ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১

নায়ক রাজ্জাক স্মরণ

আনন্দকণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:২৭, ২১ আগস্ট ২০২৪

নায়ক রাজ্জাক স্মরণ

নায়করাজ রাজ্জাক

বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। নন্দিত এই অভিনেতা বাংলা চলচ্চিত্রে দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক ধরে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করে নায়করাজ উপাধি লাভ করেছিলেন। তার জন্ম হয়েছিল ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে। ১৯৬৪ সালে তিনি তার পরিবারকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। রাজ্জাক প্রথমে চলচ্চিত্রকার আবদুল জব্বার খানের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন।

নায়ক হিসেবে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ ছবিতে। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় ‘বেহুলা’ সিনেমাটি। লখিন্দররূপে রাজ্জাক ও বেহুলারূপে সুচন্দার অভিনয় মুগ্ধ করে সবাইকে। ছবিটি সুপারহিট হয়ে যায়। এরপর একের পর এক চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোতে অভিনয় করতে থাকেন। নায়ক হিসেবে তার অভিনীত প্রথম সিনেমার সাইনিং মানি পান ৫০০ টাকা।
এ অভিনেতা কবরী নন, ববিতা, সুচন্দা, সুজাতা, শবনমের সঙ্গে যেমন জুটি গড়েন, তেমনি উর্দু ছবির নায়িকা শাবানাকে বাংলা ছবিতে তিনিই সুযোগ করে দেন; দুজনের জুটিতে দারুণ কিছু ছবিও তৈরি হয়। রাজ্জাক ছিলেন রোমান্টিক নায়ক, ভিন্ন ভিন্ন সব চরিত্রে নিজেকে প্রমাণও করেছেন বারবার। রোমান্টিক ইমেজের বাইরে গিয়ে জীবন থেকে নেয়া, আলোর মিছিল, ওরা ১১ জন, ছুটির ঘণ্টা, অবাক পৃথিবী, অশিক্ষিত, রংবাজ, গু-া, ঝড়ের পাখি, স্লোগান, বড় ভালো লোক ছিল’র মতো চমৎকার সব ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অধরা এক অনন্য উচ্চতায়।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য আরও কিছু সিনেমা হলো- ‘আগুন নিয়ে খেলা, ‘এতুটুকু আশা, ‘নীল আকাশের নিচে, ‘জীবন থেকে নেয়া, ‘নাচের পুতুল, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা, ‘ওরা ১১ জন, ‘অবুঝ মন, ‘রংবাজ, ‘আলোর মিছিল, ‘গু-া, ‘অনন্ত প্রেম, ‘অশিক্ষিত, ‘ছুটির ঘণ্টা, ‘মহানগর, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত, ‘স্বরলিপি, ‘বাদী থেকে বেগম, ‘বাবা কেন চাকর’ ইত্যাদি। অভিনয়ের বাইরে রাজ্জাক প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র।

শুধু এপার বাংলাতেই নয়, ওপার বাংলায়ও অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন তিনি।  দেশীয় সিনেমায় যখন অশ্লীলতা ভর করে, তখন ঢালিউড থেকে টলিউডে পা রাখেন তিনি। কলকাতার প্রায় ৩০টির বেশি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন। রাজ্জাক তার পুত্র বাপ্পারাজের পরিচালনায় ‘কার্তুজ’ ছবিতে অভিনয় করেন ২০১৫ সালে। আনুষ্ঠানিকভাবে এটাই তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র। গতকাল ছিল এ অভিনেতার মৃত্যুদিন। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট তিনি চলে যান না ফেরার দেশে।

×