ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১

ব্যতিক্রমী ভাবনার সেই মেয়েটিই আজ সহকারী জজ, স্বপ্নজয়ী হালিমা!

প্রকাশিত: ১৭:০৫, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ব্যতিক্রমী ভাবনার সেই মেয়েটিই আজ সহকারী জজ, স্বপ্নজয়ী হালিমা!

ছ‌বি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) ১৭তম নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন হালিমাতুস সাদিয়া। ছোটবেলায় যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হতো, বড় হয়ে কী হতে চান? 
তখন তিনি বলতেন, “আমি ভিন্ন কিছু হতে চাই।” তবে সেই ভিন্ন কিছু আসলে কী, তা তখনো স্পষ্ট জানতেন না।

আজ নিজের সাফল্যের পেছনে ফিরে তাকিয়ে তিনি বলেন, “ভিন্ন কিছু হওয়ার অদম্য ইচ্ছা ছিল আমার। কঠোর অধ্যবসায় আর আল্লাহর রহমতে আমি সফল হয়েছি। তবে এটি আমার শেষ গন্তব্য নয় বরং পেশাগত জীবনের সাফল্যের যাত্রা মাত্র শুরু হলো।” 

হালিমাতুস সাদিয়ার জন্ম বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামে। তাঁর এই সাফল্যে আনন্দে ভাসছে পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা। সকলের একটাই প্রশ্ন—এতো বড় সাফল্যের রহস্য কী?

তিনি সরলভাবে উত্তর দিলেন, “নিষ্ঠা, মনোযোগ আর অধ্যবসায়।” তবে পথচলা মোটেও সহজ ছিল না। তিনি জানান, “অনেক সময় আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলতাম এবং হতাশা পেয়ে বসত। কাঁদতাম তবে আবার নতুন করে নিজেকে গুছিয়ে নিতাম। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই। নিজেকে বলেছিলাম—আমি পারব। শেষ পর্যন্ত আমি পেরেছি। এটা আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য আর অধ্যবসায়ের বিজয়।”  

ছোটবেলা থেকেই হালিমাতুস ছিলেন মেধাবী। পড়াশোনার পাশাপাশি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নিতেন। বরিশালের কাউনিয়া এলাকার একটি মাদ্রাসায় তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। পরে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে। অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পান।  

২০১৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ এবং ২০১৭ সালে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ অর্জন করেন। এরপর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১৩তম হয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।  

হালিমাতুসের বাবা বলেছিলেন,“তুমি যদি সত্যিই ভিন্ন কিছু হতে চাও, তবে বিচারক হও।”

বাবার এই কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি আইন পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। স্নাতকে সিজিপিএ ৩.৮৫ এবং স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৩.৯৩ পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।  

আজ তার সেই ভিন্ন কিছু হওয়ার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে—তিনি এখন বিচার বিভাগের একজন গর্বিত সদস্য, সহকারী জজ!

ইমরান

×