ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

‘গান এখন সিন্ডিকেট আর কম খরচেও হচ্ছে’

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ২৬ জুলাই ২০২৩; আপডেট: ১৫:১৪, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

‘গান এখন সিন্ডিকেট আর কম খরচেও হচ্ছে’

আসিফ আকবর

বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর। ২০০১ সালে ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ অ্যালবাম প্রকাশের আগে প্লেব্যাক দিয়ে সংগীতে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ৭ জুন প্রথম প্লেব্যাক করেন ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ গায়ক। প্রয়াত নায়ক মান্না অভিনীত ‘রাজা নাম্বার ওয়ান’ সিনেমাতে তিনি প্রথম কণ্ঠ দেন বলে জানান। ‘আমারই ভাগ্যে তোমারই নাম ছিল যে লেখা’ শিরোনামের গানটির কথা লেখেন মনিরুজ্জামান মনির। সুর ও সংগীত করেন শওকত আলী ইমন। সহশিল্পী ছিলেন আলম আরা মিনু। এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের পঁচিশ বছর পার করলেন তিনি। ক্যারিয়ার-রাজনীতি ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন এ তারকা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- এনআই বুলবুল

 

আপনার প্লেব্যাকের শুরুটা জানতে চাই?
প্লেব্যাক হচ্ছে একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে বড় বড় সংগীতপরিচালক, সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকারের সঙ্গে বসা যায়। আমি আগের প্রজন্মের শেষ বংশধর। তাই আমি স্টুডিওর সেই সংস্কৃতিটা পেয়েছি। স্টুডিওর পরিবেশটা কেমন হয় সেটা আমি দেখেছি। সে সময় অ্যান্ড্রু কিশোর, মিলু ভাই, পলাশ ভাই কিংবা হাদী ভাইয়ের ডেমোগুলো আমাকে গাইতে হতো। তাদের ডেমো গাইতে গাইতেই নিজেকে প্লেব্যাকের জন্য তৈরি করি।
‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ অ্যালবাম দিয়ে বাজিমাত করেন। এরপর অডিও ও সিনেমা দুই মাধ্যমেই আপনাকে ব্যস্ত দেখা গেছে... 


সে সময় আমার এমনও দিন গেছে দুপুরে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাইয়ের গান, বিকেলে আলম ভাইয়ের, রাতে আলাউদ্দিন কাকার গান করছি। আবার দেখা গেছে পরেরদিন সকাল বেলা অন্যদের গান। তখন কষ্টের জায়গা ছিল কোম্পানি থেকে আমাকে প্লেব্যাক করতে নিষেধ করা হয়েছে। ফিল্মে গান না করলে কত টাকা দিতে হবে সেই প্রস্তাবও পেয়েছি। আমি বলেছি ফিল্মে আমি গাইবোই। সে সময় আমি কোম্পনির কাছ থেকে প্রতি গানের জন্য পেতাম আশি হাজার টাকা। আর সিনেমার গানের জন্য পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু আমার আশি হাজার টাকার চেয়ে ভালো লাগতো সিনেমায় গাইতে। কারণ এটা একটা আর্কাইভ। 


একটা সময় আপনি সিনেমার গানে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। এর কারণ কি ছিল?
ফিল্ম হচ্ছে এখন পর্যন্ত আমার সব থেকে পছন্দের জায়গা। কিন্তু কিছু বৈষম্য থেকে ২০০৯-১০ দিকে আমি ফিল্মে গান বন্ধ করে দিই।
সেই বৈষম্যগুলো নিয়ে শুনতে চাই...


আমি খেয়াল করলাম সবকিছুর দাম বাড়ে কিন্তু আমাদের পেমেন্ট বাড়ছে না। এরমধ্যে আবার অনিয়মিত যারা গায় তাদের আমাদের চেয়ে পেমেন্ট বেশি দিচ্ছে। বেশি পেমেন্ট যারা নিয়েছে, সেটা তাদের যোগ্যতা। এিিট নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে সে সময় আমি আপেক্ষা করেছিলাম আমাদের সিনিয়র শিল্পীরা তাদের পেমেন্ট বাড়াবেন। কিন্তু দেখি কেউ বাড়ায়নি। পরে আমি বাড়ানোর পর মোটামুটি একটা লেবেলে এসেছে।

এরমধ্যে একটা সময় আবার দেখি আমার পেমেন্ট না দিয়ে আমার চেয়ে কম দামের শিল্পীকে দিয়ে বেশি পেমেন্ট  গাওয়াচ্ছে। এগুলো দুঃখজনক ব্যাপার ছিল। আমি রিটায়ার্ড করার পরেও গোপনে শুধু ফিল্মকে ভালোবাসি বলেই আগের পেমেন্টে কয়েকটি গান করে দিয়েছি। শাকিবের জন্য ‘প্রিয়ারে প্রিয়া হারিয়েছি মন’, ‘ফার্স্ট ইয়ার সেকেন্ড ইয়ার’, এরকম কয়েকটি হিট গান করেছি। এখন প্লেব্যাক নিয়ে ব্যস্ততা কেমন?


