ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১

ঢাবি-সাত কলেজের সংঘর্ষে হাসনাতের উপস্থিতি নিয়ে সারজিসের পোস্ট

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

ঢাবি-সাত কলেজের সংঘর্ষে হাসনাতের উপস্থিতি নিয়ে সারজিসের পোস্ট

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হেনস্তার শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়, হাসনাত আবদুল্লাহ সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। তবে তারা তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। শিক্ষার্থীদের উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করার পর তিনি নিজেই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে হাতাহাতির শিকার হন।

ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ হাসনাত আবদুল্লাহর দিকে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি সংঘর্ষস্থল ত্যাগ করে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।

এ ঘটনার পর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহর উপস্থিতি এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে তার অবস্থান সম্পর্কে নিজেদের মতামত জানান।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) স্ট্যাটাসে সারজিস লেখেন, ‘আশপাশে এমন বহুত শত্রু আছে যারা সুযোগ পেলে খুন করে ফেলবে, এইটা জানার পরেও মবের মধ্যে ঢুকে মারামারি থামানোর কথা বলতে হেডম লাগে। অন্য কেউ এই সাহস করে নাই। সাহস করেছে Hasnat Abdullah। সাহসটা করার জন্যে হাসনাতকে মাথায় তুলে ফেলতে হবে সেটা বলছি না, তবে ন্যূনতম এপ্রিশিয়েটটা অন্তত করতে শিখেন। হয়তো ফলাফল প্রত্যাশিত হয়নি কিন্তু এর চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারত। সবচেয়ে বড় কথা- উদ্দেশ্য সৎ ছিল।

এই ছেলেটার সমস্যা হলো এর মাথা গরম আর সবসময় গ্রেটার পার্পেপেক্টিভ চিন্তা করে। কিন্তু সত্যি এটাই যে, মাথা গরম বলেই সেই জুলাইয়ে ভিসি চত্বরে গায়েবানা জানাজা শেষে যখন সবাই পুলিশের টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড আর ছোররা বুলেটে দিগ্বিদিক ছুটে যাচ্ছিল তখন এই ছেলেটা সর্বপ্রথম স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ওই পুলিশের দিকে দুই হাত প্রশস্ত করে এগিয়ে যায় আর বলে ‘we are open to killed’!

ঠিক যেমনিভাবে গতকাল গিয়েছিল। এই ছেলেটাই সেই জুলাইয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে রাজাকার রাজাকার মিছিলের মাঝখানে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যখন অনেকেই নিজেকে সেফ জোনে রেখেছিল। এই ছেলেটাই সর্বপ্রথম এবং একা সচিবালয়ে আনসার লীগের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে এবং পরবর্তীতে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় সচিবালয় অনেকটা সুরক্ষিত হয়ে উঠে।

এই মাথা গরম ক্ষ্যাপা ছেলেটার দোষ হচ্ছে যখনই কোথাও অস্থিতিশীল অবস্থা দেখা দেয়, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায় তখনই এ কোনো কিছু চিন্তা না করে সমাধানের জন্য ছুটে যায়। হোক সেটা ক্যাম্পাস, রাজপথ কিংবা অন্য কোথাও। আপনারা যারা শুধু ঘরে বসে স্যোশাল মিডিয়ার ঝড় তুলতে পারেন তাদের মতো সেইফ গেম প্লে না করতে পারাটা হাসনাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু তিক্ত সত্য এটাই, এই মাথা গরম স্বভাবওয়ালা ক্ষ্যাপা তরুণ প্রজন্মের কারনেই এই নতুন বাংলাদেশ।

কতজনের এখন কতরকম স্বার্থ আর ধান্ধা সেটা আমরা বুঝি, অপ্রত্যাশিত কিছু হলে এরা যে আবার গর্তে যাবে সেটাও জানি। কিন্তু দিনশেষে চোখের সামনে রক্ত আর হাজারো জীবনের বিনিময়ে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা রক্ষা করতে হাসনাতরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আপনাদের মতো গুটিকয়েক ভন্ড, সুবিধাবাজ, কালপ্রিট কী বললো আর কী বিহেভ করল তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। হাসিনার পোষারা এর চেয়ে কম বলেনি বা করেনি।

মিনিমাম কমনসেন্স থাকলে বোঝা উচিত কারা করসে, কেন করসে। রকেট সাইন্স না বোঝাটা।

We are Hasnat & proud to be a fellow-fighter of Hasnat.’

নুসরাত

×