অনুমতি ছাড়াই ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন অফিসার রেজাউল ইসলাম মাজেদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদারের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন অফিসার মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গত ৬ আগস্ট, ২০২৪ খ্রি. থেকে অদ্যাবধি কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩(গ) অনুযায়ী 'পলায়ন' (ডিজারশন)- এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রি. হতে তাঁর বেতন স্থগিত রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কিন্তু সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী, টানা ৬০ দিন বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তাকে পলাতক গণ্য করে চাকরিচ্যুত করার বিধান থাকলেও ৬ মাস পর কেন বেতন-ভাতা কেন বন্ধ হয়েছে সে বিষয় রেজিস্ট্রারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি তাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়সূত্রে জানা যায়, মাজেদ সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই অফিস করেছেন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। গত ১৩ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে দেখা গেলেও পুলিশি তৎপরতার কারণে তিনি দেশ ছাড়তে পারেননি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে তৎকালীন আওয়ামীপন্থী উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মঈনের সহযোগিতায় অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মাজেদ সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ পান। একই বছরের ১৫ মে অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় তিনজন প্রার্থীকে নিয়ে প্যানেল তৈরি করা হলেও ৪ অক্টোবর নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশে শুধু মাজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে তৎকালীন উপ-উপাচার্য আপত্তি জানালেও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতা থাকা অবস্থায় রেজাউল ইসলাম মাজেদের বিরুদ্ধে ভিন্নমত দমন, দলীয় কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, মাদক সংশ্লিষ্টতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে হস্তক্ষেপের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
তবে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো, ২০১৬ সালের ১ আগস্ট ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ৩ নম্বর আসামি তিনি।
সাজিদ