ছবি: সংগৃহীত
কখনো কি এমন হয়েছে, যে কেউ আপনার সাথে বাজে ব্যবহার করেছে বা আচরণে আপনাকে ছোট করেছে? হয়তো আপনি একটু হতবাক হয়ে গেছেন, কিংবা রেগে গিয়ে তার উত্তর দিতে চেয়েছেন। কিন্তু ঠিক তখনই কি মনে হয়েছে, সত্যি, এমন আচরণ আমাদের জীবনে কেন আসছে? এর পেছনে আসলে কার দোষ?
এটা মনে রাখা জরুরি যে, অন্যদের বাজে ব্যবহার আমাদের ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, বরং তাদের নিজের সমস্যা। প্রতিটি মানুষের জীবন, তার দুঃখ, কষ্ট বা হতাশা তার আচরণে প্রকাশ পায়। আপনি যদি তার প্রতিক্রিয়ায় উত্তেজিত হয়ে তার মানসিকতায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন, তবে আপনি অজান্তেই তার মানসিকতার অংশ হয়ে যাবেন। কিন্তু কীভাবে আপনি নিজের মনোবল বজায় রাখবেন এবং তার নেতিবাচকতা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে চলবেন?
1. তার মনোভাবের প্রতি ইগনোর করুন: আপনি যখন কাউকে তার বাজে আচরণের প্রতিক্রিয়ায় জবাব দিতে যান, তখন আপনি তার চাহিদায় নিজেকে সঁপে দেন। প্রতিটি মানুষই তার নিজের মানসিক অবস্থা থেকে কাজ করে, এবং অন্যের উপর প্রভাব ফেলতে তার কিছু ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে। তার এই আচরণ শুধু তার জীবন এবং তার মানসিকতার প্রতিফলন। আপনি যদি এতে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে আপনি তার সমস্যায় জড়িয়ে যাবেন, যা আপনার জীবনের দিকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
2. আপনার কাজ এবং সফলতা দিয়ে জবাব দিন: যদি আপনি মনে করেন যে জবাব দিতে হবে, তবে সেটা হবে আপনার কাজ দিয়ে, আপনার সফলতা দিয়ে। আপনি যদি সফল হন, আপনার ভালো কাজ এবং উন্নতি তার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। পৃথিবী যেভাবে আপনার প্রতি আচরণ করবে, সেটি আপনার কাজের মাধ্যমে আপনার গুরুত্ব এবং সক্ষমতা প্রকাশ পাবে। প্রতিটি সফল পদক্ষেপে আপনি তাকে এবং অন্যদের দেখিয়ে দিতে পারবেন যে আপনি তার বাজে আচরণে প্রভাবিত হননি।
3. ইতিবাচক মনোভাব এবং ভালোবাসার মাধ্যমে পরিবর্তন আনুন: এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ, অন্যের বাজে আচরণে যখন আপনি পালটা কিছু দেন, তখন আপনি তাদের জীবনেও নেতিবাচক শক্তি সৃষ্টি করছেন। পরিবর্তে, তাদের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি প্রকাশ করে আপনি তার মনোভাব পরিবর্তন করতে পারেন। আপনি যতটা সম্ভব তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করুন, তার পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন। এমন আচরণ সময়ের সাথে তাকে তার ভুল বুঝতে সাহায্য করতে পারে।
4. নিজেকে ভালোবাসুন এবং নিজেকে সম্মান করুন: এটা ভুলে যাবেন না, আপনি যেভাবে অন্যদের প্রতি আচরণ করেন, সেই রকম আচরণ আপনার প্রতি ফিরে আসে। নিজের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান এবং নিজের প্রতি সদয় মনোভাব রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি নিজের শর্তে জীবন যাপন করতে পারেন, তবে অন্যদের আচরণের ওপর আপনার প্রতিক্রিয়া অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
জীবনে কখনো কখনো অন্যদের বাজে আচরণ বা নেতিবাচক মনোভাব আমাদের চ্যালেঞ্জ করতে পারে, তবে আমাদের কাজ হবে সেই চ্যালেঞ্জকে শান্তভাবে এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে মোকাবিলা করা। কখনোই ভুলে যাবেন না, আপনার শান্তিপূর্ণ মনোভাব, সহানুভূতি, এবং ভালোবাসা আপনাকে জীবনের নানা পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেবে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস আরও মজবুত করবে।
তৌহিদ