ছবি: সংগৃহীত
গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতাসীন সরকার পতন ঘটে। সেই সময় কোটা সংস্কারের দাবিতেই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। নতুন সরকারের গঠনের পর আশা করা হয়েছিল, সব অযৌক্তিক কোটা ব্যবস্থা বিলুপ্ত হবে। কিন্তু পাঁচ মাস পর আবারও কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল হয়েছে রাজপথ।
গত রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ অন্যান্য কোটার বৈষম্য নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দাবি, মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সব অযৌক্তিক কোটার অবসান ঘটিয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফল পুনঃপ্রকাশ করতে হবে।
সোমবার (২১ জানুয়ারি) শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, “যে কোটাপ্রথা বাতিলের জন্য সহস্র ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন, সেই ব্যবস্থা এখনও বহাল আছে। এই বৈষম্যমূলক কোটার কারণে যোগ্য শিক্ষার্থীরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
তারা অভিযোগ করেন, এবারের মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় কাটমার্ক ছিল ৭৩.৭৫, অথচ ৪০ পেয়ে অনেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটার মাধ্যমে সুযোগ পেয়েছেন। এমনকি ঢাকার শীর্ষ মেডিক্যাল কলেজগুলোতেও নিম্ন নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, এই বৈষম্য দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। “৪০ নম্বর পাওয়া একজন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে ভুল চিকিৎসা দিলে দায় কার?” এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেন।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের পরও কোটা বহাল থাকলে তার মানে আমরা আন্দোলন থেকে কিছুই পাইনি। কোটা বহাল থাকলে জুলাই অভ্যুত্থানের মর্যাদা কোথায় থাকলো? আমরা চাই মেধার ভিত্তিতে যোগ্য ডাক্তার তৈরি হোক, যাতে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত হয়।”
শিক্ষার্থীরা ৫% কোটা কমিয়ে সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানান এবং ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের আহ্বান জানান। তারা বলেন, “এটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বৈষম্যমূলক এই ব্যবস্থা আমাদের ভবিষ্যৎকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”
জাতির জন্য লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা দ্রুত এই বৈষম্যের অবসান দাবি করেছেন। কোটা সংস্কার নিয়ে চলমান এই আন্দোলন আবারও রাজপথে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/UoXALQv422M?si=ZJFUaZNd6_OiFaf8
এম.কে.