ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

শাফিন আহমেদের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া

প্রকাশিত: ১৭:৪৬, ২৫ জুলাই ২০২৪

শাফিন আহমেদের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া

নকীব খান, শাফিন আহমেদ, ফুয়াদ নাসের বাবু

শিল্পী শাফিন আহমেদ আর কখনো ফিরবেন না, তা মানতে পারছেন না তার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সহকর্মী এবং ব্যান্ড আন্দোলনের সহযোদ্ধারা। রেনেসাঁ ব্যান্ডের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার নকীব খানের ভাষায়, “শাফিন আহমেদের মৃত্যু দেশের ব্যান্ড মিউজিক ও ব্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির জন্য এক বিরাট ক্ষতি।”

২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় একটি কনসার্টে গান করার কথা ছিল ৬৩ বছর বয়সী শাফিনের। কিন্তু তার হার্ট অ্যাটাক হলে শো বাতিল করা হয়। সেদিনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে, পরে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে; কিন্তু বাঁচানো যায়নি। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেই খবরে বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। প্রথম শোনায় অনেকেই খবরটি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।নকীব খান বলেন, “সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে এরকম একটা খবর পাব কখনো কল্পনাও করিনি। আমরা কখনো শুনিনি শাফিন অসুস্থ। আমাদের জন্য তার মৃত্যুর খবর মেনে নেওয়া কঠিন। কিছু বলার ভাষা নেই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।”

আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের সোনালী সময়ের কথা স্মরণ করে রেনেসাঁর এই শিল্পী বলেন, “শাফিনের অনেক কনট্রিবিউশন আছে ব্যান্ড মিউজিকে। সে নিজে গান লিখত, সুর করত, নিজেই গাইত।

“সে খুব ভালো একজন মিউজিশিয়ান ছিল। ভালো গিটার বাজানো থেকে শুরু করে সে নিজেই একটা ব্যান্ড ছিল। আমাদের মাঝ থেকে থেকে এ ধরনের প্রতিভা চলে যাওয়া এটা আসলে ভাবতে পারছি না। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।" এক মাস আগে শাফিন আহমেদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল নকীব খানের। সেদিনের কথাও খুব মনে পড়ছে নকীবের।

“সে আমেরিকা যাওয়ার কিছুদিন আগেই। দীর্ঘদিন পর দেখা। সে তো দেশে খুব একটা থাকত না, যাওয়া আসার মধ্যে থাকত, দেখা হত না। সেদিন দেখা হয়ে কিছুক্ষণ গল্প হল। তার যে কোনো ধরনের অসুস্থতা ছিল, সেরকম কিছু জানায়নি। “আমরা একসঙ্গে ব্যান্ড মিউজিক করতাম, এক স্টেজে গান থেকে অনেক স্মৃতি। তার মৃত্যু আমাদের জন্য বিশাল ক্ষতি।" প্রথম শোনায় খবরটি বিশ্বাস হয়নি ফিডব্যাক ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সংগীত পরিচালক ফোয়াদ নাসের বাবুর।

তিনি বলেন, "সকাল সকাল এমন একটা খবর পাব, যেটা খুবই মর্মাহত করেছে আমাদের। প্রথম শোনায় বিশ্বাস হয়নি, এখনো মনে হচ্ছে খবরটা হয়ত ভুল হতে পারে। শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়েছিল তার গান। তার আকস্মিক মৃত্যুতে ভীষণ শোকাহত।"

নব্বই দশকে ব্যান্ড সংগীতে মাইলসের পাশাপাশি জনপ্রিয় ছিল ব্যান্ডদল ‘সোলস’। ব্যান্ডগুলোর গড়ে ওঠা, বেড়ে ওঠা, যোগাযোগ, একসঙ্গে স্টেজ পারফরম্যান্সের অনেক স্মৃতিই রয়েছে তখনকার ব্যান্ড তারকাদের। শাফিন আহমেদের মৃত্যুর খবরে শোকাহত সোলসের পার্থ বড়ুয়া। বললেন, এই মুহূর্তে তার কিছু বলার ভাষা নেই।

মাইলসের সঙ্গে তিন দশকের পথচলার সমাপ্তি টেনে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বেরিয়ে আসেন আসেন শাফিন আহমেদ। তবে তার সংগীত যাত্রা চলতে থাকে। তার বিভিন্ন সলো অ্যালবামও জনপ্রিয় হয়। পরে তিনি গড়ে তোলেন নিজের ব্যান্ড দল ‘ভয়েস অব মাইলস’। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই দলকেই এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছিলেন শাফিন

শহিদ

×