আমাদের ফিল্মের অবস্থা তো দেখতে দেখতে খুব খারাপ অবস্থায় চলে এলো। আমি পর্দা কাঁপনো যে বিষয়টা ছিল সেটাকে মিস করি। এখন একেবারে যেটা আমাকে ছাড়া হবে না সেটাই পরিচালকরা আমাকে দিয়ে করছেন।কার সঙ্গে প্লেব্যাকে ইনজয় করতেন? এছাড়া কোন্ অভিনেতার লিপে আপনার গান দেখতে বেশি পছন্দ করতেন?


আমি যখন প্লেব্যাক শুরু করি তখন মান্না ভাই, রুবেল ভাই ছিলেন জনপ্রিয়। আমি তাদের সিনেমাতে অনেক গেয়েছি। তবে শাকিব ও আমিন খানের লিপে আমার গান দেখতে বেশি ভালোলাগে। শাকিবের লিপে দেখলে মনে হয় শাকিব গাচ্ছে। আবার আমিন খানের লিপে দেখলে মনে হয় সে গাচ্ছে। এছাড়া গান গাওয়ার ক্ষেত্রে বেবি নাজনীন আপার সঙ্গে বেশি আনন্দ পেতাম। কারণ চটুল গান করতাম বেশি।

এর বাইরে শুরু থেকে তিনি আমার মেন্টর ছিলেন। আমি আসিফ হওয়ার আগে থেকেই তিনি অমাকে অনেক সুযোগ দিয়েছেন। মজার বিষয় হলো, সিনেমাতে আপার সঙ্গে প্রায় শতাধিক গান আছে। সেকেন্ড হলো কনক আপা। তাদের দুজনের সঙ্গে গান করার সময় দুটো ধরন থাকত। বেবি আপার সঙ্গে গান করার সময় একটা চার্ম থাকত, অন্যদিকে কনক আপার সঙ্গে গান করার সময় সিরিয়াসনেস। কনক আপার সঙ্গে আমার কিছু মেমরিবল গান আছে।  রুনা আপা, সাবিনা আপাদের আমি তেমন পাইনি। কিন্তু তাদের সঙ্গেও প্লেব্যাক করেছি। 


আপনিসহ সমসাময়িক যারা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন সবার গানগুলো শ্রোতাদের মুখে মুখে এখনো শোনা যায়। কিন্তু শেষ কয়েক বছর এর বাইরে। এটি নিয়ে আপনি কি বলবেন?


আমাদের এখানে টিভি চ্যানেলওয়ালারা বড় বড় নাটক বা টেলিফিল্মগুলোকে সিনেমা বলে সিনেমা হলে দিয়ে দর্শকের ধস নামায়।  বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল দেখছি ইনফ্লুয়েন্স করে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড নিচ্ছে। গেল বছরও এটি দেখেছি। এটা ঠিক না। আমি শিল্পীদের এ জন্য দোষ দিব না। সেন্সর বোর্ডে যারা আছে তাদের আমি দোষ দিব।

তারা কেন প্রভাবিত হয়ে এই অ্যাওয়ার্ড দিচ্ছে। আমি মনে করি মেইন স্ট্রিমকে এড়িয়ে যাওয়া মানে লাখো কোটি মানুষকে এড়িয়ে যাওয়া। যে সিনেমাটির গান কেউ জানল না, যেটি সমাজে কোনো ম্যাসেজ দিল না, যেটি মানুষকে কোনো আন্দলিত করল না সেটি কেন ন্যাশনাল অ্যাওয়াড পাবে । এটি হলো শুধু অ্যাওয়ার্ডের জন্য অ্যাওয়ার্ড দেওয়া। এগুলো খুবই ন্যক্কারজনক। আমি ধিক্কার জানাই। সেন্সর বোর্ডে নতজানু হলো মূল দোষ। এর বাইরে আর কিছু না। প্রভাবের কাছে তারা মাথা নত করে। সেন্সর বোর্ড চাইলেই এটি বদলে দিতে পারে।


