
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ইউরোপের কয়েকটি দেশে বিনামূল্যে বা খুব কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। এসব দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ ও টিউশন ফি মওকুফের সুবিধা থাকায় উচ্চশিক্ষার জন্য এগুলো আদর্শ গন্তব্য হয়ে উঠছে।
ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য জার্মানি। দেশটির সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান করে। এখানে টিউশন ফি নেই, তবে সেমিস্টার ফি হিসেবে ১০০-৩০০ ইউরো পরিশোধ করতে হয়। বর্তমানে দেশটির প্রায় তিন লাখ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে Baden-Württemberg রাজ্যে নন-ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু ফি ধার্য করা হয়েছে।
নরওয়ের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সব শিক্ষার্থীর জন্য টিউশন ফি নেই। শুধু সেমিস্টার ফি হিসেবে ৩০০-৬০০ নরওয়েজিয়ান ক্রোন পরিশোধ করতে হয়। তবে, দেশটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলক বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আর্থিক প্রস্তুতি নিয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এখানে শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে নির্দিষ্ট সময় কাজের সুযোগ পান, যা তাদের খরচ পরিচালনায় সহায়ক হয়।
অস্ট্রিয়ার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নন-ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি সেমিস্টারে মাত্র ৭০০-১৫০০ ইউরো টিউশন ফি ধার্য করেছে, যা অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় অনেক কম। একইভাবে, ফ্রান্সের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নন-ইইউ শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক ২৭৭০-৩৭৭০ ইউরো ফি নির্ধারিত থাকলেও, বিভিন্ন স্কলারশিপের মাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। ফ্রান্সের Eiffel Excellence Scholarship এবং অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি স্কলারশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছেন।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় স্কলারশিপগুলোর মধ্যে একটি হলো হাঙ্গেরির Stipendium Hungaricum। এটি সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফের পাশাপাশি মাসিক ভাতা, আবাসন সুবিধা ও স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করে। এ স্কলারশিপের আওতায় প্রতিবছর শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হাঙ্গেরিতে পড়ার সুযোগ পান। এছাড়া Erasmus+ স্কলারশিপ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে পড়ার সুযোগ দেয়।
জার্মানির DAAD স্কলারশিপ, ফ্রান্সের Eiffel Excellence Scholarship, নরওয়ের Quota Scholarship Scheme, এবং Erasmus+ স্কলারশিপ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উল্লেখযোগ্য সুযোগ প্রদান করছে। এসব স্কলারশিপের জন্য সাধারণত ভালো একাডেমিক ফলাফল, ইংরেজি ভাষার দক্ষতা, এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন জমা দেওয়া প্রয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার আগে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতা নিশ্চিত করা, প্রাসঙ্গিক ডকুমেন্ট যেমন স্টেটমেন্ট অব পারপাস, রেকমেন্ডেশন লেটার এবং প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট প্রস্তুত করা গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্কলারশিপ আবেদন প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতামূলক হওয়ায় আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি ওয়েবসাইট, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অফিসিয়াল পোর্টাল এবং বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রদানকারী সংস্থার ওয়েবসাইট নিয়মিত পরিদর্শন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কানন