ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১

চাঁদাবাজির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ঢা‌বি সাংবাদিককে আটকে রেখে হেনস্থা 

বিশ্ববিদ্যালয় রি‌পোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৮, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

চাঁদাবাজির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ঢা‌বি সাংবাদিককে আটকে রেখে হেনস্থা 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রাজধানীর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের একটি দোকানে চাঁদা চাওয়া হয়েছে এমন সিসিটিভি ফুটেজ পেয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের হেনস্থার শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ডেইলি ক্যাম্পাস অনলাইন পোর্টালের প্রতিনিধি ই এম সৌরভ।

ঘটনায় সাংবাদিককে দীর্ঘ সময় আটকে রাখা, মারধরের চেষ্টা ও ‘ভুয়া’ সাংবাদিক বলে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন নেতারা। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের চতুর্থ তলায় ‘রোগী নিবাস’ এর কার্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটে। 

এই ঘটনায় অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা হলেন- শাহবাগ থানার ২১ নং ওয়ার্ড থে‌কে ব‌হিষ্কৃত যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম খোকন, ২১ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোঃ শাহ আলম, শাহবাগ থানা ছাত্রদলের কর্মী শিমুল এবং স্বাধীন রেস্টুরেন্ট মালিক মোঃ নজরুল। এসময় ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের ২০-৩০ জন উপস্থিত ছিলেন। 

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, শাহবাগের আজিজ কোঅপারেটিভ মেডিসিন মার্কেটের উত্তর পাশে ‘বিসমিল্লাহ স্টোরে’ চাদা না দেওয়া হলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে এমন তথ্য ও ভিডিও পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ডেইলি ক্যাম্পাসের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি কে এম সৌরভ। এসময় অভিযুক্তরা তাকে ভুয়া সাংবাদিক বলে হেনস্থা করে ও আটকে রাখে। একপর্যায়ে তারা সাংবাদিককে তেড়ে মারতে আসে এবং পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয়। একসময় তিনি ঢাকা পোস্টের ঢাবি প্রতিবেদক খালিদ হাসানকে জানালে সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ঘটনায় শাহবাগ থানা বিএনপির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। 


ভুক্তভোগী ডেইলি ক্যাম্পাসের সাংবাদিক ই এম সৌরভ বলেন, শাহবাগের আজিজ মার্কেটের ‘বিসমিল্লাহ স্টোরে’ চাঁদাবাজির একটি ভিডিও ফুটেজ পেয়ে আমি সেখানে গিয়ে স্বাধীন রেস্টুরেন্টের মালিক নজরুলের সাথে কথা বলি। একসময় সে শাহবাগের ২১ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাহ আলমকে কল দেন। তিনি এসে আমাকে কল রেকর্ডিং করতে নিষেধ করেন এবং আমার পরিচয় জানতে চান। পরে তারা আমাকে আজিজ মার্কেটের রোগী নিবাসের মালিক আওয়ামীলীগ নেতা সাদ্দামের  কার্যালয়ে নিয়ে যান। 

তিনি বলেন, এরপর শাহ আলম সেখানে থাকা অন্যান্য ব্যক্তিদের বলতে থাকেন আমি নাকি ঘটনার সমঝোতার জন্য তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছি। তিনি এসময় আমাকে ভুয়া সাংবাদিক বলতে থাকেন এবং আমার ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তার সাথে থাকা ৪ জন ভিডিও করছিল যে আমি ভুয়া সাংবাদিক তাই তারা আমাকে ধরেছে। এসময় তাদের মধ্য থেকে আমাকে একজন তেড়ে মারতে আসে। 

সৌরভ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাহ আলম বলছিল যে আমাকে পুলিশে দিবে। সেখানে আমাকে আধা ঘন্টারও বেশি সময় আটকে রাখা হয়।  এরপর সাংবাদিক সমিতির ভাইয়েরা গেলে বাকবিতন্ডার পর ওয়ার্ড বিএনপির পক্ষ থেকে আমার কাছে মাফ চাওয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাহ আলমও আমার কাছে মাফ চায়।


এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন বলেন, ঘটনা জানতে পেরে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই এবং তারা আমাদের কাছে স্বীকার করেন যে তারা চাঁদাবাজের সাথে সংশ্লিষ্ট। তারা আমাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাও করেন। 

তিনি বলেন, আসলে এই ধরনের ঘটনা কোনভাবেই কাম্য না। দেশের নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তিত অবস্থাতেও এমন ধরনের ঘটনা আমাদেরকে হতাশ করে। সকল রাজনৈতিক দলগুলোকেই এগুলো মাথায় রেখে চলা উচিত। এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

ইসরাত

×