ছবি: সংগৃহীত
টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে একটি প্রসাধনী সামগ্রীর শোরুম উদ্বোধনের জন্য চিত্রনায়িকা পরীমণি আসার কথা ছিল। এ খবরে তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু পরীমণিকে ঠেকাতে প্রস্তুতি নেন স্থানীয় একটি মহল। চাপের মুখে ‘হারল্যান স্টোর’ নামে এলেঙ্গার ওই শোরুমের মালিক মীর মাসুন রানা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করেন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় জেলার কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গার টিন মার্কেটে পরীমণির শোরুম উদ্বোধনের কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৫দিন ধরে এলেঙ্গায় টিন মার্কেটে অথেনটিক রিটেইল কসমেটিক্স শপ ‘হারল্যান স্টোর’-এর শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা পরীমণি উপস্থিত থাকার বিষয়টি জানিয়ে কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে গত দুই-তিন ধরে হেফাজতে ইসলামসহ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা পরীমণিকে ঠেকাতে বিভিন্ন কর্মসূচির পরিকল্পনা করছিলেন।
পরীমণিকে যাতে এলেঙ্গার মাটিতে না আনা হয়, সে ব্যাপারে আন্দোলনসহ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরীমণির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিলের ব্যাপারে পুলিশ ও শোরুম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন হেফাজতে ইসলামের নেতাসহ কয়েকজন মুসুল্লি। এছাড়াও বিভিন্ন মসজিদে পরীমণির শোরুম উদ্বোধন ঠেকাতে আলোচনা হয়। এতে শোরুম উদ্বোনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছিল, এলেঙ্গায় ততই উত্তাপের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। একপর্যায়ে শোরুম কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন চাপের মুখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বাধ্য হয়।
শোরুমটির মালিক মীর মাসুদ রানা বলেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরীমণি থাকার কথা ছিল। এ নিয়ে হেফাজতে ইসলাম অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা ঘোষণা দেন, পরীমণি আসলে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। এ বিষয়ে বিভিন্ন মসজিদে আলোচনাও হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা ফোন করেছিল। বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে থানা পুলিশ আপাতত নিষেধ করেছে। পরে কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। পরে ফেসবুকে দেখেছি তাদের কর্মসূচিও বাতিল করেছে।’
তিনি বলেন, ‘১০-১২ দিন ধরে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করেছি। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায় বড় ধাক্কা খেয়েছি।’
এদিকে, হেফাজতে ইসলাম টাঙ্গাইল জেলা শাখার যুববিষয়ক সম্পাদক মুফতি সুলাইমান হাবিব তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে হারল্যান শোরুম উদ্বোধনের জন্য একজন চিত্রশিল্পী (পরিমণি) আশার কথা ছিল। এ বিষয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ব্যাপক নেতিবাচক আলোচনা হওয়ায় স্থানীয় ইমাম, আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ কিছু ভাই আমার সাথে সাক্ষাত করে বিষয়টি অবহিত করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে স্থানীয় ওলামায়ে কেরামসহ আমি শোরুমের মালিক মাসউদ (মাসুদ) ভাইয়ের সাথে কথা বলি। মাসউদ ভাই সবার সম্মান রক্ষায় প্রোগ্রাম স্থগিত করেন। আমরা তার এই আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
এই বিষয় নিয়ে আর কোনো আলোচনা-সমালোচনা না করার জন্য তিনি সকল ইমাম, আলেম-ওলামা ও মুসল্লি ভাইদের প্রতি অনুরোধ করেন।
কালিহাতি থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, ‘হুজুররা ঝামেলা করেছিল। পরে কর্তৃপক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছে।’
শিহাব
