ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

‘গামছা হাফিজ’ এর বহিষ্কারের দাবিতে ইবি ভিসির বাসভবন ঘেরাও

ইবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

‘গামছা হাফিজ’ এর বহিষ্কারের দাবিতে ইবি ভিসির বাসভবন ঘেরাও

ছবি : সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের কাছে চূড়ান্ত বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ও ঘেরাও করেছেন তারা। তাদের চলমান আন্দোলনের ব্যানারে অভিযুক্ত শিক্ষককে ‘গামছা হাফিজ’ বলে সম্বোধন করেছেন।

মঙ্গলবার এই দাবিতে বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের ঝাল চত্ত্বর এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হল এলাকা ও বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকে অবস্থান নেন।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘তদন্ত না ভন্ডামি, ভন্ডামি ভন্ডামি’, ‘প্রশাসন সিদ্ধান্ত, মানি না মানবো না’, ‘প্রহসনের বিচার, মানিনা মানবোনা’, ‘প্রশাসনে প্রহসন, মানি না মানবো না’, ‘বিচার না পুরস্কার, পুরস্কার পুরস্কার’, ‘একশান একশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘হাফিজের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’ ও ‘হাফিজ হটাও, ক্যাম্পাস বাচাও’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

দফায় দফায় উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি পর্যালোচনার আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রক্টর শিক্ষার্থীদেরকে প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত আবেদন দিতে বলে।

এর আগে সমকামিতায় বাধ্য করা, শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও যৌন হয়রানি, বাধ্যতামূলক ছাত্রলীগের মিছিলে পাঠানো সহ বিভিন্ন অভিযোগের হাফিজুল ইসলামকে এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ওই শিক্ষকের বার্ষিক একটি ইনক্রিমেন্ট বাতিল করা হয়েছে। যদিও অফিস আদেশে শৃঙ্খলাভঙ্গ উল্লেখ রয়েছে।

সোমবার (২৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। জানার পরপরই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে এই সিদ্ধান্ত জানাতে লুকোচুরি করেছিল প্রশাসন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটামের পর বিভাগে অফিস আদেশ পাঠায় রেজিস্ট্রার দপ্তর।

অফিস আদেশে বলা হয়, বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে উপাচার্য কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৬তম (সাধারণ) সভার ৪৪ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (৪) i (b) ও (e) ধারা মোতাবেক তাকে বার্ষিক একটি ইনক্রিমেন্ট বাতিল করা হলো এবং ২২ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী ১ বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হলো।

বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দ্বীপ সাহা বলেন, হাফিজের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ আছে শিক্ষার্থীদের। কিন্তু প্রশাসন বিচারের নামে একটা প্রহসন করছে। তাকে মাত্র ১ বছরের ছুটিতে পাঠিয়েছে। এটা মনে হয় যেন তাকে প্রশাসন পুরস্কৃত করেছে। আমরা এ বিচার প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা হাফিজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার চাই। আমরা লম্পটমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের অবস্থান কর্মসূচি করছি। প্রশাসন সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কথা দিবে তারপরে আমরা এখান থেকে উঠবো। তার বিরুদ্ধে ২৭ টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তারপরেও তার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আজাহারুল ইসলাম/মো. মহিউদ্দিন

×