রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম থেকে ॥ কুড়িগ্রামসহ উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রাণের গান ভাওয়াইয়া। ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাস উদ্দিনের পর যিনি ভাওয়াইয়াকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায় তিনি ভাওয়াইয়া যুবরাজ কছিম উদ্দিন। আজ ২২ আগস্ট তাঁর ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর স্মরণে আজ শনিবার কুড়িগ্রাম পৌরসভা চত্বরে কছিম উদ্দিন পরিষদের উদ্যোগে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
কছিম উদ্দিন পরিষদের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মমিন এবং কছিম উদ্দিন উৎসবের উদ্যোগতা ইউসুফ আলমগীর।
আলমগীর জানান, এ অঞ্চলের মানুষের সংস্কৃতি, যাপিত জীবনের ঐতিহ্য এবং ভাওয়াইয়া গানকে লালন করতে সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন। ২২ আগস্ট শনিবার ভাওয়াইয়া যুবরাজ কছিম উদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কুড়িগ্রাম পৌর হলে মেঠোজন, কুড়িগ্রাম অডিও ভিশন, ভাওয়াইয়া একাডেমী, উদীচী, ভাওয়াইয়ার আসরসহ বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতায় দিনব্যাপী নানা আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি, ভাওয়াইয়া কথন, কছিম উদ্দিনের গানে নৃত্যানুষ্ঠান, পালাগান এবং কছিম উদ্দিনের লেখা ও গাওয়া ভাওয়াইয়া গানের পরিবেশনা। এতে কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শিল্পীরা অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, দেশে ভাওয়াইয়া গানকে জনপ্রিয় করতে আব্বাস উদ্দিনের পরে যে ক’জন গুনি শিল্পী তাদের মধ্যে কছিম উদ্দিন অন্যতম। আব্বাস উদ্দিনকে যেমন ভাওয়াইয়া সম্রাট বলা হয় তেমনি কছিম উদ্দিন ছিলেন ভাওয়াইয়া যুবরাজ।
আজ ২২ আগস্ট তাঁর ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯২ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন ক্যাম্পে ভাওয়াইয়া গান গেয়ে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন এই শিল্পী। পরবর্তীতে বাংলাদেশে বেতার ও টেলিভিশনে ভাওয়াইয়ার পাশাপাশি পালাগানকে করেছেন জনপ্রিয়।
অতি দারিদ্রের মধ্যে জীবন যাপন করলেও জীবদ্দশায় শিল্পী কছিম উদ্দিন দুই সহস্রাধিক গান রচনা করেছিলেন। তাঁর গানের মধ্যে রয়েছে, ‘ওকি বাপরে বাপ মুক্তিফৌজ কি যুদ্ধ করে বাপরে’, ‘নয়া ডারাতে মাছ উজাইছে, হেঙ্গা পাতেয়া দে’, ‘বাপের বাড়ি মোর ধরলার ওপারে’, ‘বৈদেশিয়া পিরিত রে, ভাঙিলে পিরিতি আর না লাগিবে জোরা রে’, ‘কইন্যা ভাবনা করিস কি, পাটা বেচেয়া কিনিয়া দেইম তোক ফুল তোলা শাড়ি’ প্রভৃতি।