হ্যালো সুপার স্টার অ্যাপস নিয়ে কাজ করার কারণ কি?
আমি অ্যাপসটার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর এটি নিয়ে জানার চেষ্টা করি। দেখলাম এটির আরও কিছু অ্যাপস আছে যেগুলো প্রবাসীদের দারুণ একটা সেবা দেয়। আমাদের এক কোটি ত্রিশ লাখ, ইন্ডিয়ান প্রায় সাড়ে একুশ কোটি প্রবাসী। মোট ২৩ কোটির মতো প্রবাসী আছে। তাদের জীবন যাত্রার মান, তাদের ঋণ, সেখানের সুযোগ-সুবিধা ও কম খরচে ভালো বিনোদনের জন্য ইউনিক অ্যাপস হচ্ছে হ্যালো সুপার স্টার অ্যাপস। এখানে তারা তাদের পছন্দের তারকার সঙ্গে কম দামে কথা বলতে পারবে। এমনকি সরাসরি কথা বলারও সুযোগ থাকবে। চাইলেই যে কোনো তারকার সময় কিনে নিতে পারবে। তারকার সঙ্গে কথা বলার সেই রেকর্ডটি আবার তাকে দেওয়া হবে। যেটি অন্য কোথাও নেই।

ফেসবুকের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য হলো আমাদের এখানে অনেক কমেন্টের অফশন নেই। তবে ফেসবুক ইনস্ট্রাগ্রামের  অন্যসব সুবিধাগুলো আমাদের এখানেও থাকবে। এরবাইরে আমরা ই-ট্যালেন্ট হ্যান্ট করছি। ফুটবল-ক্রিকেট, অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক-গায়িকা, কুরআন তেলওয়াত, ত্রিপিটক পাঠ বাইবেলসহ সবকিছুর সঠিক ব্যক্তিদের আমরা সমন্বয় করব। আমাদের এখানে কেউ উদ্যোক্তা হতে চাইলে সেটিও হতে পারবে।

এক কথায় হ্যালো সুপার স্টার অ্যাপস এমন একটি অ্যাপস এখানে সবকিছুর সমাধান পাওয়া যাবে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে। সত্যি বলতে, আমার যে স্বপ্ন ছিল, আমার রাজনীতি করা, আন্দোলন করা, একটা মানুষের পাশে থাকা, সাহয্য করা এমন স্বপ্ন এই অ্যাপস ছডিয়ে দিতে পারবে।

একদিনে এক লাখ মালয়েশিয়ানকে মালয়েশিয়ান ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার ইচ্ছে করলে এই অ্যাপসরে মাধ্যমে আমি সেটিও পারব। আমাদের সিমকার্ড আছে। কথা সিম। মালয়েশিয়ায় কাজ করে এটি। এটি দিয়ে রেমিটেন্স পাঠানো যাবে। চল্লিশটি টিভি চ্যানেল ফ্রি দেখা যাবে। ১০০শ মিনিট মায়ের সঙ্গে কথা বলা যাবে। রাষ্ট্রীয় দখল ছাড়া এর মাধ্যমে সব সেবা দেওয়া যাবে। এজন্য এখন আমার কাছে রাজনীতি গৌণ। রয়ালিটি বিষয়টি নিয়ে এখন শিল্পীরা বেশ সোচ্চার। 


কিন্তু একজন শিল্পী যখন কোনো টিভি চ্যানেল কিংবা স্টেজে লাইভ করছেন সেখান থেকে গীতিকার-সুরকার তার প্রাপ্য পাচ্ছে না। এটি নিয়ে আপনি কি বলবেন?
এটি পুরো অনুচিত কাজ। যখনই কোনো গীতিকার-সুরকারের গান বাজবে তখনই সম্মানী পাওয়া তার অধিকার। আমরা যদি একটু পেছনে তাকাই তাহলে দেখব, এগুলোর সংশোধন বিটিভি এবং রেডিও বাংলাদেশ থেকে আসবে। রেডিও বাংলাদেশ দিনের পর দিন সিনেমার গান বাজাচ্ছে, বিটিভি প্রচার করছে। পাশাপাশি অন্য রেডিও-টিভি চ্যানেলগুলোও আছে। এগুলো থেকে আগে শুরু করতে হবে। এরজন্য একটা কপিরাইট সোসাইটি লাগবে।

সেখানে আর্টিস্টদের সঙ্গে সিএমও থাকবে একইসঙ্গে ক্যাটাগরি। এ ক্যাটাগরি বোম্বেতে ১৯৪৩ সালে হয়েছে। যখন ইন্ডিয়া স্বাধীনও হয়নি। আর আমরা ২০২৩ সালে এসে সেখান থেকে অনেক পিছে পড়ে আছি। কপিরাইট সোসাইটি থেকে সব নিয়ম নীত তৈরি করতে হবে।

কপিরাইট সোসাইটি যখন এটি পার্লামেন্ট আইনে পরিণত করবে তখন সবাই মানতে বাধ্য হবে। আমাদের আগে জানতে হবে মূল সমস্যাটা কোথায়? মূল সমস্যা হলো রেডিও-টেলিভিশন। সেখান থেকে নিশ্চিত করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। একজন শিল্পী কোন গান গাইবে, কোনটি বাদ পড়বে সব তখন চলে আসবে। একইসঙ্গে সবার রয়ালিটি বণ্টন হয়ে যাবে। এগুলোর জন্য সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
এখনকার অডিও অঙ্গন নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?


