প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) দুই শিক্ষার্থীকে অন্যত্র উঠিয়ে নিয়ে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে সাকিব ওরফে টোকাই সাকিব (২৫), দেলোয়ার হোসেন (৩০), মোঃ সজল (২২) এবং মোঃ হৃদয় (২৭) নামের চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগের ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
থানায় অভিযোগের এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর আনুমানিক আড়াইটায় হাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থী অটোযোগে দিনাজপুর শহরের বড়বন্দর থেকে চৌরঙ্গী মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় চৌরঙ্গী মোড়ে পৌঁছানোর আগেই সাকিব এবং দেলোয়ার নামের দুই ব্যক্তি তাদের অটো থামিয়ে নিজেদেরকে প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দেয়। এ সময় ওই দুই শিক্ষার্থীর কাছে অবৈধ জিনিসপত্র আছে এমন অভিযোগ তুলে তাদেরকে তল্লাশির জন্য কালুর মোড় নামক জায়গায় খড়ির কারখানার কাছে নিয়ে যায় এবং লাঠি দিয়ে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এরপর সজল এবং হৃদয় নামের দুই ব্যক্তিও সেখানে উপস্থিত হন এবং ওই দুই শিক্ষার্থীর নিকট টাকা পয়সা দাবি করেন। এ সময় তাঁরা টাকা পয়সা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুনরায় তাঁদেরকে মারপিট করেন এবং বাসা ভাড়া ও পরীক্ষার ফি বাবদ তাঁদের কাছে থাকা ১৫১৭০ টাকা এবং তাঁদের কাছে থাকা বাটন ফোনটি ছিনিয়ে নেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শনিবার আনুমানিক দুপুর আড়াইটার সময় এই ঘটনা ঘটে। আমাদের অটো থামিয়ে প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দেয়। এরপর আমাদের কাছে অবৈধ জিনিস আছে এমন অভিযোগ তুলে খড়ির কারখানার কাছে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং এনরোলমেন্ট আর বাসা ভাড়ার জন্য কাছে থাকা ১৫১৭০ টাকা ছিনতাই করে। এ সময় তারা ৪ জন আমাদেরকে এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরবর্তীতে রাস্তায় একা পেলে খুন, জখম করবে বলে হুমকি দেয় এবং পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের ভয়ে পথচারী লোকজন কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। তারা পালিয়ে গেলে আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতায় তাদের পরিচয় সংগ্রহ করি। এরপর আমরা দুইজন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করি এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করি। প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্তদের পরিচয় সম্বন্ধে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ শামসুজ্জোহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত আছি। ঘটনাটি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ঘটেছে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সরাসরি কিছু করার এখতিয়ার নেই। তবে যে থানায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মামলা করেছে সেখানকার পুলিশ প্রশাসন যেনো দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসে সে বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় যোগাযোগ করেছি এবং এ বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগীকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।
এ বিষয়ে রবিবার রাতে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কালবেলাকে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আসামী ধরার কাজ চলছে। আসামী ধরার পর মামলার বাদবাকি কাজকর্ম সম্পন্ন করা হবে।
তবে শেষ খবর অনুযায়ী, সোমবার (২৩/১২/২৪) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এ ঘটনায় একজনও গ্রেপ্তার হয়নি।
রাজু