ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য জনপ্রিয় পাঁচ দেশ

প্রকাশিত: ১৭:১৪, ৮ মার্চ ২০২৫

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য জনপ্রিয় পাঁচ দেশ

ছবি: সংগৃহীত।

অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের। কেউ নিজ অর্থ ব্যয়ে, আবার কেউ স্কলারশিপের মাধ্যমে বিদেশে পড়তে যান। তবে নির্দিষ্ট দেশে যাওয়ার আগে সেখানকার শিক্ষার মান, ব্যয়, সংস্কৃতি এবং অন্যান্য সুবিধা যাচাই করা প্রয়োজন। কানাডার শিক্ষা ও প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপ্লাইবোর্ডের চিফ এক্সপেরিয়েন্স অফিসার কারুন কানদই উচ্চশিক্ষার গন্তব্য হিসেবে পাঁচটি দেশের নাম উল্লেখ করেছেন এবং তাদের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন।

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যতম জনপ্রিয় দেশ। ক্যানবেরা, মেলবোর্ন, সিডনি, ব্রিসবেন, অ্যাডিলেড এবং পার্থ শহরে রয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ এবং খণ্ডকালীন কাজের সুযোগও রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ভিসা আবেদনের মধ্যে ১ লাখ ৬৬ হাজার শিক্ষার্থীকে অনুমোদন দিয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন খাতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কর্মঘণ্টা বাড়িয়ে প্রতি সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা করা হয়েছে, যা এ বছরের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে। পাশাপাশি ৪৮৫ টেম্পোরারি গ্র্যাজুয়েট ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থীরা এখন দুই বছরের পরিবর্তে চার বছর, স্নাতকোত্তর পাস করা শিক্ষার্থীরা তিন বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর এবং ডক্টরাল পাস করা শিক্ষার্থীরা ছয় বছর অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে পারবেন।

কানাডা

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য। সহজ অভিবাসন নীতি এবং গবেষণার সুযোগ এর অন্যতম কারণ। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনই কানাডায় পড়তে আগ্রহী।

কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বা বাইরে খণ্ডকালীন কাজ করতে পারেন, যা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই অনুমোদিত। একাডেমিক প্রোগ্রাম চলাকালে শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা এবং একাডেমিক বিরতির সময় পূর্ণকালীন কাজের সুযোগ পান। স্নাতক শেষে শিক্ষার্থীরা পোস্ট-গ্রাজুয়েশন ওয়ার্ক পারমিট (PGWP) প্রোগ্রামের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।

যুক্তরাজ্য

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খ্যাতি ব্যাপক। একাডেমিক ঐতিহ্য এবং গুণগত শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়। সাংহাইভিত্তিক একাডেমিক র‍্যাঙ্কিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিজ (ARWU)-এর তালিকায় যুক্তরাজ্যের ৬৩টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থান পেয়েছে। শিক্ষার্থীদের পছন্দের শহরগুলোর মধ্যে লন্ডন, গ্লাসগো এবং এডিনবার্গ শীর্ষে রয়েছে।

বিদেশি শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত পার্ট-টাইম কাজ করতে পারেন এবং একাডেমিক বিরতির সময় পূর্ণকালীন কাজের সুযোগ পান। পড়াশোনা শেষে স্নাতকরা দুই বছর পর্যন্ত গ্র্যাজুয়েট ওয়ার্ক ভিসায় কাজ করার অনুমতি পান।

আয়ারল্যান্ড

আয়ারল্যান্ডের বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা, অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন, ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক।

আয়ারল্যান্ডে শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পান, গ্রীষ্ম ও শীতের ছুটিতে প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। পড়াশোনা শেষে স্নাতকদের ১২ থেকে ২৪ মাস পর্যন্ত কাজের অনুমতি দেওয়া হয়, যা তাদের কর্মজীবনের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে।

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেন্দ্র। উদ্ভাবন, গবেষণা এবং একাডেমিক দক্ষতা অর্জনের সুযোগের জন্য এটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া এবং টেক্সাসের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এফ-১ (F-1) বা এম-১ (M-1) ভিসাধারী শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে কাজের সুযোগ পান। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার অনুমোদিত ক্যাম্পাসে চাকরির সুযোগও রয়েছে।

তথ্যসূত্র: এডুকেশন ডট কম ও ইন্ডিয়া টুডে।

সায়মা ইসলাম

×