বর্ষীয়ান অভিনেতা ও নাট্যকার মনোজ মিত্র আর নেই। মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে কলকাতার একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বার্ধ্যকজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন এ শিল্পী। ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল কলকাতার সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। অভিনেতার মেয়ে ময়ূরী মিত্র জানিয়েছিলেন, তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। হার্ট ঠিক করে পাম্প করছে না। ওষুধের সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাকে। তার পর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তার মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ গোটা অভিনয় অঙ্গন।
১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার ধুলিহর গ্রামে জন্ম হয় তার। অভিনেতার বাবা অশোককুমার মিত্র এবং মা ছিলেন রাধারাণী মিত্র। প্রয়াত অভিনেতার বাবা গ্রামের প্রথম বি.এ পাশ ছিলেন। দেশভাগের পর কলকাতায় চলে আসেন তারা। কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজের ছাত্র ছিলেন মনোজ। ১৯৫৮ সালে স্কটিশ চার্চ থেকে দর্শন অনার্স-সহ স্নাতক হন তিনি। শুরু“ করেন থিয়েটার।
মনোজ মিত্রের তৈরি নাট্যদলের নাম ছিল ঋতায়ন। একগুচ্ছ নাটক করেছিলেন তিনি। সেই তালিকায় রয়েছে ‘অবসন্ন প্রজাপতি’, ‘নীলা’, ‘মৃত্যুর চোখে জল’, ‘সিংহদ্বার’, ‘ফেরা’-সহ আরও অনেক নাটক। এছাড়াও বহু বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাকে। তার অভিনীত বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি হলো ‘বাঞ্ছারামের বাগান’, ‘শত্রু’ প্রভৃতি। বহুদিন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্য বিভাগে অধ্যাপক হিসাবে পড়িয়েছেন। ২০০৩ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। তার প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’ লেখেন ১৯৫৯ সালে কিন্তু ১৯৭২-এ ‘চাক ভাঙা মধু’ নাটকের মাধ্যমে তিনি পরিচিতি তৈরি করেন। ওই নাটকটির মঞ্চ নির্দেশনা করেন বিভাস চক্রবর্তী। নাট্যগোষ্ঠী ‘সুন্দরম’ প্রতিষ্ঠাতাও মনোজ মিত্র। সারা জীবনে বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন এই শিল্পী। বলা বাহুল্য, মনোজ মিত্রের মৃত্যু একটি যুগের অবসান বলেই মনে করছেন কলকাতার সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
গৌতম/রাজু