ছবি: সংগৃহীত
আবারো নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন কঙ্গনা রানাউত। প্রায় সব বিষয়েই সরব থাকতে দেখা যায় এই বলিউড অভিনেত্রীকে, আর তাই অনেকেই তাকে "ঠোঁটকাটা" বলেও অভিহিত করেন। সামাজিক এবং রাজনৈতিক মন্তব্যের জন্য বরাবরই আলোচনায় থাকেন কঙ্গনা, কিন্তু কখনো কখনো এই মন্তব্য তাকে বিপদে ফেলে দেয়। এবার তিনি মহাত্মা গান্ধী ও কৃষক আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে সমস্যায় পড়েছেন।
সম্প্রতি, উত্তর প্রদেশের আগরার এমপি-এমএলএ আদালত থেকে কঙ্গনার বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়েছে। আইনজীবী রমাশঙ্কর শর্মার অভিযোগ, কঙ্গনা কৃষক আন্দোলন এবং মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। এই কারণে তাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগস্ট মাসে কঙ্গনা এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করেছিলেন, ‘‘ভারতে কৃষক আন্দোলন বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতির মতো হয়ে উঠতে পারত। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিচক্ষণতা এবং দৃঢ় সিদ্ধান্তের কারণে তা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘কৃষক আন্দোলনের সময় বহু লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে এবং ওই সময়ে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।’’ কঙ্গনার এই মন্তব্যগুলো তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে এবং কৃষক আন্দোলনকে নিয়ে তার বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি অনেকেই মেনে নিতে পারেননি।
এছাড়া, ২ অক্টোবর গান্ধীজয়ন্তীর দিন কঙ্গনা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি লেখেন, ‘‘দেশের কোনো পিতা হয় না, লাল (সন্তান) হয়, ধন্য এই ভারতমাতার সন্তানরা।’’ একই পোস্টে তিনি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ১২০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানান। তবে, এই পোস্টটি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিরোধিতার মুখে পড়ে, এবং রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা তৈরি হয়।
একই সময়, কঙ্গনা আরও একটি পোস্টে গান্ধীর আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রশংসা করেন, বিশেষত তাঁর নেতৃত্বে দেশ তার স্বচ্ছতার দিকে এগিয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেন। এই মন্তব্যও কংগ্রেসের নেতাদের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, শোকের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন কঙ্গনা রানাউত। সম্প্রতি তিনি তার প্রিয় দিদিমাকে হারিয়েছেন, আর এখন এই নতুন বিতর্কের কারণে আরও এক ধরনের মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন। বলিউডের "কুইন" হিসেবে পরিচিত কঙ্গনা এবার তার মন্তব্যের জন্য আইনি জটিলতায় পড়েছেন। আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে এই বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে তাকে।
কঙ্গনার প্রতি জনমত কীভাবে গড়ে ওঠে এবং তার রাজনৈতিক মন্তব্যের পরবর্তী প্রভাব কী হবে, সেটি এখন দেখার বিষয়।
নুসরাত