‘মা লো মা, ঝি লো ঝি’
ময়মনসিংহ অঞ্চলের জনপ্রিয় বাউল সংগীত ‘মা লো মা, ঝি লো ঝি’। একশ’ বছরের বেশি সময় ধরে রশিদ উদ্দিনের নামে এবং সুরে গানটি তার শিষ্য ও ভাবশিষ্যরা গেয়ে আসছেন। বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী বারী সিদ্দিকীও গানটি রশিদ উদ্দিনের নামে গেয়েছেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে এমন কোনো বাউলকবি ও শিল্পী নেই, যারা এ গানটি রশিদ উদ্দিনের বলে জানেন না।
এ ছাড়া রশিদ উদ্দিনের জীবন ও কর্মের ওপর লেখা অনেক বইয়েও গানটি মুদ্রিত আছে। কিন্তু ৩ মে কোক স্টুডিও র্যাপসংগীত যুক্ত করে গানটি তাদের ইউটিউব চ্যানেল ও স্পটিফাইয়ে প্রকাশ করে। প্রীতম হাসানের সুর ও সংগীতায়োজন ও প্রযোজনায় এই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সাগর দেওয়ান, আরিফ দেওয়ান, র্যাপার আলী হাসানসহ অনেকে। গানটির ভণিতায় গীতিকার হিসেবে উল্লেখ করা হয় খালেক দেওয়ানের নাম।
সোমবার সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াত বাউলসাধক রশিদ উদ্দিনের ছেলে আবু আনসার কালা মিয়াসহ অনেকে দাবি করেন, এই গানটি রশিদ উদ্দিনের (১৮৮৯-১৯৬৪) লেখা। কোক স্টুডিও গানটির কিছু অংশ বিকৃত করে হঠাৎ খালেক দেওয়ানের নামে প্রচার করায় তারা বিস্মিত।
নেত্রকোনার সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ ও সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ছবি বিশ^াস, নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ ইমরান, রশিদ উদ্দিনের জীবনী গ্রন্থের লেখক অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, উদীচীর জেলা সংসদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শিকড় সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আপেল, সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, অধ্যাপক হারাধন সাহা ও আবু আনসার কালা মিয়া। তারা বলেন, সাধক-মহাজনদের গান নিয়ে এভাবে বিতর্ক তৈরি করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই কোনোরকম বিকৃতি ছাড়াই গানটিতে গীতিকার হিসেবে রশিদ উদ্দিনের নাম যুক্ত করে প্রকাশ করার দাবি জানান তারা।