ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

দর্শকসমাদৃত ময়ূর সিংহাসন নাটকের ১২৩ মঞ্চায়ন

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:০২, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

দর্শকসমাদৃত ময়ূর সিংহাসন নাটকের ১২৩ মঞ্চায়ন

শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ ময়ূর সিংহাসন নাটকের দৃশ্য

শুক্রবার ছুটির দিন থেকেই যেন পুনরায় সরব হয়ে উঠেছে ঢাকার নাট্যমঞ্চ। শনিবারও অব্যাহত ছিল সেই সরবতা। শারদীয় দুর্গোৎসবের উচ্ছ্বাসময় আমেজকে সঙ্গী করে এদিনও প্রাণবন্ত ছিল থিয়েটারপাড়া। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন এবং বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে ভিড় জমেছিল নাট্যপ্রেমীদের। দুই নাট্যমঞ্চে মঞ্চস্থ হয়েছে ভিন্ন দুই নাট্যদলের দুই নাটক। শারদীয় সন্ধ্যায় মহিলা সমিতিতে মঞ্চস্থ হয়েছে নাট্যদল এথিকের নাটক ‘হাঁড়ি ফাটিবে’।

অন্যদিকে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হয়েছে নাট্যদলের আরণ্যকের নাটক ‘ময়ূর সিংহাসন’। এই দুই নাটকের মধ্যে ময়ূর সিংহাসন নাটক নিয়ে ছিল দর্শকের বিশেষ কৌতূহল। দর্শকসমাদৃত এই প্রযোজনাটিতে সাম্প্রদায়িকতার সমান্তরালে সামরিক শাসনের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এদিন নাটকটির ১২৩তম মঞ্চায়ন হয়। প্রয়াত নাট্যকার মান্নান রচিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন শাহ আলম দুলাল। 
প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক শাহ আলম দুলাল বলেন, ১৯৯১ সালে নাটকটি মঞ্চে এলেও ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে রয়েছে সমকালীন বিষয়। বর্তমানের আধুনিক এই পৃথিবী থেকে এখনো বিদায় নেয়নি সাম্প্রদায়িকতা। বিলীন হয়নি ধর্মের বিভেদরেখা। গড়ে ওঠেনি ধর্মীয় বিভাজন মুছে ফেল সম্প্রীতির মানবসমাজ। উল্টাদিকে গণতন্ত্রের পরিবর্তে পৃথিবীর না দেশে বহাল রয়েছে সামরিক শাসন। রাষ্ট্র কিংবা সমাজের জন্য ক্ষতচিহ্নময় এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে নাটকের গল্পে। সে কারণেই প্রতিটি প্রদর্শনীতেই কাক্সিক্ষত দর্শকের সাড়া মেলে। আশা করছি, শনিবারের প্রদর্শনীতেও তেমনটাই ঘটবে।    
সমাজের একটি প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, ক্ষমতার নিকটবর্তী মানুষরাই প্রকৃত  দেশপ্রেমিক। কিন্তু দল, ক্ষমতা এসবের বাইরে যে বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে  দেশপ্রেমের অগ্নিশিখা প্রজ্বলিত রয়েছে ক্ষমতালোভী শাসকরা  সে সবের কোনো তোয়াক্কা করে না।  দেশপ্রেমকে বুকে বেঁধে কত নিভৃত পল্লীতে কত বীর নীরবে শাসকের হাতে নিগৃহীত হয়েছে, আজও হচ্ছে, তার হিসাবও ক্ষমতার মসনদের মানুষেরা রাখে না। বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকটি নানা কারণে এই ভূখ-ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়টাতেই গড়ে ওঠে গণতন্ত্রের দাবি এবং ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা।

আবার একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প তৎকালীন সামরিক শাসক ছড়িয়ে দিয়ে রচনা করেছে কালো অধ্যায়।  সেই ভয়ানক আগুনে আজও জ্বলছে মানুষ, জ্বলছে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি। যার ভয়াবহ দায় আজও বহন করতে হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রকে। এসব নিয়েই বিন্যস্ত হয়েছে নাটকটির কাহিনী।
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, মোমেনা চৌধুরী, আমিন আজাদ, আমানুল হক হেলাল, কামরুল হাসান, দিলু মজুমদার প্রমুখ।

×