ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নিজের কণ্ঠ চেনা যায় এমন গায়কী চাই

এন আই বুলবুল

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৩:৫৪, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজের কণ্ঠ চেনা যায় এমন গায়কী চাই

কনকচাঁপা

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা। নব্বই দশকের প্লেব্যাকে দাপিয়ে বেড়ান তিনি। অর্জন করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তবে গত কয়েক বছর তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় সব প্রোগ্রাম থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এমনকি সারাদেশের স্টেজ প্রোগ্রামও করতে দেওয়া হয়নি তাকে। সেসব বিষয় ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। 
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- এন আই বুলবুল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশে এখন নতুন সরকার। দেশের এ পরিবর্তন কিভাবে দেখছেন?
এমন একটা সময়ের জন্য দেশের মানুষ দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছিল। অবশেষে মানুষের অপেক্ষার অবসান হয়েছে। দেশে এখন নতুন সরকার। আমি মনে করি, আমাদের যেখানে যেখানে সমস্যা আছে, সেগুলোতে সুন্দর একটা পরিবর্তন আসবে। আমাদের নতুন প্রজন্ম সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখার জন্যই এ আন্দোলন করেছে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সুন্দর একটি দেশ পেতে যাচ্ছি।

নতুন সরকারের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?
আমার একটাই চাওয়া মিথ্যাচার মুক্ত বাংলাদেশ। সব পাপের শুরু মিথ্যা দিয়েই হয়। এছাড়া আমি আশা করব নতুন সরকার দ্রব্যমূল্য সহনশীল রাখবে, আয়ের শুরুতেই উপযুক্ত ট্যাক্স অটোমেটিক কেটে রাখবে। ঘুষের কোনো জায়গা রাখবে না। রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধের আশা করার সঙ্গে একটা স্বপ্ন খুব দেখি আর তা হলো আমাদের দেশের ভিআইপিরা যেমন একটা সম্মানিত লাউঞ্জ ব্যবহার করেন, তেমনই আলাদা একটা লাউঞ্জ তৈরি করে দিতে হবে আমাদের প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য। 
আমি আরও চাই সুবিধাবঞ্চিত শিশু, সংখ্যালঘু উপজাতি শব্দগুলো আমাদের অভিধান থেকে, ভাষা প্রায়োগিক দিক থেকে একদম উঠে যাক।


দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গানের পাশাপাশি আপনাকে সামাজিক কর্মকা-েও দেখা গেছে...
৪০ বছরের ক্যারিয়ারে শুধু গানই নয়, সাধ্যমতো সামাজিক সেবাও করছি। যখনই সুযোগ পেয়েছি, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। মানুষের জন্যই আজ আমি এত দূরে আসতে পরেছি। সেই মানুষদের সেবা করে যাব, যেভাবে সারাজীবন করেছি। পুরোপুরি বাংলাদেশের কনকচাঁপা হতে চাই। আমি মুক্ত বিহঙ্গ হয়ে মানুষের সেবা করব। মানুষের সেবার ভেতর যে আনন্দ, সেটি আর কোথাও নেই বলেই আমি মনে করি। 


বিগত সরকারের সময় আপনাকে বেতার ও টেলিভিশনে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। এটি নিয়ে জানতে চাই...
২০১৮ সাল থেকে আমি বিটিভি ও রেডিও বেতার থেকে শুরু করে বেসরকারী টিভি চ্যানেলগুলোতেও গান করার সুযোগ পাইনি। আমাদের দেশে এখন অনেক বেসরকারী টিভি চ্যানেল আছে। এত চ্যানেলের মধ্যে দেশ টিভি ও এটিএন চ্যানেল ছাড়া কোথাও গান করতে পারিনি। কালো তালিকা কোনো শিল্পীর জন্য কাম্য না। এটি করা কখনোই উচিত না।

কিন্তু আমাদের বারবার এটি দেখতে হচ্ছে। একজন শিল্পী যে কোনো একটি দলকে সমর্থন করতেই পারেন। এটি তার নাগরিক অধিকার। কিন্তু তার জন্য তাকে কালো তালিকাবদ্ধ করতে হবে, এটি ঠিক না। 

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সংগীতে আপনার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। এ সময়ে এসে নতুনদের জন্য কি বলতে চান?
নতুনদের অনেকেই কাভার গান করছে। এটি দোষের কিছু না। তবে মৌলিক গানের প্রতি তাদের আগ্রহী হতে হবে। একটা কাভার গান দিয়ে পরিচিতি পাওয়া আর নিজের গান দিয়ে শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেওয়ার মধ্যে প্রার্থক্য আছে। নিজের গানের আনন্দই অন্য রকম। এছাড়া এ সময়ে দেখি বেশিরভাগ ফিমেল শিল্পীরা অটো টিউন দিয়ে সবাই একই ঢংয়ের গান করছে। কার কণ্ঠ সেটা খুব সহজে বোঝা যায় না। নিজের কণ্ঠ যেন চেনা যায় এমন গায়কী চাই। এক কথায় কণ্ঠের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। 

শোবিজে কি ধরনের পরিবর্তন আশা করছেন?
আমি চাই মেধাবীদের সবাই অগ্রাধিকার দেবে। যারা সত্যিকারের মেধাবী, তারা যেন কাজের সুযোগ পায়, আমাদের সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কিছু কিছু সময় নানা কারণে আমাদের অনেক গুণী ও মেধাবীরা আড়ালে থেকে যাচ্ছেন। গত কয়েক বছরের দিকে তাকালে সেটি আরও স্পষ্ট দেখা যায়। আমি চাই, শোবিজে গুণী ও মেধাবীদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো হোক।

×