ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়করণের দাবিতে রাজধানীতে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের পদযাত্রা উত্তপ্ত রূপ নেয়। প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে পৌঁছানোর পরই পুলিশের বাধার মুখে পড়েন শিক্ষকরা।
ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চাইলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। তবে শিক্ষকরা তাতেও পিছপা না হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ও শুয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।
এক পর্যায়ে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন অনেক শিক্ষক। একজন শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমরা তো কাউকে মারি নাই, লাঠি দেই নাই। আমরা শিক্ষক, কিন্তু আমাদেরকে লাঠি দিয়ে পেটানো হলো। পানি ছিটিয়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হলো। অনেকের মাথা ফেটে গেছে, শরীর রক্তাক্ত হয়েছে।"
শিক্ষকরা জানান, তাদের বেতন বৈষম্য চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক যেখানে মাসে ৪০,০০০ টাকা বেতন পান, সেখানে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার একজন শিক্ষক পান মাত্র ১,৫০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। এর মধ্যেই তারা রাজধানীর প্রেস ক্লাবের সামনে আট দিন ধরে আন্দোলন করছেন, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।
একজন আন্দোলনকারী বলেন, "আমরা ৩৯ বছর ধরে কেবল আশ্বাসই পেয়েছি। আমাদের বেতন বৃদ্ধি বা জাতীয়করণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা আজ রাজপথে নেমেছি।"
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই জলকামান ও ব্যারিকেড ব্যবহার করা হয়েছে। তবে শিক্ষকরা এ ধরনের আচরণের নিন্দা জানিয়ে বলেন, "রাষ্ট্র আমাদের দাবির প্রতি উদাসীন। নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম, তবুও আমাদের উপর লাঠিচার্জ করা হয়েছে।"
উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেও আন্দোলনকারীরা চারুকলার সামনের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন। প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেন তারা। মাদ্রাসা শিক্ষকরা দাবি জানান, আহত শিক্ষকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও তাদের জাতীয়করণের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, ২০১৩ সালে ২৬,০০০ এরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও মাত্র দেড় হাজার ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এখনো জাতীয়করণের আওতার বাইরে। সরকার থেকে কোনো উদ্যোগ না আসলে, তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঢাকার রাজপথে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/bZbzWRHJ2PM?si=DFcLH2gfpXTMyg_o
এম.কে.