জুলিয়া রবার্টস
‘প্রিটি ওম্যান’ সিনেমা দিয়ে ৯০ দশকের শুরুতেই আলোচনায় আসেন অভিনেত্রী জুলিয়া রবার্টস। এ তারকা মান বিচার করেই সিনেমায় নাম লেখান। কারণ, ক্যারিয়ারে একের পর এক নিজেকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। এমন সময় হুট করেই ভালোবাসার মানুষ লাইল লাভটকে বিয়ে করেন জুলিয়া। ক্যারিয়ারের ছয় বছরের মাথায় বিয়ের সিদ্ধান্ত যে তার ২৬ বছরের জীবনকে এলোমেলো করে দেবে, সেটা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি এই উঠতি তারকা। জুলিয়া রবার্টস মনে করতেন, বিয়ের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তিন বছরও টেকেনি তাদের সংসার। বিচ্ছেদের পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
বিচ্ছেদের পর অনেকটাই ভেঙে পড়েন জুলিয়া রবার্টস। তবে ব্যক্তিগত জীবনের প্রভাব ক্যারিয়ারে পড়তে দেননি। কিছু ভালো সিদ্ধান্তের ফলে ‘এভরিওয়ান সেস আই লাভ ইউ’, ‘মাই বেস্ট ফ্রেন্ডস ওয়েডিং’ সিনেমাগুলো তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং ব্যক্তিগত জীবন আড়ালে চলে যেতে থাকে। বরং একের পর এক ছবির মাধ্যমে হলিউডে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে থাকেন। এর মধ্যে বিচ্ছেদের সাত বছর পর নতুন করে এক বসন্তে আবার প্রেমে পড়েন।
২০০০ সালে ‘দ্য মেক্সিকান’ সিনেমার শূটিংয়ে চিত্রগ্রাহক ড্যানিয়েল মডারের সঙ্গে প্রেম জমে ওঠে জুলিয়ার। তার এক বছর পরই প্রথমবার অস্কার লাভ করেন তিনি, ‘এরিন ব্রকোভিচ’ সিনেমার জন্য। প্রেমের দুই বছর পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা। গভীর এক রাতে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন জুলিয়া ও মডার। ক্যারিয়ারে কি আবারও ক্ষতির মুখে পড়বেন, এমন আশঙ্কা ছিলই। কারণ, অস্কারজয়ের পর সম্ভাবনাময় শিল্পীর তালিকায় তার নাম উঠে আসে। জুলিয়া তখন ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে গণমাধ্যমে সরব হন। তিনি জানান, তিনি নিজেই পুরো ব্যাপারটা গুছিয়ে নিয়েছেন।
তার আগে আরেক অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও সেই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। আলাদা থেকেই পুরো বিষয়টি সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবন গোছানোর চেষ্টা করছিলাম। আগের সম্পর্কগুলো থেকেও আলাদা থাকছিলাম। এটাই বোধ হয় আমাদের খুবই কাছাকাছি নিয়ে আসে। আমরা প্রেমে পড়ি। একসঙ্গে থাকার স্বপ্ন দেখি।’ চিত্রগ্রাহককে বিয়ে করার পর জুলিয়া রবার্টস পিপল ম্যাগাজিনে ভালোবাসা নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, এই গ্রহের মধ্যে তার সবচেয়ে পছন্দের মানুষ, প্রিয় মানুষ তার স্বামী।
জুলিয়ার মতে, ‘এটা আশ্চর্যজনক ছিল। তাকে পাওয়া আমার কাছে বড় কিছু পাওয়া। যে কারণে আমি তার সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসি। তার চিত্রগ্রহণেও কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমার স্বামী আমার কাছে এই গ্রহের সেরা পছন্দের মানুষ। কারণ, তার নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি আমার কাছে মূল্যবান।’
বিয়ের পরে মডার ও জুলিয়াকে খুব বেশি ছবিতে একসঙ্গে দেখা যেত না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মডারের পোস্টে ২০১৬ সালের আগে জুলিয়াকে তেমন পাওয়া যায়নি। ‘দ্য মানি মনস্টার’ সিনেমা নিয়ে তারা কান চলচ্চিত্র উৎসবে গেলে, তাদের দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে ক্যামেরায় ধরা পড়তে দেখা যায়। তার আগে ব্যক্তিজীবনকে তারা অন্যদের মতো প্রকাশ্যে আনতেন না। কিন্তু দিনগুলো তাদের ভালো কাটছিল। পিপলস ম্যাগাজিনে বিশ্বের সেরা সুন্দরী নারীর তালিকায় ২০১৭ সালে জায়গা পান জুলিয়া রবার্টস। সেবার ৫ বারে পৌঁছায় তার এই রেকর্ড।
আর এবারই প্রথম ভক্তদের রহস্যটা বলে দেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কাটানো সুন্দর দিনগুলো তাকে অনুপ্রেরণা দেয় বলে জানান জুলিয়া। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে আনেন বিয়ের পরের ১৪ বছরের নানা ঘটনা। জুলিয়া আরও বলেন, ‘আমি এখনো মডারকে নিয়ে বিস্ময়ের মধ্যে থাকি। আমি বোঝাতে চাইছি, প্রতিদিন আমার স্বামী দরজা দিয়ে হেঁটে যায়, এটা আমার কাছে পুনরাবৃত্তি স্বপ্নের মতো মনে হয়। আমার কাছে মনে হয়, আমার স্বপ্ন ফিরে এসেছে।’ ভালোবাসা নিয়ে এই তারকা দম্পতির মধ্যে রয়েছে সম্মানবোধ। সেটা বেশ কয়েকবার মডারের পোস্টে প্রকাশ্যে আসে। তাদের বিয়ের দেড় দশকের আয়োজন চমকে দেয় জুলিয়াকে।