ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

শাকিব খানের সঙ্গে অপুর সম্পর্ক জানতেন না বুবলী (ভিডিও)

প্রকাশিত: ২১:১৮, ৪ ডিসেম্বর ২০২২; আপডেট: ২২:২৯, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

শাকিব খানের সঙ্গে অপুর সম্পর্ক জানতেন না বুবলী (ভিডিও)

চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী

ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে নায়িকা অপু বিশ্বাসের সম্পর্কের বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রবিবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধায় এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা জানান চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী।

বুবলী বলেন, ২০১৬ থেকে যখন আমি শাকিব খান, যিনি আমার সন্তানের বাবা, আমার স্বামীর সঙ্গে কাজ শুরু করি বা কাজের সুযোগ পাই। তখন একজন মেন্টর হিসাবে তিনি (শাকিব খান) আমাকে গাইড করতেন। তার মাধ্যমেই আমার চলচ্চিত্র জগতে আসা। সেই জায়গা থেকে আমি কেনো, পুরো বাংলাদেশের কেউ জানতেন না তার কারও সঙ্গে সম্পর্ক আছে কিনা। এমনকি আপনারা সাংবাদিকরাও জানতেন না। 

নায়িকা বুবলি বলেন, আমি কেনো হঠাৎ করে জয়ের (শাকিব-অপুর ছেলে) জন্মদিনে আমার বেবি বাম্পের ছবি দিলাম। দেখুন, জয়ের ব্যাপারে আমি আমার স্বামী শাকিব খানকে কতটা পজিটিভলি দেখতে বলি, এটা উনি জানেন এবং ওনার আশেপাশে যারা কাছের মানুষ আছেন, তারা জানেন। বিষয়গুলো আমি কখনও সামনে আনতে চাইনি। কিন্তু অনেকেই খুব বিরক্ত হচ্ছেন যে, আমি কেনো এসব নিয়ে রেসপন্স করিনা। অনেকের সম্মানের কথা ভেবে আমি আজকেও অনেক কিছু বলছি না। জয়কে আমি কতটা সাপোর্ট করি, এটা শাকিব খান খুব ভালো করেই জানেন। আমার বেবি বাম্পের ছবি যে ওর জন্মদিনে ছাড়া, বিষয়টা এভাবে ভেবে করিনি আমি। যতদূর জানি, জয় এবার ছয় বছরে পড়েছে। তো এর আগে অনেকগুলো বছর গেছে, আমি তো কোনও জন্মদিনে এমনটা করিনি। সবসময় ওর জন্য ভালোবাসা, দোয়া দিয়ে এসেছি। আমিও তো একটা মানুষ, আমারও তো কষ্ট থাকতে পারে। আমি তো শুধু বেবি বাম্পের ছবি দিয়েছি। কাউকে দোষারোপ করেও তো কিছু বলিনি। শুধু নিজের আবেগের জায়গা থেকে একটা বিষয় শেয়ার করেছি।

তিনি বলেন, সাত বছর ধরে ফিল্মে কাজ করছি। সেই জায়গা থেকে পরিচালক ও আর্টিস্টরা জানেন, আমি সজ্ঞানে কারো মনে কষ্ট দেয়া বা অসম্মান করা বা কারো সঙ্গে বেয়াদবি করিনি। সেই যায়গা থেকে আমি অনেকবার কষ্ঠ পেয়েছি, সেটা গণমাধ্যম থেকে হোক বা অন্য কোনো। আমি যা বলেছি তা অন্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, আমি সম্প্রতি কিছু ঘটনা বলি,  সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করেছিলেন। সেসময় আমি শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আমি তাদের বলেছিলাম আপনাদের জানাবো। আর তাদের জানতে চাওয়াটাও স্বাভাবিক। আমরা আসলে একে অপরের।দিন শেষে আমরা একটা পরিবার। খুব সুন্দরভাবে বলেছিলাম আমি আপনাদের জানাবো, যেহেতু এতবার জানতে চাইছেন বিষয়গুলো নিয়ে। তাদেরকে ডেকে আমি খুব সুন্দরভাবেই বলেও ছিলাম। 

