ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

গান ও কথনে লালন সাঁইকে স্মরণ

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

গান ও কথনে লালন সাঁইকে স্মরণ

লালন সাঁইয়ের স্মরণ উৎসব

 

সুরের আশ্রয়ে এবং তত্ত্ব আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত লালন স্মরণোৎসব শুরু। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় তিন দিনব্যাপী বর্ণিল এ উৎসবের সূচনা হয়। তাৎক্ষণিক নিবন্ধনের মাধ্যমে শ্রোতারা শামিল হয়েছেন এই আয়োজনে। গানের পরিবেশনার সঙ্গে তারা উপভোগ করেছেন  ফকির লালনের সম্প্রীতি মানবতাবাদী দর্শননির্ভর তাত্ত্বিক আলোচনা। 

বৃহস্পতিবার ‘আশাসিন্ধু তীরে’ শীর্ষক প্রথম দিনের আয়োজন উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ।  সভাপতিত্তব করেন একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শারমীন মুরশিদ বলেন, ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভাজিত হলে ঠিক তারপরেই আমরা দেখলাম ভাষা সুফি লালন ধারা বিকাশ হতে দেয়া হয়নি।  পশ্চিমবঙ্গ যেমন এদেশের ইসলাম সত্তা, মুসলিম সত্তা বোঝেনি ঠিক  তেমনিই পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তানও বুঝেনি বাঙালি সত্তা।  সে কারণেই আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন,  এ ধরনের অনুষ্ঠান আরো অনেক হতে হবে এবং মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। নতুন করে দেশ গড়ার যে সুযোগ আমরা পেয়েছি  সেই সাহস যেন আমাদের থাকে,  যে সাহসে শত শত শিশু মৃত্যুবরণ করল।  তাই নতুন জন্মানোর জায়গায় আমরা শিল্পকলাকে আমরা দেখতে চাই।

অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক এক অভ্যুত্থান উত্তর সময়ে লালন ফকির সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস নতুন কিছু তাৎপর্য বহন করে। একরৈখিক জাতীয়তাবাদের ফ্যাসিবাদ থেকে ভাবগত মুক্তির বিভিন্ন চিহ্ন আমরা লালন থেকে পেতে পারি। জাতিভেদ পন্থার বিপরীতে লালন সাঁইজির সাধনার উপায় ছিল শিল্পকলা, শ্রেনীকেন্দ্রিক রাজনীতির বাইরে আমাদের নতুন রাজনীতি বন্দোবস্তের দার্শনিক ভিত্তি দিতে সক্ষম লালন সাঁইজি। সাংস্কৃতিক কর্মকা-কে ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যাশায় সৈয়দ জামিল বলেন, জাতীয় বাজেটের ৩ ভাগ যেন সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়। এরপর ফকির লালন সাঁইকে উপস্থাপন করেন শিল্পী অরূপ রাহী ও জহুরা ফকিরানী। তাদের গান ও তত্ত্বে লালন সাঁইজিকে স্মরণ করা হয়। 

শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় দ্বিতীয় দিনের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে একাডেমির নন্দন মঞ্চে। এদিন  অনুষ্ঠিত ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ শীর্ষক সাধুমেলা। এই মেলার অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে সংগীতাসর।  সেই আসরে গান শোনাবেন দেশের নানা প্রান্তের নবীন-প্রবীণ থেকে বিশিষ্ট বাউলবৃন্দ। পরিবেশনায় অংশ নেওয়া এই বাউলদের মধ্যে রয়েছেন পাগলা বাবুল, টুনটুন ফকির, চন্দনা মজুমদার, শান্তা বাউল, রাবেয়া আক্তার, বিপ্লব ফকিরানী, আয়নাল হক, আরিফ বাউল, শ্রীকৃষ্ণ গোপাল,  বিপ্লব ফকির প্রমা রাহা প্রমুখ।

মনোয়ার/শহিদ

×