
ছবি: সংগৃহীত
কিছু কার্যকর কৌশল ব্যবহার করে আপনি পড়া দ্রুত বুঝতে, সহজে মনে রাখতে এবং কম সময়ে পড়া শেষ করতে পারেন। আসুন, ৮টি বিজ্ঞানসম্মত পড়ার কৌশল সম্পর্কে জানি, যা আপনার শেখার পদ্ধতিকে আরও দক্ষ করে তুলবে।
১. পোমোডোরো টেকনিক – ছোট ছোট সময়ে মনোযোগ বাড়ান
দীর্ঘ পড়ার পরিবর্তে ২৫ মিনিট মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনার পর ৫ মিনিটের বিরতি নিন। এই পদ্ধতি মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং একঘেয়েমি দূর করে। নির্দিষ্ট সময় মেনে চললে আপনি বিক্ষিপ্ত চিন্তা দূর করতে পারবেন এবং পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন।
২. অ্যাকটিভ রিকল – আপনার মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করুন
শুধু পড়ে যাওয়ার বদলে নিজেকে মূল ধারণাগুলো মনে করানোর চ্যালেঞ্জ দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, এই কৌশলটি স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং দ্রুত শেখার গতি বাড়ায়। যত বেশি নিজেকে পরীক্ষার মতো মনে করে পড়বেন, তত কম সময়ে পড়া মনে রাখতে পারবেন।
৩. ফেইনম্যান টেকনিক – শেখানোর মাধ্যমে দ্রুত শিখুন
আপনি আসলেই কিছু বুঝেছেন কিনা তা যাচাই করার সেরা উপায় হলো সেটি সহজ ভাষায় অন্য কাউকে শেখানো। যদি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আটকে যান, তবে বুঝতে হবে আপনি পুরোপুরি বিষয়টি বোঝেননি। বিষয়কে সহজ করে ব্যাখ্যা করতে পারলে আপনার বোঝার ক্ষমতা বাড়বে এবং বারবার পড়ার প্রয়োজন কমবে।
৪. স্পেসড রিপিটিশন – শেষ মুহূর্তের মুখস্থকে বিদায় জানান
একবারে অনেক কিছু মুখস্থ করার বদলে একই তথ্য নির্দিষ্ট বিরতিতে বারবার পুনরায় পড়ুন। এটি দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং নতুন করে শেখার সময় কমিয়ে আনে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে পরীক্ষার আগে তাড়াহুড়ো করে পড়ার প্রয়োজন হবে না।
৫. মাইন্ড ম্যাপিং – দ্রুত বোঝার জন্য চিত্রায়ন করুন
জটিল তথ্যকে ডায়াগ্রাম ও ফ্লোচার্টে পরিণত করুন। এটি বিষয়গুলোর মধ্যে সম্পর্ক দেখাতে সাহায্য করে, যার ফলে আপনি সহজেই তথ্য মনে রাখতে পারবেন। চিত্রের মাধ্যমে পড়লে আপনার শেখার গতি আরও দ্রুত হবে।
৬. চাংকিং – তথ্যকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন
আপনার মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবেই প্যাটার্ন মনে রাখতে ভালোবাসে, তাই বড় তথ্যকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, পড়াশোনার সময় কমায় এবং পড়ার ক্লান্তি দূর করে।
৭. মাল্টিসেন্সরি লার্নিং – একাধিক ইন্দ্রিয় ব্যবহার করুন
পড়ার সময় শুধু চোখ নয়, পড়া বলুন, লিখুন এবং শুনুন। বিভিন্ন ইন্দ্রিয় ব্যবহার করলে স্মৃতিশক্তি আরও শক্তিশালী হয় এবং তথ্য দ্রুত ধরে রাখা যায়। আপনি যত বেশি ইন্দ্রিয়কে কাজে লাগাবেন, তত সহজে পড়া মনে রাখতে পারবেন।
৮. সংগঠিত পড়ার পরিবেশ – মনোযোগ বাড়ান, বিঘ্ন দূর করুন
পরিচ্ছন্ন ও নিরিবিলি পড়ার স্থান আপনাকে মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে। নয়েজ-ক্যান্সেলিং হেডফোন বা হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার করলে আপনার মনোযোগ আরও বাড়বে। গোছানো পড়ার স্থান মস্তিষ্ককে পড়ার জন্য প্রস্তুত করে এবং পড়ার গতি বাড়িয়ে দেয়।
পরিশেষে, পড়ার সময় দীর্ঘ করার চেয়ে স্মার্ট পড়াশোনা করা আরও কার্যকর। এই ৮টি কৌশল ব্যবহার করে আপনি দ্রুত শিখতে পারবেন, পড়ার সময় কমাতে পারবেন এবং পরীক্ষার জন্য আরও আত্মবিশ্বাসী হতে পারবেন। আজই এগুলো চেষ্টা করে দেখুন এবং পড়ার মানোন্নতি অনুভব করুন!
আবীর