অনলাইন রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলা হলি আর্টিজানের ঘটনা নিয়ে বলিউডে ‘ফারাজ’ যে চলচ্চিত্র তৈরির কথা উঠেছে, ওই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ না করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ভারতীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজ, চলচ্চিত্র নির্মাতা ভূষণ কুমার, হানসাল মেহেতা, সহকারি প্রযোজক অনুভব সিনহাকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ‘অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক রুবা আহমেদের পক্ষে ল’ ফার্ম লিগ্যাল কাউন্সেল থেকে ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নোটিশটি পাঠান।
অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক হলেন রুবা আহমেদ। হলি আর্টিজানের ঘটনায় তিনি তার একমাত্র মেয়ে অবিন্তা কবিরকে হারিয়েছেন।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, এ ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। অতীতে বিদেশি একটি চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের দর্শকের মনে বিরুপ প্রভাব ফেলেছে।
এ ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হলে তা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করবে, যার নেতিবাচক প্রভাব গোটা বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে চরম ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবে।
তাছাড়াও এ ধরনের চলচ্চিত্র নির্মিত হলে তা বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে একটি সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে চিত্রিত করবে, যা আদতে সত্যি নয়।
হলি আর্টিজানের ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দেওয়ার আগে ভারতের প্রযোজনা সংস্থা, নির্দেশক/প্রযোজক রুবা আহমেদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয় নোটিশে।
এতে বলা হয়, অবিন্তার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর কয়েকজন নির্দেশক/প্রযোজক রুবা আহমেদের সাথে যোগাযোগ করে হলি আর্টিজানের কাহিনীভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রস্তাব দেন। তবে রুবা আহমেদ এতে আপত্তি জানান।
উল্লেখ্য ৫ আগস্ট একটি মোশন পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে হলি আর্টিজানের ঘটনা নিয়ে বলিউডে সিনেমা তৈরির খবরটি সামনে আসে। সিনেমাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফারাজ’।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, হলি আর্টিসানের ঘটনাকে তুলে ধরে বা এমন কোনো চরিত্রকে বর্ণনা করে যার সাথে অবিন্তা কবিরের প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ সাদৃশ্য রয়েছে, এমন যেকোনো প্রকার পূর্ণ বা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, টেলিফিল্ম, নাটক, নাটিকা, উপন্যাস, গল্প, ইত্যাদির রচনা, প্রযোজনা, পরিচালনা, বিতরণ, বিপণন, উপস্থাপন, প্রকাশনা, অভিনয় ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে এই আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।
এছাড়াও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে এমন ধরনের কোনো চলচ্চিত্র নির্মাণ বা বাংলাদেশেকে অসাম্প্রদায়িক হিসেবে বিশ্বের সামনে উপস্থাপনা করে এমন ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছি।
নোটিশ পাওয়ার পরও যদি এ ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ বন্ধ না করা হয় তাহলে ভারতীয় আদালতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।