
আগামী ২০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে এসএসসির গণিত (আবশ্যিক) পরীক্ষা। তবে এই দিন খ্রিস্টান ধর্মাম্বলীদের যীশু খ্রিষ্টের পুনরুত্থান (ইস্টার সানডে)। ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় অসন্তুষ্ট ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খ্রিস্টান ধর্মের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বাংলাদেশ কাথলিক শিক্ষা বোর্ড পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের জন্য শিক্ষা সচিবকে চিঠি দিয়েছেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে এখনো কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। সূচি অনুযায়ী ২০ এপ্রিল খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের যীশু খ্রিষ্টের পুনরুত্থান, রবিবার (ইস্টার সানডে)। যা ধর্মীয় বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ পার্বণ। ঐচ্ছিক ছুটি হিসেবে সরকারিভাবেও তালিকাবদ্ধ।চিঠি সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের কাথলিক বিশপ সম্মিলনীর আটজনের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া স্মারকলিপিতে যীশু খ্রিষ্টের পুনরুত্থান, রবিবার (ইস্টার সানডে)-কে সরকারি ছুটি বিবেচনা করার জন্য বিশেষ অনুরোধ রেখেছেন। এরপর এই দিনে সূচি পরিবর্তন করে পাবলিক পরীক্ষা দেওয়ায় হতবাক হয়েছে তারা।
কাথলিক শিক্ষা বোর্ড জানায়, এই বোর্ডের আওতাধীন ৬০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। অন্যান্য আরো ৫০টির অধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে যেখানে খ্রিষ্টান শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করে। তবে এই রুটিন ওইসব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন ও বিচলিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চার্চ-পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জনগণ ইস্টার সানডের দিনে এসএসসি পরীক্ষার সূচি পাওয়ার পর অসন্তুষ্টি ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
বাংলাদেশ ক্যাথলিক শিক্ষা বোর্ড খ্রিস্টান ধর্মের শিক্ষার্থীদের একটি অভ্যন্তরীণ বোর্ড। যা দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষার সঙ্গে কাজ করে আসছে। এই বোর্ডের নির্বাহী সচিব জ্যোতি এফ গোমেজ জনকণ্ঠকে জানান, সর্বশেষ ১৯৮২ সালে ইস্টার সানডের দিন এমন পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বিগত ৪০ বছরে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি ধারণা করছেন ভুল করেই হইতো এমনটি করা হয়েছে। যেকারণে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনে শিক্ষা সচিবকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জ্যোতি এফ গোমেজ আরও বলেন, চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে আদিবাসীদের বৈষাবী উৎসবের দিন পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছিল। ওই কারণে তারা পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের জন্য আবেদন করে। আবেদনের পর বোর্ড ইস্টার সানডেতে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছে। আশা করছি এই তারিখ পরিবর্তন করা হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির এ বিষয়ে জনকণ্ঠকে জানান, পরীক্ষার তারিখ আগেই নির্ধারণ করা হয়েছে। যখন এটি করা হয় তখন আমি বোর্ডের দায়িত্বেও ছিলাম না। বোর্ড পরীক্ষার তারিখ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশ দেয় তবে অবশ্যই তারিখ পরিবর্তন করা হবে।
কাজল/রাজু