
হোমাইরা জাহান সনম প্রথম বাংলাদেশী নারী যিনি থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘এশিয়া-প্যাসিফিক এসোসিয়েশন অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউশন্স’ (এপিএএআরআই)-এ টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। হোমাইরা কৃষি বিষয়ে স্নাতক ও কীটতত্ত্বে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পূর্বে তিনি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এগ্রিকালচার এন্ড বায়োসায়েন্সেস ইন্টারন্যাশনাল (সিএবিআই)-এ বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন।
এপিএএআরআই একটি সদস্যভিত্তিক, অরাজনৈতিক, বহু-অংশীদার এবং আন্তঃসরকারি আঞ্চলিক সংস্থা; যার লক্ষ্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সংস্থাটি ১৯৯০ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-সহ ১৩টি দেশের সরকারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২১টি কোর সদস্য দেশের মাঝে বাংলাদেশ অন্যতম।
হোমাইরার ছোটবেলা কেটেছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার হাওরের প্রত্যন্ত বড়ই গ্রামে। গ্রাম থেকে স্কুলে যেতে তিন কিলো রাস্তা হাঁটতে হয়। প্রত্যন্ত গ্রামের একমাত্র মেয়ে হিসেবে দেশের সুনামধন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন তিনি। ছোট থেকে আর্মি অফিসার হওয়ার তীব্র বাসনা থাকলেও সামাজিক প্রতিবন্ধকতায় তা আর হয়ে উঠেনি। তবে দমে যাননি তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই কৃষি গবেষণার নেশা তাকে পেয়ে বসে। সেই থেকে শুরু।
স্নাতকোত্তর শেষ করেই স্বামী ও পরিবার সামলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেন। এর মাত্র ৬ মাস যেতেই প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে যুক্ত হন এগ্রিকালচার এন্ড বায়োসায়েন্সেস ইন্টারন্যাশনাল (সিএবিআই)-এ। সিএবিআই-তে সুনামের সাথে কাজ করেন এক বছরের বেশি। পরবর্তীতে নিজ কর্ম দক্ষতায় এশিয়া-প্যাসিফিক এসোসিয়েশন অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউশন্স-এ টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে থাইল্যান্ডে কর্মরত আছেন।
তিনি আপারি-তে গবেষণা ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছেন। জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলায় এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের কৃষি খাতকে প্রস্তুত রাখতে ন্যাচারাল রিসোর্স ব্যবস্থাপনা ও এই অঞ্চলকে স্যানিটারি এবং ফাইটোস্যানিটারি মেজারমেন্টে দক্ষ করে কৃষি বানিজ্যে এগিয়ে থাকা ও টেকসই কৃষি অনুশীলন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা, নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্প, এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের গবেষণা সমন্বয়সহ নানাবিধ কৃষি উন্নয়নমূলক কাজে যুক্ত আছেন।