জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো হিজাব দিবস পালন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ‘কুরআন এন্ড কালচারাল স্টাডি ক্লাব (ফিমেল সেকশন)’ এর উদ্যোগে একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া র্যালি শেষে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবন থেকে শুরু হয়ে শহিদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় দর্শন ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা বলেন, মুসলিম প্রধান একটি দেশে মুসলিম নাগরিক হিসেবে হিজাব পড়ার অধিকার চাওয়া একই সাথে হাস্যকর এবং বেদনাদায়ক। ইসলামে যেখানে হিজাব পড়া বাধ্যতামূলক সেখানে কেনো আমাকে হিজাবের জন্য অধিকার চাইতে হবে? হিজাবকেও পোশাকের স্বাধীনতার আওতায় আনতে হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় ইসলামি বিধিনিষেধ মানার জন্য আমাদের বিভিন্ন ট্যাগিং এর শিকার হতে হতো। আমরা এসব ট্যাগ থেকে মুক্তি চাই৷
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শামীমা নাসরিন জলি বলেন, গত ১লা ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস ছিল। এটি গত ১২ বছর যাবৎ বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসলেও বাংলাদেশে এইবার প্রথম। আমরা বিভিন্ন জায়গায় হিজাব পরার জন্য লাঞ্ছিত হতে দেখি, সেটার বিপরীতে আমরা এটি করছি। হিজাব আমাদের অধিকার ও আধুনিকতা। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, যারা অভিজাত, ভদ্র, মুসলিম ও বিশ্বাসী নারীরা পর্দা করবে। সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই আমরা আজকে এ র্যালি ও সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেছি।
উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহাসান বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের একজন নারী অধিকার কর্মী একটা বক্তব্য শোনার পর আমার মধ্যে নতুন একটা বোধের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেছেন 'মানব সভ্যতার বিকাশের সাথে কাপড় পরিধানের এক বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ সভ্যতার পূর্ব যুগে মানুষ কাপড় পরিধান করতো না।' যখন আমরা বলি আমরা সভ্য হয়েছি এর মানে আমরা বলি আমরা কাপড় পড়া শিখেছি। তাহলে কেউ যদি কাপড়ের পরিমাণ নির্ধারণ করতে গিয়ে হিজাবটাকে সংযুক্তি করে তাহলে এটা কীভাবে সভ্যতার পরিপন্থি হয়? হিজাব শুধু নারীদের অধিকার নয়, এটা সভ্যতার একটি উপাদানও বটে।
সাজিদ