এমপিওভূক্ত স্কুুল
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ) কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা পেতে যাচ্ছেন বদলির সুযোগ। এ জন্য এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা ২০২৪ প্রণয়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে গত আগস্টে জারি করা নীতিমালাটি বাতিল করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক পারস্পরিক বদলির আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারবেন। এ জন্য কিছু শর্ত আছে।
এ নীতিমালা ‘স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ) কর্মরত এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষক বদলি নীতিমালা ২০২৪’ নামে অভিহিত হবে। এ নীতিমালা জারির তারিখ থেকে কার্যকর হবে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ) এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে।
বদলির সাধারণ শর্তাবলি—
*এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শূন্য পদের চাহিদা/ বিবরণ ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইনে প্রকাশ করবে।
*প্রকাশিত শূন্য পদের বিপরীতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বদলির আবেদন আহ্বান করবে।
*সমপদে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে বদলির জন্য ১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষকেরা। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন হবে।
*আবেদনকারী শিক্ষক তাঁর চাকরির আবেদনে উল্লেখকৃত নিজ জেলায় বদলির জন্য আবেদন করবেন। তবে নিজ জেলায় পদ শূন্য না থাকলে, নিজ বিভাগের যেকোনো জেলায় বিদ্যমান শূন্য পদের বিপরীতে বদলির আবেদন করতে পারবেন।
*প্রথম যোগদানের পর চাকরি দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করার জন্য যোগ্য হবেন।
*বদলি হয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর ন্যূনতম দুই বছর কর্মে নিয়োজিত থাকার পর পরবর্তী বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
*একজন শিক্ষক কর্মজীবনে সর্বোচ্চ দুইবার বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে একজন শিক্ষিকা কর্মজীবনে সর্বোচ্চ তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন।
*একটি শূন্য পদের জন্য একাধিক আবেদন পাওয়া গেলে ‘জ্যেষ্ঠতা, নারী ও দূরত্ব’ অগ্রাধিকার বিবেচনায় বদলি করতে হবে।
*চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে সিনিয়রিটি গণনা করা হবে।
*একটি পদের জন্য প্রতিযোগী সব আবেদনকারীর কর্মস্থল একই উপজেলায় হলে তাঁদের কর্মস্থল উপজেলার কেন্দ্র হতে কাঙ্ক্ষিত উপজেলার কেন্দ্রের দূরত্ব গণনাপূর্বক সবার জন্য প্রযোজ্য করতে হবে।
*একটি পদের জন্য প্রতিযোগী আবেদনকারী বিভিন্ন উপজেলার হলে তাঁদের কর্মস্থল জেলার কেন্দ্র হতে কাঙ্ক্ষিত জেলার কেন্দ্রের দূরত্ব গণনাপূর্বক সবার জন্য প্রযোজ্য করতে হবে।
*একটি পদের জন্য প্রতিযোগী আবেদনকারী বিভিন্ন জেলার হলে তাঁদের স্ব-স্ব জেলার কেন্দ্র হতে কাঙ্ক্ষিত জেলার কেন্দ্রের দূরত্ব গণনা করতে হবে।
*দূরত্ব পরিমাপের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েরর মডেল অনুসরণ করা হবে।
*অসম্পূর্ণ বা ভুল তথ্যসংবলিত আবেদন বিবেচনাযোগ্য হবে না। ইচ্ছাকৃত ভুল প্রমাণিত হলে শাস্তি আরোপ করা হবে।
*দলীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর এনটিআরসিএ অবশিষ্ট শূন্য পদে নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে।
*একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বছরে ১ (এক) জন শিক্ষক বদলির সুযোগ পাবেন।
বদলিপ্রক্রিয়া কীভাবে হবে—
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সফটওয়্যার তৈরি ও অনলাইন আবেদনের ফরম্যাট নির্ধারণ করবে। বদলিকৃত শিক্ষকের ইনডেক্স পূর্বের প্রতিষ্ঠান থেকে বদলিকৃত প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ট্রান্সফার হবে। বদলিকৃত শিক্ষকের এমপিও ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা এবং জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা পূর্ববৎ বজায় থাকবে। বদলির আবেদন অধিকার হিসেবে দাবি করা যাবে না। বদলিকৃত শিক্ষক কোনো ধরনের টিএ/ডিএ ভাতা পাবেন না।
আদেশ জারির ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান বদলিকৃত শিক্ষকের অবমুক্তি নিশ্চিত করবেন। অবমুক্ত হওয়ার পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান যোগদানের তথ্য চেয়ারম্যান, এনটিআরসিএ ও মহাপরিচালক, সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে অনলাইনে অবহিত করবেন। অবমুক্তি হতে যোগদান পর্যন্ত দিবসগুলো কর্মকাল হিসেবে গণ্য হবে।
শহীদ