বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে যৌথ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
কুয়ালালামপুরের একটি হোটেলে বুধবার (২৭ নভেম্বর) এ চুক্তি সম্পাদিত হয়। ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ এবং ইএমজিএস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নেইভ তাজউদ্দীন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী ওয়াইবি দাতো সেরি দিরাজা ড. জাম্ব্রি আব্দ কাদিরের উপস্থিতিতে ইউজিসি চেয়ারম্যান এবং ইএমজিএস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেদের মধ্যে চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন।
এই সমঝোতার আওতায় দুই প্রতিষ্ঠান উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য বিনিময়, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেরকে মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্পর্কে অবহিতকরণ, মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা প্রদান, স্কলারশিপ ও আর্থিক সহযোগিতা বিষয়ে তথ্য প্রদানসহ গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি কার্যক্রম পরিচালনা করতে সম্মত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ইউজিসি সচিব ড. ফখরুল ইসলাম, পরিচালক মো. রেজাউল করিম হাওলাদার, ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর, ইউজিসি’র অতিরিক্ত পরিচালক তাহমিনা রহমান, যুগ্মসচিব মুহম্মদ নাজমুল ইসলাম, এবং চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব (অতিরিক্ত পরিচালক) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সমঝোতা বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ফায়েজ বলেন, বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭৭টি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে বাংলাদেশের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু উচ্চশিক্ষার প্রসারের সাথে সাথে শিক্ষার মানোন্নয়নও খুব গুরুত্বপূরর্ণ। বর্তমানে ইউজিসি উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নকে প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক উচ্চশিক্ষাখাতে যৌথ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের পথ প্রশস্ত করেছে। তিনি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার জন্য ইএমজিএস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ প্রদান করেন।
সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, মালয়েশিয়া পশ্চিমা বিশ্বের আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে তাদের ইসলামী মূল্যবোধকে সমন্বয় করে একটি নতুন ধরনের শিক্ষার মডেল তৈরি করেছে। এই মডেল বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার রূপরেখা তৈরির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, এর সাথে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় জুলাই মুভমেন্টের মূল ভিত্তি “সামাজিক ন্যায় বিচার” সংযুক্ত করে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি এবং মালয়েশিয়ার সাথে গবেষণা সহযোগিতাসহ উচ্চশিক্ষার পারস্পারিক সহযোগিতার রূপরেখা প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব।
হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এই সহযোগিতা বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। এই সমঝোতা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য আরও সুযোগ উন্মুক্ত করবে বলে জানান।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬২৮৮ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। একাডেমিক এবং জিও-পার্টনারশিপ এবং সহযোগিতামূলক উদ্যোগের গতিশীল মডেল হিসাবে এই সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে শিক্ষাবিদ ও কূটনীতিকরা।
জাফরান