ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)

আগুনে পোড়ানো কোরআন শরীফ উদ্ধার, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৮:২৭, ১২ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৮:৩৫, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

আগুনে পোড়ানো কোরআন শরীফ উদ্ধার, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা/ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ আবাসিক হলে পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানোর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকেল ৩ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই ষড়যন্ত্রকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেন ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিগণ।

এসময় শিক্ষার্থীরা 'আল কোরআনের অপমান, সইবে নারে মুসলমান', 'আল কুরআনে আগুন দাওনি, দিয়েছ মুসলিমদের কলিজায়', 'ছাই চাপা আগুন বুকে নিয়েই রুখে দাড়াবো আমরা', 'জান দিবো তাও কোরআনের অবমাননা সইব না' প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

সমাবেশে শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পদন আল কোরআনকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা উপলদ্ধি করতে পারছি এটা কারা ঘটিয়েছে। যারা ৫ আগস্টের পরে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে তারাই এই ষড়যন্ত্র করেছে। এটা ফ্যাসিস্টদের প্রতিবিপ্লব করার চেষ্টা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়ে বলতে চাই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ বাংলাদেশের আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ন-আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান মিঠু বলেন, 'সকল দল-মতের বাইরে আমাদের একটায় পরিচয় আমরা মুসলমান। আর সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই বাংলাদেশী। আমাদের হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে যে সম্প্রীতির বন্ধন সেটা যারা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন তাদের হুশিয়ার করে বলে দিতে চাই আপনারা কোনোভাবেই সফল হবেন না। তাই আর যদি কোরআনের ওপর কোনো আঘাত আসে! কোনো রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নয়, একজন মুসলমান হিসেবে আমি সেটা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।

বিশ্ববিদ্যালয়েরর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, এক ধরনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে নতুন পাঁয়তারা করছে একটি কুচক্রী মহল। আমি শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই কারণ তারা ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো প্রকার ফাঁদে পা দেয়নি। তারা ভেবেছিল তাদের পরিকল্পনামাফিক শিক্ষার্থীরা একটা সাম্প্রদায়িক পাল্টা হামলা করবে। যাতে ক্যাম্পাসে একটা অরাজকতা সৃষ্টি হয়। কিন্তু আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের এই ফাঁদে পা না দিয়ে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধতার পরিচয় দিয়েছে।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কাউসার আল হাবিব। এ সময় বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টটিউটের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। 

প্রসঙ্গত, রোববার (১২ জানুয়ারি) ভোর থেকে দুপুর ১২টার মধ্যবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের  আবাসিক হলগুলো থেকে আগুনে পোড়ানো পবিত্র কোরআন শরীফ উদ্ধার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী, শহীদ জিয়াউর রহমান ও মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা অর্ধ-পোড়ানো কোরআন উদ্ধার করেন। এ ছাড়া শহীদ হবিবুর রহমান হলের মসজিদ থেকে কয়েকটি পাতা পোড়ানো অবস্থায় কোরআন উদ্ধার করে হল প্রশাসন।

লুবনা শারমিন/মো. মহিউদ্দিন

×