রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্কেটবল খেলাকে কেন্দ্র করে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।
বুধবার রাত ১০টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলায় এ ঘটনা ঘটে ।
আহত তিন শিক্ষার্থী হলেন- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মো. হৃদয়, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী ও ফোকলোর বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের বর্তমান সদস্য রিমন আহম্মেদ। তাদের মধ্যে মো. হৃদয় গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খেলার শেষের দিকে একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় খেলা শেষ হয়। এরপর এর জের ধরে রাত ১০টার দিকে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের আনুমানিক ২০-৩০ জন শিক্ষার্থী লাঠিসোটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে পুলক আহমেদকে মারার জন্য আসে। ওই সময় পুলকের সঙ্গে থাকা মো. হৃদয়, রিমন আহম্মেদ ও মেহেদী হাসান তাদের অতর্কিত হামলায় আহত হয়।
পরবর্তীতে হামলায় আহতদের বন্ধুবান্ধব ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেন। এ সময় তাদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল মিঠু, কর্মী ফয়জুল ইসলাম অমিসহ বেশকয়েকজন নেতা-কর্মীকে দেখা গেছে।একপর্যায়ে তারা প্রশাসন ভবনের পাশে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুর রাজ্জাক সৈকতকে পেয়ে মারধর করে আটক করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে প্রক্টর দপ্তরে ভুক্তভোগীদের দাবির প্রেক্ষিতে আটক শিক্ষার্থী ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলায় জড়িতদের বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে আহত বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের বর্তমান সদস্য রিমন আহম্মেদ বলেন, 'ক্রিকেট টিমের চার-পাঁচ জনসহ বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ একটি সূত্র এসে জানায় পুলককে মারা হবে। আমরা ছোটখাটো একটা বিষয় ভেবে তাদের সঙ্গে কথা বলে ম্যানেজ করবো বলে মনস্থির করি। ইতোমধ্যে পেছন ও সামনে থেকে ২০ জন করে কোনো কথা ছাড়াই অতর্কিত হামলা চালায়। কে রে, কে রে বলে তারা লাঠিসোটা ও রড দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আমাকেসহ সেখানে থাকা পাঁচ-ছয় জনকে নির্বিচারে মেরে তারা পালিয়ে যায়।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, খেলার মাঠে সমস্যা সমাধান হওয়ার পরও আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পরিবহন মার্কেটে হামলা করে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গুরুতরভাবে যখম করে । এসময় তাদের অনেকের হাতে চাপাতি,রড ও ছিলো।আজ এ বিষয়ে শৃঙ্খলা উপকমিটির একটি মিটিং হয়েছে। খুব দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আশিক