ছবি: সংগৃহীত
২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ঘটিত মর্মান্তিক ঘটনার পর চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন, তা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এক বিবৃতিতে দাবি করা হচ্ছে, ওই সময় ফারুকী সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিলেন যে, "শাপলা চত্বর জঞ্জালমুক্ত হয়েছে।" তবে, এই বক্তব্যকে মিথ্যা উল্লেখ করে এই ইস্যু সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে ফারুকী লিখেছেন, আপনারা যারা আমার কাজকর্ম সম্পর্কে অবগত আছেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন মানুষ এবং ফিল্মমেকার হিসাবে আমি মধ্যপন্থার। আমি চাই পরস্পরবিরোধী মত নিয়াও আমরা এমপ্যাথি লইয়া পাশাপাশি থাকি। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে একে অপরের পাশাপাশি থাকা এবং কোনো ধর্মীয় বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় কটাক্ষ এবং হাঙ্গামায় না জড়ানোর জন্য একটা লেখা লিখে বহুবিধ ট্যাগও খেয়েছি। আমাদের আজিজ মার্কেটে দীপন খুনের পর লিখছিলাম।
শাপলা চত্বরের ঘটনা নিয়ে দেওয়া পোস্ট প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘বহু ডিজিটাল কার্ড এবং ফেইক স্ক্রিনশট ঘুরছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে, আমি নাকি ২০১৩ সালে বলেছি— “শাপলা চত্বর জজ্ঞালমুক্ত হয়েছে।” ডাহা মিথ্যা কথা। শাপলা চত্বরের ঘটনার পরে আমি বরং লিখেছি, মাদ্রাসার সাধারণ ছাত্রদের মৃত্যুতে আমি ঘুমাতে পারছি না! ইংরেজিতে লেখা পোস্টটা আগ্রহীরা দেখে আসতে পারেন। আমার ছবি দিয়ে কিছু কিছু ফেইক উইকিপিডিয়া স্ক্রিনশটও ঘুরছে। প্লিজ ইগনোর অল দিজ।
শাপলা চত্বরে মাদ্রাসা ছাত্রদের মৃত্যুতে ব্যথিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ফারুকী লিখেছেন, আমার আপন দুই ভাই মাদ্রাসায় পড়েছে। আমি সাধারণ মাদ্রাসা ছাত্রদের মৃত্যুতে উল্লাস করবো? মাদ্রাসার ছাত্র কেন, কোনো মানুষের মৃত্যুতে আমি উল্লাস করবো? আমি তো এমনকি অপরাধীর মৃত্যুতেও শোক করি। মিথ্যা কথা ছড়ানোরও তো একটা মাত্রা থাকে। আমার প্রযোজনায় আমার ছোট ভাই কিবরিয়া পরিচালনা করেছিল “আব্দুল্লাহ”, যেখানে দেখানো হয়েছে কেবল মাদ্রাসায় পড়ার কারণে একটা ছেলেকে আমাদের সো-কলড প্রগতিশীল সমাজে কী রকম স্টিগমা ফেস করতে হয়। বোরখা স্টিগমাটাইজ করা নিয়ে বহুবার লিখেছি।
সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি লিখেন, দয়া করে সব কিছু বিশ্বাস করার আগে একটু কষ্ট করে যাচাই করে নিন। আমরা আমাদের কাজটা এনজয় করছি। আশা করি আগামী সপ্তাহের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুটা করতে পারবো যার ভেতর দিয়ে প্রাথমিকভাবে আট বিভাগীয় শহরে একটা নবতরঙ্গ শুরু করতে পারবো। পারবো জুলাই ন্যারেটিভ নির্মাণ করতে, ১৫ বছরের দুঃশাসনের এক্সরে রিপোর্ট তৈরি করতে। সো লেটস নট ওয়েস্ট আওয়ার এনার্জি বিহাইন্ড হেইট্রেড!’
নুসরাত