ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১

গণঅভ্যুত্থানের নতুন শক্তিকে সংগঠিত করতে হবে: জোনায়েদ সাকি 

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানের নতুন শক্তিকে সংগঠিত করতে হবে: জোনায়েদ সাকি 

রাবিতে জোনায়েদ সাকি

গণঅভ্যুত্থানের নতুন শক্তিকে সংগঠিত করতে হবে। তাহলেই এই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সকল শক্তির পরিবর্তন আসবে। আমরা রাজনৈতিক প্রস্তাবনায় বলেছি রাষ্ট্র মেরামত করতে চাই। তবে আমাদের রাজনৈতিক ব্যবহার সেই আগের মতোই আছে। এটা বদলানোর জন্য জনগণের ভেতর থেকে যে অভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছে সেই অভ্যুত্থানের একটা শক্তি লাগবে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ডিন'স কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত 'গণঅভ্যুত্থান, জন আকাঙ্খা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভবিষ্যৎ' শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা 'উত্তরণ' ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার সংগঠন 'যোগসূত্র' এর যৌথ আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, 'রাজনীতি করবো না এটা যদি ভাবেন তাহলে আপনি স্থান ছেড়ে দিচ্ছেন। এভাবে ছেড়ে দেওয়ার ফলেই এই স্থানগুলো দখলে রেখেই আমাদের ওপর নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। তাই স্থান ছেড়ে দেওয়া যাবে না। এই জুলাই অভ্যুত্থানের আগে যে রাজনৈতিক চর্চা চর্চিত হয়েছে তাতে দেখা যায় জনপ্রতিনিধিরা জনগণের ওপর প্রভুত্ব করেন। অথচ গণতন্ত্রের মূল কথা ছিল জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইনইকুয়ালিটি আছে, ইনজাস্টিস আছে এবং সেটা নিয়ে সংঘাত আছে। ওদের থেকে রাষ্ট্র জন্মায়, রাষ্ট্র বদলায়। আপনি এই যে বর্তমানে যে রাষ্ট্রটা নির্মাণ করতে চাচ্ছেন তা এই ইনইকুয়ালিটি ও ইনজাস্টিসকে ডিল করতে পারবে কিনা তার উপর নির্ভর করবে এটার টেকসই ক্ষমতা আছে কিনা।

আমরা নিজের দেশের মধ্যেই ঔপনিবেশিক শাসক তৈরি হলাম। একটা রাষ্ট্র যদি তার নাগরিককে অধিকার নাই দেয় তবে তার দ্বায়িত্ব কর্তব্যের জায়গাটা থাকলো না।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন আমার অধিকারের কথা বলি তখন আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটা জায়গা আছে, তবে আমি কিন্তু আপনার অধিকারকে ক্ষুন্ন করতে পারি না। আমার অধিকার আপনার অধিকারকে খর্ব করতে পারবে না। ওই পয়েন্টেই কিন্তু আমরা কর্তব্যের পালা হয় এবং এই অধিকার কর্তব্যের লেনাদেনার উপর নাগরিকতা দাড়ায়, একটা রাষ্ট্র তৈরি হয়। সেই রাষ্ট্রটা আমরা ৭২ এ বন্দোবস্ত করতে পারি নাই। কোনো সরকার ক্ষমতা বন্টন করতে চায় না। সবাই ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায়।

আলোচক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন বলেন, একটা দল যাদের নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র কান্ডারী মনে করতো, গনঅভ্যুথানের যে স্বপ্ন আমাদের ছিল একটা পক্ষ সে ভাষাকে ধারন করতে পারে নি। জুলাই অভ্যুথান একটা লম্বা সময় ধরে হয়েছে এবং তা চূড়ান্ত হয় জুলাইয়ে । ১৩ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ সত্যিকার ফ্যাসিস্ট রুপ ধারণ করে। পরবর্তীতে আরও প্রমাণ পাই ১৮ সালে, ২৪ সালে। মৃত্যু অথবা মুক্তি এটাই ছিলো গণ-অভ্যুত্থানের প্রধান ভাষা। এই বাক্যই আমাদের স্বাধীন করেছে। সকল মৃত্যুকে উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার যে অভ্যুথান তা বাংলাদেশে এর আগে হয় নি। যার সাথে ৬৯ এর তুলনা করা যায়। ধর্ম আমাদের পাপ-পুণ্য বলে, স্বর্গ নরক অনেক কিছুই দেখায়,কিন্তু ধর্মবোধ যেটা মূল যে কথা তা হলো ন্যায়ের পথে চলা এবং আমার মনে হয় এই ধর্মবোধ একটা গুরুত্বপূর্ন অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে। তারই চূড়ান্ত রুপ হলো শেখ হাসিনার পতন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। 

রিয়াদ

×