ছবি : সংগৃহীত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের তোদের মুখে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী। রোববার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের তোদের মুখে পড়েন তিনি। এ সময় উপ-উপাচার্যের সাথে থাকা প্রক্টরিয়াল বডি, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও শাখা ছাত্রদলের সাথে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি ও হট্টগোল হয়। পরে তারা উপ-উপাচার্যকে হট্টগোল থেকে বের করে প্রশাসন ভবনে পৌঁছে দেন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের তৃতীয় তলা দখল করে রেখেছেন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই তলায় কক্ষ বরাদ্দ পেতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে উভয় বিভাগের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এর প্রেক্ষিতে এদিন সকাল ১০ টায় ভবনটির সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
পরে বিষয়টি সমাধানে উপ-উপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডি ও দুই বিভাগের শিক্ষকরা আলোচনায় বসেন। আলোচনা শেষে আরবি বিভাগেকে তৃতীয় তলার পূর্ব দিক ও ইতিহাস বিভাগেকে পশ্চিম দিক বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা না রাখতে পেরে ফের উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় তাকে ভবনের সামনে ৪৫ মিনিট ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এসময় উপ-উপাচার্যকে তাৎক্ষণিক কক্ষগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
পরে প্রক্টরিয়াল বডি, দুই বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মাঝে ধস্তাধস্তি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এসময় ইতিহাস বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে উপ-উপাচার্যের দিকে তেড়ে আসতে দেখা গেছে। পরে এক সহকারী প্রক্টর ওই শিক্ষার্থীকে সরিয়ে দেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রদলের সহায়তায় উপ-উপাচার্যকে প্রশাসন ভবনে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। পরে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহগামী বাসগুলো আটকে পড়ে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ভোগান্তিতে পড়েন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও বিভাগের শিক্ষকরা আশ্বাস দিলে তালা খুলে দেন তারা।
এ বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সভাপতি ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, সর্বশেষ সবার সহযোগিতায় আমরা উপাচার্যের দেওয়া সুন্দর সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। দুই বিভাগই আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। এর আগে, সেখানে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করায় একটু হট্টগোল হয়েছিল। এর থেকে বেশি কিছু নয়।
আরবি বিভাগের সভাপতি ড. অধ্যাপক আব্দুল মোত্তালিব বলেন, সর্বসম্মতি সিদ্ধান্তক্রমে আরবি বিভাগকে তৃতীয় তলার পূর্ব দিক ও ইতিহাসকে পশ্চিম দিকটি দেওয়া হয়েছে। উভয়পক্ষ এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রথমে না মানলেও পরবর্তীতে কয়েক ঘন্টার বৈঠকে তাদের মানাতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, বিষয়টির সমাধান হয়েছে। তালা দেওয়ার বিষয়ে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞার পরও এমনটা করা দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি বসব। তারপর সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, আমার সাথে কেউ খারাপ আচরণ করেনি। শিক্ষার্থীরা ভবনের সামনে আমার কাছে দাবি নিয়ে এসেছিল। সেখানে আমাদের কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। পরে একটি ছাত্র সংগঠনের নেতারা আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
আজাহারুল ইসলাম/মো. মহিউদ্দিন