অন্যতম সফল অভিনেত্রী ছিলেন। ১৯৬০ এবং ৭০-এর দশকে তামিল ও তেলেগু সিনেমায় শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেন তিনি। বলিউডেও তার কিছু হিট সিনেমা রয়েছে। তবে, সিনেমার চেয়ে রাজনীতিতে প্রবেশের পরই তার সম্পদ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
১৯৮০-এর দশকে নিজের মেন্টর এমজি রামচন্দ্রনের দেখানো পথে এআইএডিএমকে দলে যোগ দেন জয়লললিতা। রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে একটি মেয়াদ পূর্ণ করার পর তিনি তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং পাঁচবার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
শাড়ি এবং সোনার প্রতি ভালোবাসা
সিনেমা এবং রাজনীতির সময়েও জয়লললিতা শাড়ির প্রতি অনুরাগী ছিলেন। ১৯৯৭ সালে চেন্নাইয়ের পোয়েস গার্ডেনের তার বাড়িতে একটি তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধারের অভিযোগ ওঠে। তার ঘোষিত সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৮৮ কোটি টাকা। যদি এই সম্পদের মূল্য আজকের মুদ্রাস্ফীতির হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে এটি প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার সমতুল্য।
তল্লাশিতে তার সংগ্রহে ১০,৫০০ শাড়ি, ৭৫০ জোড়া জুতো, ৮০০ কেজি রূপা এবং ২৮ কেজি সোনা পাওয়া যায়। ২০১৬ সালে আরেকটি তদন্তে তার সংগ্রহে ১২৫০ কেজি রূপা এবং ২১ কেজি সোনার কথা জানা যায়।
বড় পর্দায় জয়লললিতার জীবন
জয়লললিতা তার ক্যারিয়ারের শীর্ষে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে অভিনয় ছেড়ে দেন। এরপর তিনি কেবল চরিত্র হিসেবে পর্দায় ফিরে আসেন। তার জীবনী এবং তাকে অনুপ্রাণিত করে এমন চরিত্র নিয়ে কমপক্ষে সাতটি বায়োপিক নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়। যদিও রাজনৈতিক কারণে অনেক প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি।
মনিরত্নম পরিচালিত ইরুভার ছিল প্রথম চলচ্চিত্র, যেখানে ঐশ্বরিয়া রাই অভিনয় করেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর চরিত্রে। ২০২১ সালে, রম্যা কৃষ্ণন কুইন ওয়েব সিরিজে একটি চরিত্রে অভিনয় করেন, যা জয়লললিতার জীবন দ্বারা অনুপ্রাণিত। কঙ্গনা রানাউত অভিনীত থালাইভি ছিল তার প্রথম আনুষ্ঠানিক বায়োপিক।
অন্য বেশ কিছু প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়া হলেও তা কখনো মুক্তি পায়নি। এর মধ্যে রয়েছে রাগিনি দ্বিবেদীর অম্মা, অনুষ্কা শেট্টির আরেকটি অম্মা, এবং ঐশ্বরিয়া রাই অভিনীত থাই: পুরাচি থালাইভি। ২০১৯ সালে, কজল এবং আমলা পল অভিনীত শশিলথা ঘোষণা করা হয়, যা জয়লললিতা এবং তার সহকারী শশিকলার সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। ২০২১ সালে নির্মিতব্য দ্য আয়রন লেডি ছবির জন্য নিত্যা মেনেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল, তবে সেটিও মুক্তি পায়নি।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
নাহিদা