এই অভিনেত্রী বলেন, আমি তাদের এতো ভালোভাবে বললাম তারপরও কেউ কেউ বলেছেন শুটিং-এ সাংবাদিক দেখে এড়িয়ে গেলেন বা পালিয়ে গেলেন বুবলী। এভাবেই তাদের নিউজের হেডলাইন ছিল। এটা আসলেই দু:খজনক। কারণ, আপনাদের মাধ্যমেই আমাদের কথা দর্শকদের কাছে পৌঁছায়। সেই জায়গা থেকে আমি পালাবো কেন, আমি কি পালিয়ে গিয়েছিলাম? এভাবে উপস্থাপন করা তাতে তো দর্শকদের উপর প্রভাব পড়ে। 

বুবলী বলেন, গত সাত বছরে আমি চেয়েছি আমার কাজ দিয়ে ফোকাসে থাকতে। অনেকেই আমার ভালো চেয়েছে, সেজন্য কিছু বিষয়ে তারা কথা বলতেও না করেছে। তারা বলতেন- অনেকেই আপনাকে ভুল বুঝছে, একটি বিষয় আপনি এড়িয়ে যান। কিন্তু আমার এই চুপ থাকা, নিরবতা এতদিন ধরে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করেছে। অনেকেই ভাবছে চুপ থাকাই সম্মতির লক্ষণ। এ জায়গা থেকে আমার মনে হয়েছে এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা উচিৎ।

তিনি বলেন, ২০১৭-তে যখন বিষয়গুলো (অপু বিশ্বাসের সন্তান নিয়ে প্রকাশ্যে আসা) সামনে আসলো, তখন শাকিব খান নিজেও অবাক হয়েছিলেন। ওনার সঙ্গে যিনি সম্পর্কে ছিলেন, অপু বিশ্বাস, উনি অনেক সিনিয়র আমার থেকে। অনেক বছর ধরে কাজ করেছেন। তাকে অবশ্যই আমি কাজের জায়গা থেকে সম্মান করি। তার সঙ্গে কখনই আমার সামনাসামনি দেখা হয়নি। ২০১৭ সালে তিনি লাইভে আসার আগে হঠাৎ আমাকে ফোন করেছিলেন এবং অনেক বাজে ব্যবহার করেছিলেন। ওই ব্যবহারের জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। 

বুবলীর দাবি, আমি শাকিব খানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, পরে তিনি অনেক ইমোশনালি আমাকে বলেন যে,‘অনেক দিন ধরেই কথাগুলো তোমাকে বলতে চাচ্ছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, তুমি তো এটাতে জড়িত নও। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে এক বছর ধরে আমার যোগাযোগ নেই।’ এটা অপুদি নিজেও লাইভ প্রোগ্রামে বলেছিলেন। আপনারা অনেকেই জানেন, শাকিব খানের কথা অনুযায়ী অপু বিশ্বাসকে তিনবার অ্যাবর্শন করতে হয়েছিলো। চতুর্থবার বাধ্য হয়েই তিনি সন্তান নিয়েছিলেন। এইসব ঘটনায় তো আমি নেই। তখন সিনেমাতেই আমার অস্তিত্ব নেই। কেন আমাকে দোষারোপ করা হলো যে, আমার কারণে কারও সংসার ভেঙেছে? আমার কারণে কারও সংসার, সম্পর্ক ভাঙেনি। আমি স্পষ্ট করে দর্শকের উদ্দেশে বলতে চাই।

তিনি বলেন, তাদের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াটা, সেটাও তো সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা। তারা তো ম্যাচিওর মানুষ। এটা সম্ভব যে, কারও দ্বারা প্ররোচিত! কোনো সম্পর্কে সমস্যা হওয়ার পর একজন যখন আরেকটি সম্পর্কে যুক্ত হন, সেটার জন্য কি ওই নতুন মানুষ দোষী হয়ে যায়? আমাদের সমাজে অনেকেই নতুন সম্পর্কে যুক্ত হচ্ছেন না? তাদের যদি ভুল বোঝাবুঝি হয়, কোনো সমস্যা তৈরি হয়, তারা যদি সেই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে যেতে চায়, এটার জন্য কি নতুন মানুষটি দায়ী? শাকিব খান নিজেই আমাকে বলেছেন, তিনি এই সম্পর্কে (অপু বিশ্বাসের সঙ্গে) সুখী নন। তিনি তার জায়গা থেকে আমাকে অনেক কিছুই বলেছেন। যেটা আমি তার সম্মানার্থে আগেও বলিনি, আজও বলবো না। 

এমএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

×