ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন হিরো আলম

প্রকাশিত: ১৯:০৯, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন হিরো আলম

হিরো আলম

প্রার্থিতা ফিরে পেলেন আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিলো। তবে হিরো আলম রবিবার (১০ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনে আপিলের রায়ে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান।

নির্বাচন ভবনে আপিল শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন এই রায় দেন। এর আগে আপিল শুনানিতে অংশ নিতে দুপুর ২টার দিকে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আসেন হিরো আলম।

হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারি শুভ জানান, নির্বাচন কমিশনে আপিলের রায় আমাদের পক্ষে এসেছে। হিরো আলম বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচন করবেন। ডাব প্রতীকে নির্বাচন করা এখন নিশ্চিত হলো। 

গত ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যথাযথভাবে পূরণ না করায় হিরো আলমের প্রার্থিতা বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।

যাচাই-বাছাইকালে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিলের চারটি কারণ উল্লেখ করে সাইফুল ইসলাম বলেন, "দলীয় প্রার্থী হলেও হিরো আলম স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র পূরণ করেন। রাজনৈতিক দলের স্থানে হিরো আলম লিখেছেন, 'প্রযোজ্য নহে'। দলীয় মনোনয়নে আপনার মূল কপি জমা দেননি। ফটোকপি দিয়েছেন। এটা আরেকটি বিষয়।"

তিনি আরও বলেন, "স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে আপনার ভোটার তালিকার এক শতাংশ সমর্থনের তথ্য জমা দিতে হবে। উনি সেটিও করেননি। এখানেও আইনের ব্যতয় হয়েছে।"

আরেকটি কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "হিরো আলম তার হলফনামার সঙ্গে সম্পদের আয়ব্যয় বিবরণী জমা দেননি। এছাড়া তার হলফনামা নোটারি পাবলিক করা থাকলেও সেখানে স্বাক্ষর করেননি হিরো আলম।"

এ সময় হিরো আলম স্বাক্ষর করার সুযোগ চান। কিন্তু, সভাকক্ষে উপস্থিত অন্য প্রার্থীরা এতে আপত্তি জানান।

এই রায়ের বিপরীতে গত ৬ ডিসেম্বর কমিশনে আপিল আবেদন করেন হিরো আলম। আজ আপিলে তিনি মনোনয়ন ফিরে পেলেন।

প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে সাংবাদিকদের হিরো আলম বলেন, 'আমি জোর গলায় বলেছিলাম ইসি থেকে প্রার্থিতা ফিরে পাব। আমরা সই ছিল না। আপিলের শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছি। ইসিকে ধন্যবাদ।'

জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, 'শেষপর্যন্ত মাঠে থাকব। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয়ী হব বলে আশা করি। এর আগে বগুড়া ৪ এ সুষ্ঠু ভোট হয়েছিল। মানুষ ভোট দিতে এসেছিল। আমাকে ভোটও দিয়েছিল। ভোটে তারা আমাকে হারাতে পারেনি। ফলাফলে তারা আমাকে হারিয়ে দিয়েছিল। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি ওখান থেকে বিজয়ী হব।'

তিনি বলেন, আগে কোনো দলে যোগ দেই নি। এবারই বাংলাদেশ কংগ্রেস এর প্রার্থী হলাম।

আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো ভোটে যাবে না বলে ঘোষণা দিলেও, এবার ভোটে আসার কারণও জানান হিরো আলম। তিনি বলেন, নির্বাচনে মাঠে থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাকি হয় না তা প্রমাণ করে দিতে পারি। তিনবার ভোট করছি। অনেক কষ্ট করেছি, মার খেয়েছি। অনেক সংগ্রাম করে এপর্যন্ত এসেছি, তাহলে কেন পিছপা হব। তিনি বলেন, বগুড়া মনোনয়ন ফিরে পাওয়া সম্ভব হত, কিন্তু কিছু লোকের চক্রান্তের কারণে সেখান থেকে বাতিল করে দিয়েছে। এখানে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছি।

এর আগে চলতি বছর বগুড়ার ৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন হিরো আলম। কিন্তু যাচাই-বাছাইকালে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। ওই বাতিলের কারণ ছিল হিরো আলমের ১ শতাংশ ভোটার তালিকায় গরমিল। পরে হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতার বৈধতা এনে নির্বাচন করেন। তবে দুটি আসনেই পরাজয় হয় হিরো আলমের। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিয়েও পরাজিত হন তিনি। হারান জামানত।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন হিরো আলম। যদিও পরে 'অনিয়মের অভিযোগ তুলে' নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। ইউটিউবে প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হিরো আলম।

 

এবি

সম্পর্কিত বিষয়:

×