ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জাগরণী থিয়েটারের রাজার চিঠি নাটকের মঞ্চায়ন

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১১ জুলাই ২০২৪

জাগরণী থিয়েটারের রাজার চিঠি নাটকের মঞ্চায়ন

শিল্পকলায় মঞ্চস্থ রাজার চিঠি নাটকের দৃশ্য

ঢাকার অদূরে সাভারের অন্যতম নাট্য সংগঠন জাগরণী থিয়েটার। নাটদলটির দর্শকনন্দিত প্রযোজনা ‘রাজার চিঠি’। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে প্রযোজনাটির ৫০তম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। মাহফুজা হিলালী রচিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ। 
রাজার চিঠি নাটকের গল্পের সময়টি ১৯৩৯ সাল। ওই বছর শাহজাদপুরের শ্রী হরিদাস বসাকের একটি চিঠির উত্তরে চিঠি লিখেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই চিঠি এবং রবীন্দ্রসাহিত্যের প্রভাবে হরিদাস বসাকের জীবন রবীন্দ্রনাথের ‘ঠাকুরদা’ চরিত্রের মতো হয়ে ওঠে। এ কাহিনী নিয়েই আবর্তিত হয়েছে রাজার চিঠি নাটকের কাহিনী। এক সময় যুবক হরিদাস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। এ নিয়ে তার পরিবার-পরিজন আর বন্ধুবান্ধব হাসাহাসি করেছিল।

কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় হরিদাসকে নিয়ে করা সেই তাচ্ছিল্যের জবাব পেতে হয় উপহাসকারীদের। ঘটনাক্রমে  দেখা যায়, একদিন রবীন্দ্রনাথ   ঠাকুর সে চিঠির উত্তর দিয়েছেন। এ সময় হরিদাস বসাককে সবাই সমীহ করতে শুরু করে। অন্যদিকে হরিদাস বসাকও সাহিত্য-সংস্কৃতির কাজে নিজেকে সঁপে দেন। এরপর ১৯৪৭ এবং ১৯৭১ সালে নানা ঘটনাকে কেদ্র করেই এগিয়ে যায় নাটকটির গল্প। 
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্মরণ কুমার সাহা, শাহনা জাহান সিদ্দিকা,  শ্রেয়া সাহা স্বর্ণা, জুলিয়েট সুপ্রিয়া সরকার, মো. ইয়াসিন শামীম, অনিকেত পাল, মো. রফিকুল ইসলাম রনি, সজীব ঘোষ, অথৈ দাস, বিধান বিশ্বাস, আবিদ হোসেন, ইমন হোসেন প্রমুখ। নাটকের আলোক পরিকল্পনা করেছেন ঠাণ্ডু রায়হান।

কোরিওগ্রাফি করেছেন অনিকেত পাল। এনাম তারা সাকির পোশাক পরিকল্পনায় সংগীত পরিকল্পনা করেছেন রামিজ রাজু ও সোয়েব হাসান মিতুল। রূপসজ্জা করেছেন রফিকুল ইসলাম রনি। আবহসংগীতে কাজ করেছেন  মো. বাহারুল ইসলাম বাহার।
বউদের পাঠশালা নাটকের প্রদর্শনী ॥ বিখ্যাত ফরাসি নাট্যকার মঁলিয়েরের  লেখা কমেডি নাটক ‘দ্য স্কুল ফর ওয়াইভস’। মাইলস ম্যালসনের ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাংলা রূপান্তর করেছেন আশীষ খন্দকার। একই সঙ্গে তিনি নাটকটির নির্দেশনাও দিয়েছেন। স্পেস্ট অ্যান্ড অ্যাক্টিং রিসার্চ সেন্টার প্রযোজিত প্রযোজনাটির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হলো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে।
নাটকে কাহিনীতে দেখা যায়, জনবহুল প্যারিসের চৌরাস্তার মোড়ে আর্নোলফির বাড়ি।  কয়েকদিন পর ধনী বুড়া তার বাসায় ফিরে আসে। এরই মধ্যে সে তার ছদ্ম নাম  রেখেছে ‘লা সুচি’। শিশু বয়স থেকে পালিত আগনিসকে বিয়ে করার ব্যাপারে সে মনস্থির করে। আগনিসের বয়স যখন ছয় বছর ছিল তখন থেকেই  বুড়া আর্নোলফি তার সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করতে ও নিজের জীবনের সঙ্গে জড়াতে স্বপ্নবিলাসী হয়। বাধিত বউদের মতো আগনিসকে সে শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে প্রয়াসী হয়।

হঠাৎ করে আর্নোলফি তার পুরনো বন্ধু ওরেন্টোর ছেলে হোরেসকে  দেখে আনন্দে আপ্লুত  হয়ে ওঠে। এদিকে  হোরেস তার বাবা ওরেন্টোর আসার আগেই প্যারিসে চলে আসে। আর্নোলফির অনুপস্থিতিতে আগনিসের সঙ্গে তার দেখা হয়। এদিকে হোরেস জানে না, এই সেই ছদ্মবেশী ‘লা সুচি’ যে কিনা তার বাবার পুরনো বন্ধু আর্নোলফি। হোরেস আগনিসের সঙ্গে বাঁধনহারা প্রণয় রচনা করে। ঘটনাচক্রে হোরেস আর্নোলফির কাছেই আগনিসকে  পেতে সাহায্য প্রার্থনা করে।

আর্নোলফি আগনিসের কাছে জানতে চায় যে তার অনুপস্থিতিতে এক যুবক এ বাড়িতে আসে কিনা এবং আগনিসের সঙ্গে প্রণয় রচনা করে কি না। আর্নোলফি আগনিসকে বলে, সে যা করছে সেটা হলো যৌবনের অপব্যবহার। সে আগনিসকে তার আচরণের দিকে মনোযোগী হতে বলে। আগনিস শুধু আর্নোলফিকেই বিয়ে করবে। আর্নোলফি আগনিসকে একটি বই দেয় এবং শিক্ষা নিতে বলে যে কীভাবে বউরা স্বামীর অনুগত থাকবে। এভাবেই এগিয়ে যায় কাহিনী। 
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ আমিন, তোতো তিমথীয়, তানভীর নাহিদ, পারভেজ রানা, মেহেদী, পলাশ ইমতিয়াজ, মানিসা অর্চি ও সংগীত বাড়ৈ। শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন সংগীত বাড়ৈ এবং সংগীতে জেরিন চাকমা।

×