সোহরাওয়ার্দীর মুক্ত মঞ্চে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় যাত্রাপালা ‘আপন দুলাল’
‘যদি তুমি ভয় পাও, তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চে চলছে যাত্রা উৎসব। যাত্রাশিল্প ও শিল্পীদের উৎসাহিত করতে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগ। যাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। প্রতিদিনই নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাগম ঘটছে মুক্তমঞ্চে। উৎসবের পঞ্চম দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় বন্ধু অপেরা পরিবেশিত যাত্রাপালা ‘আপন দুলাল’। এ পালার নির্দেশনা দিয়েছেন মনির হোসেন এবং পালা রচনা করেছেন শামসুল হক। যাত্রাপালার কাহিনীতে দেখা যায়, ধর্মপুরের মহারাজ ধনপতি রায়ের দুই সন্তান আপন ও দুলাল।
হাশি-খুশি ও সুখ-শান্তির মধ্য দিয়ে বেশ ভালোভাবেই চলছে রাজ্য। হঠাৎ একদিন মহারানী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ৩টি প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করলেন সেনাপতি এবং মহারাজকে। তিনটি প্রতিজ্ঞার মূল কথা হচ্ছে রানীর মৃত্যুর পর মহারাজ কখনো বিয়ে করতে পারবেন না। একথা বলে মহারানী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। মৃত্যুর পূর্বে আপন ও দুলালকে তুলে দিলেন সেনাপতির হাতে। সেনাপতি ছিলেন মুসলিম। মন্ত্রী জংবাহাদুর হিন্দু। দুই ভাইকে তার হাতে কেন দিলেন না, সেই প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে মন্ত্রী। সেনাপতি মহারানীর কথা রাখতে গিয়ে আপন ও দুলালকে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে শিক্ষাগুরুর বাড়িতে রেখে আসেন।
কিন্তু দিন অতিবাহিত না হতেই চক্রান্ত করে মহারাজকে দ্বিতীয় বিয়ে করান। প্রাসাদে এলেন সৎ মা। একসময় মহারাজ গুরুদেবের বাড়ি হতে আপন এবং দুলালকে প্রাসাদে নিয়ে আসতে বলেন। মহারাজ হঠাৎ শিকারে বের হবেন। কারণ ছোট রানী হরিণের মাংস খেতে চেয়েছেন। আপন ও দুলাল শিকারে গেল। ফেরার পথে দুলালের পানি পিপাসা পায়। আপন মায়ের কাছে পানি আনতে গেলে রানী ক্ষুব্ধ হয়ে যান। মন্ত্রীকে ডেকে পরামর্শ করে আপন ও দুলালকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে ঘাতকের হাতে তুলে দেন। মহারাজ পুত্র শোকে তখন উন্মাদ।
সেনাপতি ও মাস্টার আপন এবং দুলালকে অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে দেয়। পথে যেতে যেতে দুই ভাই দুই দিকে হারিয়ে যায়। অনেক দিন পর সোনাপুর নামে এক রাজ্যে আপন ও দুলাল একত্রিত হয়। ধনপতি মিরকাসেম এবং মাস্টার সবাই একসঙ্গে রাজ্যে ফিরে এসে তাহাদের রাজ্য উদ্ধার করেন।