ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

দেশব্যাপী ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ৯ মার্চ ২০২৫

দেশব্যাপী ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ

সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ ও ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

আজ বেলা ১১টার দিকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোডে জড়ো হন। এরপর শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পৌঁছে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ সময় তারা 'তুমি কে? আমি কে? অছিয়া অছিয়া', 'সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে', 'একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে জ/বাই কর', 'ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট', 'খুনি কেনো বাহিরে ইনটেরিম জবাব চাই', 'রাবির অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'আমার বোনের কান্না আর না আর না', 'আমার মায়ের কান্না আর না আর না', 'তুমি কে আমি কে আছিয়া আছিয়া' প্রভৃতি স্লোগান দেন।

কর্মসূচিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার অন্তর্বর্তী বলেন, "সারাদেশে চলমান ধর্ষণের কোনো উল্লেখযোগ্য বিচার করতে যদি না পারেন, তাহলে শেখ হাসিনার অবস্থাটা মনে করিয়ে দিতে চাই। আমাদের যেন আবার ১ দফা নিয়ে আন্দোলনে নামতে না হয়। আছিয়ার ধর্ষণের দায় আপনারা এড়াতে পারবেন না।"

দ্রুত ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, "শুধু আছিয়া নয়, এতদিন যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সব ঘটনার বিচার করতে হবে। আমাদের বোনদের নিরাপত্তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।"

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আরেক সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আজকে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়েছে। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আপনি যে চেয়ার আপনারা পেয়েছেন, সেটার মূল্যায়ন করতে না পারলে অবিলম্বে চেয়ার ছেড়ে দিন। এই দেশের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচার হাসিনাকে সরাতে পারলে, ধর্ষকদেরও এই বাংলার মাটি থেকে বিতাড়িত করার ক্ষমতা রাখে। আজকে শিক্ষার্থীদের জনসমুদ্র আরেকটি জুলাইয়ের ইঙ্গিত করে। দাবি আদায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠ ছেড়ে যাচ্ছি না।"

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত হোসাইন বলেন, "দেশে এসব কি শুরু হয়েছে? সরকারের কাজ কি? এত এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, কোনো বিচার নেই, কিছু নেই। তারা কি সবাই ঘুমাচ্ছে? সব ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যত দ্রুত সম্ভব ট্রাইব্যুনাল গঠন করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কোনো ধর্ষক যেন ছাড় না পায়। সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।"

বিক্ষোভ সমাবেশে এ সময় বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

 

 

লুবনা শারমিন/মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×