ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

গণঅভ্যুত্থানে কবিতা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ

ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় গণতন্ত্র শব্দটি গুম হয়ে গেছে

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ১৬ অক্টোবর ২০২৪; আপডেট: ২০:৫৯, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় গণতন্ত্র শব্দটি গুম হয়ে গেছে

 সলিমুল্লাহ খান

পনের বছরের বেশি সময় ধরে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম থাকায় গণতন্ত্র শব্দটিই গুম হয়ে  গেছে বলে। দেশের সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে, গণতন্ত্র তিরোহিত করে জনগণকে নির্যাতনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে কেবল নির্যাতন করে গেছে।

বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক বিপ্লবে কবিতা ও কবিদের কবিতা পাঠ’ শিরোনামের আয়োজনে প্রধান বক্তার ভাষণে এসব কথা বলেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।  এ অনুষ্ঠানে গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় কবিতা ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। 

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে গণতন্ত্র শব্দটিকে অর্থহীন করে দিয়েছে৷ গণতন্ত্র শব্দটির মর্মকথাই ফ্যাসিবাদ গুম করে দিয়েছে।  যে শাসন ব্যবস্থা দিনের পর দিন মানুষের অধিকার খর্ব করে, মানুষকে গুম করে রাখে সেটি কি প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ছিল?

অন্তর্বতীকালীন সরকারের বৈধতা নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনা প্রসঙ্গে সলিমুল্লাহ খান বলেন, অনেকে বলছেন এটি তো রাজনৈতিক সরকার নয়। এটি সংবিধানসম্মত সরকারও নয়। তাদের বলছি, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানই এই সরকারের বৈধতা দিয়েছে। আর যে সংবিধানের কথা বলা হচ্ছে  সেটিও নিজেই নিজেকে বিলুপ্ত করেছে। সংবিধানের মূল কথা ছিল, মানুষে মানুষে কোনো  বৈষম্য থাকবে না। সবাই তার প্রতিভা অনুসারে ফলাফল পাবে। সেটি কী হয়েছে? 

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে আন্দোলনের সমন্বয়কদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ প্রসঙ্গে সলিমুল্লাহ খান বলেন, এই আন্দোলন-সংগ্রামের হোতাদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের দুস্কৃতিকারী, জঙ্গি বলা হয়েছে। কিন্তু যারা ক্ষমতা ধরে রেখে দীর্ঘদিন জনগণের ওপর অত্যাচার করেছে তারাই তো আসলে জঙ্গি। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, তিন ধরণের শাসনব্যবস্থার মধ্যে সমাজতন্ত্র যখন অধোগতির দিকে যায় তখন সেটিকে আমরা গণতন্ত্র বলি। গণতন্ত্রের এই যুগে আমরা তো কেবল স্বৈরতন্ত্রই দেখছি। 

আমরা যে গণতান্ত্রিক বিপ্লবের কথা বলছি সেটি আসবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে সব ধরণের বৈষম্য যদি দূর করতে পারি।  তবে সেটি বেশ দীর্ঘ প্রক্রিয়া। স্বল্প সময়ে যেটি করতে পারি, সেটি হল জনগণের  ভোটাধিকার নিশ্চিত করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করা।  তাহলে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক বিপ্লব সফল হবে। 

জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে জাতীয় কবিতার পরিষদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে আন্দোলনে জাতীয় কবিতা পরিষদের ভূমিকা কী ছিল? তারা মানুষের মনের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারেননি। তারা তো আসলে কবি নন, হয়ে গেছেন আমলা। কবিদের কাজ তো শুধু কবিতা লেখা না, সমাজেও তো তাদের ভূমিকা থাকা দরকার। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হান। স্বাগত ভাষণ কবিতা পরিষদের সদস্য সচিব কবি রেজাউদ্দিন স্ট্যালিন। এছাড়া বক্তব্য দেন গীতিকবি শহীদুল্লাহ্ ফরাজী ও মনিরুল ইসলাম মনি৷ 

মনোয়ার/শহিদ

×