ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

সিনেমায় ব্যস্ত মিলন

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৭ জুলাই ২০১৭

সিনেমায় ব্যস্ত মিলন

আনিসুর রহমান মিলন অভিনয় গুণের কারণেই অন্য সবার থেকে নিজেকে আলাদাভাবে দর্শকদের চিনিয়েছেন। আর তার চেষ্টার মাত্রিকতার জায়গাগুলোও ভিন্ন ভিন্ন। তবে পরিবেশ অনেক সময় অনুকূলে না তার। তারপরও নিজস্বতাকে সঙ্গী করে পথ চলেন। অপেক্ষায় থাকেন ভাল কাজের। অনেক সময় তা হয়ে ওঠে কষ্টের। তারপরও স্বপ্ন বুনে চলছেন দর্শকপ্রিয় অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। মঞ্চ, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্র; এই তিন মাধ্যমে দক্ষ অভিনয়শৈলীর কারণে দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। ব্যস্ততা তার সবখানেই, কখনও চলচ্চিত্রের শূটিংয়ে ঢাকার বাইরে, আবার কখনও নাটকের অভিনয়ে । সব মিলে ব্যস্ত অভিনেতা মিলন। বর্তমানে টিভি নাটক থেকে চলচ্চিত্রেই সময় দিচ্ছেন বেশি। গত ঈদে মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ‘রাজনীতি’ ছবিটি। দর্শকদের কাছ থেকে ছবিটি নিয়ে বেশ ভাল প্রতিক্রিয়াও পেয়েছেন। সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গে কথা হয় আনন্দ কণ্ঠের সঙ্গে। টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে খ্যাতি থাকলেও গত কয়েক বছরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন আনিসুর রহমান মিলন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার মিলন অভিনীত পাঁচটি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ছবিগুলো হচ্ছে- ‘সাদাকালো প্রেম’, ‘রাত্রির যাত্রী’, ‘নাইয়র’, ‘টার্গেট’ ও ‘স্বপ্নবাড়ি’। চলতি বছরেই ছবিগুলো মুক্তি পাবে। এমনটাই আশা করছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা। আনিসুর রহমান মিলন বলেন, ‘পাঁচটি ছবির শূটিং শেষ। ছবিগুলো মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। সব ছবিতেই দর্শক আমাকে ভিন্ন চরিত্রে দেখতে পাবেন। বিশেষ করে ‘স্বপ্নবাড়ি’ ছবিটি ভৌতিক গল্পনির্ভর। এই ধরনের ছবি আমাদের দেশে খুবই কম নির্মিত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, বাকি ছবিগুলোতে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি। প্রতিটি চরিত্র সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। দর্শকরা ছবিগুলো ভালভাবে গ্রহণ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। এ দিকে মিলন অভিনীত ‘রাজনীতি’ ছবিটি এই ঈদে মুক্তি পেয়েছে। এতে তার উপস্থিতি দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছে। রাজনীতি ছবিতে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে মিলন বলেন, ভীষণ সাড়া পাচ্ছি। একেবারে দেশীয় ছবি ‘রাজনীতি’। আমাদের দেশের নির্মাতা, দেশের প্রযোজনা এবং সব কলাকুশলীও দেশের। পাশাপাশি গল্পটি খুব সুন্দর। ছবিটি কম সংখ্যক হলে মুক্তি পেলেও দর্শক খুব ভাল সাড়া দিচ্ছে। যখন আমি সিনেমাটির শূটিং করি তখনই আমার মনে হয়েছে মানুষের ভাল লাগার জায়গা তৈরি করবে এ ছবিটি। তবে যতটুকু পাওয়ার কথা তার চেয়ে কিছুটা কম পাওয়ার একটা যুক্তি আছে সিনেমাটা যখন রিলিজ হয় তখন তো জানেন ঈদের সময় অন্য দুটি ছবির জন্য বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক ধরনের অস্তিরতা বিরাজ করছিল। তো সেই কারণে ঢাকা শহরে যে দর্শক আমার তাদের ছবিটি দেখাতে পারিনি। তবে এখন তারা দেখতে পাচ্ছে ঢাকার অনেক হলেই ছবিটি সগৌরবে চলছে। সাংবাদিক থেকে শুরু করে সব মহল থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছি। সত্যিই ভাবনার চেয়ে অনেক অনেক দর্শক সাড়া পাচ্ছি। বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দায়ও সরব মিলন। এবারের ঈদে তার অভিনীত ১৭টি নাটক প্রচার হয়েছে বলে জানালেন তিনি। মিলন অভিনীত বেশ কিছু ছবি মুক্তির মিছিলে রয়েছে; সামনের দিনগুলোর জন্য যে পরিকল্পনা ছিল তার সঙ্গে নতুন কোন কিছু যোগ হয়েছে কী? কথা প্রসঙ্গে এমন প্রশ্নে মিলন আনন্দ কণ্ঠকে জানান, ‘বাংলাদেশের ফিল্মের ক্ষেত্রে কোন কিছুই আগে থেকে পরিকল্পনা করে করা সম্ভব নয়। একটি ভাল ছবি উপহার দেওয়ার পরও আমার কাছে ভাল কোন ছবির কাজের অফার না আসা পর্যন্ত আসলে নতুন কোন পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। কিংবা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন তাহলে আমি ফিল্ম করব। আর ভাল চলচ্চিত্র না পেলে আমিও কাজ করব না।’ অভিনয় শিল্পী মিলন মনে করেন, তার অভিনীত ‘রাজনীতি’ ছবিটি দেখার পর পরিচালক এবং প্রযোজকদের মধ্যে এক ধরনের বোধগম্যতা আসবে। ভাবনাগত জায়গায়ও পরিবর্তন আসবে। এজন্য তিনিও সে অপেক্ষায় রয়েছেন। আমার অভিনয়ের দক্ষতাটাকে কাজে লাগিয়ে বার বার দর্শক এর মাঝে নিয়ে যাবেন। এদিকে মিলন অরুন চৌধুরী পরিচালিত প্রথম ছবি ‘আলতা বানু’র শূটিং নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। প্রথম ধাপের কাজ শেষ করেছেন। প্রস্তুতি কেমন ছিল? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার চরিত্রটির নাম হচ্ছে রানা। চরিত্রটার শুরুতেই দেখা যাবে একটু খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি আছে। আর শূটিংয়ের পরিকল্পনা ওই ভাবেই করা হয়েছে। সেই জন্য তিন-চার দিনের একটা প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করেছি।’ আর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বললেন, যখন আমি সেই প্রস্তুতি নিয়ে কাজটি করার জন্য গিয়েছি তখন মনে হয়েছে না ঠিক আছে। তখন আমার মনে হয়েছে আমি চরিত্রটির মধ্যেই আছি। প্রথমে শুরু করেছি আমার গল্পের মিডল থেকে তারপর প্রথম অংশের মানে শেষ লটের শুটিং। ‘আলতা বানু’ চলচ্চিত্রে মিলনের সহশিল্পী মম; এই নিয়ে তৃতীয় বারের মতো জুটি বেঁধেছেন তারা। সহ-শিল্পী হিসেবে তাদের মধ্যে অভিনয়ের কনফিডেন্সের জায়গাটা বেশ ভাল। তবে তিনি আরেকটি বিষয় বলে রাখলেন, ‘জুটির বিষয়টা কিন্তু এখন আর ওয়ার্ক আউট করছে না। কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়ার জায়গাটা ভাল। আমরা দু’জনেই একে অপরের কাজের জায়গাটা নিয়ে আলোচনা করতে পারি।’ ছবিটি পরিচালনা করছেন অরুণ চৌধুরী। এটি তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। কিন্তু সেদিক থেকে ছবির প্রধান দুই চরিত্র মিলন ও মম বেশ অভিজ্ঞ। ঈদের নাটকের কাজ কি শুরু করেছেন? হ্যাঁ গত মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু করে দিয়েছি। সকাল আহমেদ, মাসুদ হাসান উজ্জ্বল, এস এ হক অলিক ও সুমন আনোয়ার তাদের সঙ্গে কাজের ব্যাপারে কথা হয়েছে এবং আরও বেশ কিছু পরিচালকদের সঙ্গে কথা চলছে। কোন লক্ষ্য নিয়ে এ্যাগাচ্ছেন? হ্যাঁ। লক্ষ্যের জায়গাটা হচ্ছে যে এখন পর্যন্ত যে অবস্থান ধরে রেখেছি সে অবস্থান যেনও কখনও দর্শকদের কাছে নষ্ট না হয় সেটা নিয়েই আমি এগোচ্ছি। বর্তমান সময়ে নাটকের মান নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন এ ক্ষেএে আপনি কি বলবেন? মান অনেক ভাল আছে। মান নিয়ে কে কি বলছে আমি জানি না আমাদের বাংলাদেশে নাটকের মান অনেক ভাল হচ্ছে। অসম্ভব ভাল কিন্তু একটা জায়গায় মূল সমস্যা দর্শক নাটক দেখার সুযোগ কম পাচ্ছে কারণ, বিজ্ঞাপনের একটা দৌরাত্ম্য রয়েছে। কোন মাধ্যমকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন? ছোটপর্দা বড়পর্দা বলে কথা নেই দুই মাধ্যম কেই সমান প্রাধান্য দিচ্ছি। আমার কাছে দুই মাধ্যমই সমান। ফ্রিল্মের ক্ষেএে একটু বেশি সময় দিতে হয়। যৌথ প্রয়োজনার ছবিগুলো খুব একটা নিয়ম মানছে না বললেই চলে। এ প্রসঙ্গে কি বলবেন? যৌথ প্রয়োজনার ছবিগুলোর মধ্য যারা নিয়মনীতি তৈরি করছেন তাদের মধ্য আসলে আমি কেউ না। কিন্তু নিয়ম মানছে যদি হয় তাহলে তাকে নিয়ম মানতে হবে। আর আমার কাছে একটি জায়গায় মনে হয় যদি আমি যৌথ প্রয়োজনার কোন ছবিতে থাকি তাহলে আমার দেশের ক্ষতি করে কোন ছবি করার দরকার নেই।
×