
ছবি: সংগৃহীত
শিশুর শিক্ষা শুরু করার সঠিক বয়স নিয়ে অনেক অভিভাবকের মনে দ্বিধা থাকে। যদিও সাধারণত ৫ বছর বয়সে শিশুরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে সক্ষম হয় এবং এ বয়সে তারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে পারে, তবে সঠিক বয়সটি সব শিশুর জন্য একই নয়। কিছু শিক্ষার কাঠামো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ২ বছর বয়স থেকেই শিশুদের জন্য শিক্ষা প্রদান করা হয়, যা তাদের প্রাথমিক বিকাশে সহায়ক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর স্কুলে যাওয়ার সঠিক বয়স তার বিকাশগত প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে, শুধু বয়সের উপর নয়। শিশুর প্রস্তুতি বুঝে তার শিক্ষার যাত্রা শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ।
বিকাশগত প্রস্তুতির মূল্যায়ন
প্রত্যেক শিশুই আলাদা, এবং তাদের শিক্ষায় প্রবেশের প্রস্তুতি ভিন্ন হয়। মূলত শিশুর কিছু লক্ষণ যেমন সম্পর্ক তৈরি করতে পারা, সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারা এবং সামাজিকভাবে ক্রিয়াশীল হওয়া, এগুলি শিশুর স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতির ইঙ্গিত হতে পারে। যে শিশু নিজের মধ্যে কিছুটা স্বাধীনতা অনুভব করতে পারে এবং পরিবারের বাইরে একে অপরের সাথে সম্পর্ক গড়তে সক্ষম, তার জন্য স্কুলে যাওয়াটা সহজ হতে পারে।
তবে শুধু কিছু দক্ষতা নয়, শিশুর যোগাযোগ, শারীরিক বৃদ্ধি, এবং মানসিক ও সামাজিক বিকাশের অন্যান্য দিকও মূল্যায়ন করতে হবে। কিছু শিশু নির্দিষ্ট দক্ষতায় অগ্রগামী হতে পারে, কিন্তু তাদের আবেগিক পরিপক্কতা এবং অন্যান্য দিকও গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবারের প্রস্তুতি
শিশুর শিক্ষা শুরু করার সময় পরিবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিশুর বিকাশে পরিবারের অবস্থাও একটি ফ্যাক্টর হতে পারে। পরিবারের কাঠামো (পারিবারিক পরিস্থিতি যেমন একক পিতামাতা, পারিবারিক সদস্যরা, বা একত্রিত পরিবার) শিক্ষার সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, যদি পরিবারের সদস্যরা পর্যাপ্ত সময় বা সম্পদ না দিতে পারে, তবে শৈশবকালীন শিক্ষা শুরু করা আরও প্রয়োজনীয় হতে পারে।
শিশুর এবং পরিবারের প্রস্তুতি একে অপরের সাথে সম্পর্কিত হলেও, উভয় বিষয়কেই গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে, যাতে শিশুর শুরুর শিক্ষায় সহায়ক হতে পারে।
শিক্ষার আগ্রহ শুরু করার সুবিধা
স্ট. অ্যান্ড্রুজ সুকুম্বিত স্কুলে, যা ব্রিটিশ EYFS (Early Years Foundation Stage) পদ্ধতি অনুসরণ করে, সেখানে ২ বছর বয়স থেকেই শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করা হয়। এই প্রাথমিক শিক্ষার কিছু সুবিধা রয়েছে:
১. গঠিত শিক্ষা: খেলার মাধ্যমে হলেও, শিশুদের শিক্ষা একটি কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতির মাধ্যমে হয়, যা তাদের বিকাশের বিভিন্ন স্তর পূরণে সহায়তা করে।
২. সামাজিক দক্ষতা গঠন: শিশুদের একে অপরের সাথে এবং শিক্ষকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে শেখানো হয়, যা তাদের সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
৩. উচ্চ আবেগিক বুদ্ধিমত্তা: শিশুদের সামাজিক পরিবেশে একে অপরের সাথে মেশার মাধ্যমে তাদের আবেগিক বুদ্ধিমত্তা বিকশিত হয় এবং তারা আরও স্বাধীন হয়ে ওঠে।
৪. শিক্ষার প্রতি আগ্রহ উদ্দীপনা: খেলার মাধ্যমে শিক্ষার পদ্ধতি শিশুদের মধ্যে শিক্ষার প্রতি একটি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে, যা ভবিষ্যতে একাডেমিক সফলতার ভিত্তি স্থাপন করে।
৫. অভিভাবকদের সহায়তা: একটি তত্ত্বাবধানে থাকা পরিবেশে শিশুদের পাঠদান অভিভাবকদের জন্য আরামদায়ক হয়, কারণ তারা জানেন যে তাদের শিশুটি ভালো হাতেই আছে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণ
শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার সময় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়া করে নেওয়া উচিত নয়। প্রতিটি শিশুর বিকাশের স্তর এবং পরিবারের পরিস্থিতি ভালোভাবে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। স্ট. অ্যান্ড্রুজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল শিশুদের বিকাশগত প্রস্তুতি এবং বাইরের পরিস্থিতি সবকিছু মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে তাদের শিশুর জন্য সঠিক সময় শিক্ষার যাত্রা শুরু করা যায়, বা কিছুটা পরে। শেষমেশ, লক্ষ্য হলো শিশুর বিকাশের পথ সঠিকভাবে শুরু করা, যাতে তারা ভবিষ্যতে সফল হতে পারে।
সূত্র: https://www.standrewssukhumvit.com/what-is-best-age-start-child-education/
আবীর