ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

চুরির ঘটনায় অভিযোগ জমা দিতে যাওয়া অভিযোগকারীকে

‘বের হয়ে যাও, ওরে বের করে দাও’, উত্তেজিত হয়ে জবি রেজিস্ট্রার

জবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ০৩:২৪, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

‘বের হয়ে যাও, ওরে বের করে দাও’, উত্তেজিত হয়ে জবি রেজিস্ট্রার

ছবি: সংগৃহীত

‘বের হয়ে যাও, ওরে বের করে দাও। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছো? এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে’, ঠিক এভাবেই শিক্ষার্থীর সাথে দুর্ব্যবহার করে নিজ রুম থেকে বের করে দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোঃ গিয়াস উদ্দিন।

হেনস্তার শিকার হওয়া শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসীব।

গত মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোঃ গিয়াস উদ্দিনের কাছে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে যান ইভান তাহসীবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এসব চুরির ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার পরই তিনি (রেজিস্ট্রার) এর সমাধান না করে উল্টো উত্তেজিত হন, অভিযোগকারীদের নিজ রুম থেকে বের করে দেন।

শিক্ষার্থীদের সাথে রেজিস্ট্রার শেখ মোঃ গিয়াস উদ্দিনের অসৌজন্যমূলক আচরণ করার একটি অডিও ক্লিপ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

ওই অডিও ক্লিপে শোনা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে রেজিস্ট্রার ড. গিয়াস উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের মালামালের নিরাপত্তা দিতে পারবো না, মালামাল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে রাখতে হবে।

এছাড়া, ‘শিক্ষার্থীরা কি খাবে, কোথায় থাকবে, এই দায়িত্ব প্রশাসনের না। শিক্ষার্থীদের কিছু হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায়ভার নিতে পারবে না,’ বলে জানান তিনি।

একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বের হয়ে যাও, ওকে বের করে দাও। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে আসো, এলাকায় পড়লেই তো পারতে।’

এ বিষয়ে জবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি ইভান তাহসীব বলেন, ‘আমার এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল চুরি নিয়ে অভিযোগ জানাতে আমরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে যাই। আমি প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেজ থেকে সাইকেল চুরির ঘটনা বললে, রেজিস্ট্রার উত্তেজিত হয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গ্যারেজ নেই। শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডের মালামালের নিরাপত্তার দায়িত্ব উনি নিতে পারবে না বলে জানান।’

শিক্ষার্থীরা টিউশনির জমানো টাকায় সাইকেল কিনে, সেই সাইকেল নিয়ে টিউশনি করে বলে জানান ইভান তাহসীব। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি আরও বলেন, ‘উনি যদি গ্যারেজের নিরাপত্তা দিতে না পারেন, তাহলে গ্যারেজ বন্ধ করে দিক, অথবা সাইনবোর্ড লাগিয়ে ঘোষণা করে দিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মালামালের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারবে না। একপর্যায়ে উনি আমাকে তার কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মিটিং আছেন, এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার বিভিন্ন ফোন নাম্বার দিয়ে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

রাকিব

×