গান এখন সিন্ডিকেট, আর কম খরচেও হচ্ছে। এর বাইরে যার সঙ্গে যার সখ্য সে তাকে দিয়ে গান করছে। অডিও কোম্পানি ব্যাকআপ না দিলে আর্টিস্ট নিজ দায়িত্বে কোনো গান করে না। আমি শুরু থেকেই অনেক গান করে রাখতাম। এখন শিল্পীদের ইনকাম করার প্রবণতা যতটুকু তার ব্যতিক্রম নিজের গান করার ক্ষেত্রে। এক কথায় নিজের গান করার ক্ষেত্রে তারা উদাসীন। শুধু সিন্ডিকেটে গান করে তারা। ভালো গীতিকার সুরকারদের নিয়ে কাজ করতে চায় না। আমাদের এখনো নকিব খান আছেন, ফুয়াদ নাসের বাবু ভাই আছেন শওকাত আলী ইমন ভাই আছেন। এমন গুণীদের সঙ্গে এখনকার অনেকে নিজের জন্য গান করতে আগ্রহী হয় না। তারা যা আসছে তাই নিচ্ছে।


হ্যালো সুপার স্টার অ্যাপস অডিও গানে কেমন ভূমিকা রাখবে?
আমদের এখানে সিস্টেম হলো আমরা গান নিব কিন্তু কোনো কপিরাইট নিব না। গানটি যে কেউ একজন উদ্যোক্তা হয়ে আমাদের দেবে। যারা গান শুনবে প্রতিটি গান পাঁচ টাকার বিনিময়ে শুনবে। আমাদের অ্যাপের সিস্টেম হলো একবার শোনার পর বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ বান্ডেল ফুরিয়ে যাবে। তারপর আবার কিনতে হবে। ফ্রি শোনার কোনো পদ্ধতি থাকবে না। সেদিক থেকে যদি এক লাখ ভিউ হয় তাহলে পাঁচ লাখ টাকা চলে আসবে। এরপর এটি ইউটিউবে দিলেও কোনো প্রবলেম নেই। মজার বিষয় হলোÑ হ্যালো সুপার স্টার অ্যাপসে কোনোদিন পুরনো কন্টেন্ট ওঠবে না।


আপনার মামলা মোকাদ্দমাগুলো কোন্ পর্যায়ে আছে?
একটা ছাড়া সবগুলোই ফিনিস। মাদকের একটা মামলা আছে। এটার তারিখ অক্টোবরে। এখন পর্যন্ত এটি আমার পক্ষেই আছে। আশা করছি এটাও শেষ হয়ে যাবে।
২০০৬ সালে আপনি নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছেন। আগামী নির্বাচনে কি প্রার্থী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?


২০০৬ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে আমাদের কুমিল্লার যে রানিং এমপি (কর্নেল আকবর হোসেন) ছিলেন তিনি মারা যান। তিনি পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি ছিলেন। উনার মৃত্যুতে একটা শূন্যতা তৈরি হয় কুমিল্লা সদর আসনে। তখন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে আমাদের শক্তিশালী প্রার্থী কেউ ছিল না। তখন আমি নমিনেশন পেপার কিনেছি। এরপর যখন আমাকে দলের ইলেকশন বোর্ডে ম্যাডাম ডাকেন তখন ম্যাডামকে বলেছি আমি নির্বাচন করতে আসিনি। আমি বলেছি আকবর হোসেন সাহবে মৃত। উনার এই একটা আসন আমাদের অন্য আসনগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করবে।

আমি চাই আপনি ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে এখান থেকে নির্বাচন করবেন। তখন ম্যাডাম সেখান থেকে নির্বাচন করার সম্মতি দিয়েছেন। এটা হলো আমার সেই সময়ের নমিনেশন নেওয়ার কাহিনী। 


ম্যাডামকে কুমিল্লায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য পলিসিও বলতে পারি। এর বাইরে এমপি হওয়া নিয়ে আমার কখনো খায়েশ ছিল না। ভবিষ্যতে নির্বাচন করা নিয়ে আমার কোনো চিন্তা নেই। আমি বিএনপির কর্মী হিসেবে গেল ১৬ বছরে কোনো আপস করিনি। আমার দলকে যতটুকু দেওয়ার প্রয়োজন ছিল সেটা দিয়েছি। 


আর যতদিন বেগম খালেদা জিয়া আমাকে নির্দেশ না দেবে ততদিন বিএনপির হাজার কোটি লোকের কথায়ও আমি সাড়া দেব না। আমি বেগম জিয়ার নির্দেশে রাজনীতি থেকে বিরত আছি। তিনি আবার যখন নির্দেশ দেবেন ঠিক তখনি শুরু করব।

×