ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) লালন শাহ হলে র্যাগিংয়ের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী মো. তারেক। তিনি ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ৯ জনের বিরুদ্ধে ইবি থানায় এই মামলা দায়ের করেন তিনি। এর মধ্যে থানায় আটক থাকা ৫ শিক্ষার্থীকে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ‘চালান’ করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৩২৩, ৫০৬ নং ধারা অনুযায়ী মামলা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ শেখ, শরিফুল ইসলাম লিমন, কান্ত বড়ুয়া, জিহাদ, শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল ও ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সঞ্চয় বড়ুয়া। এদের মধ্যে থানায় আটক ছিলেন সাব্বির, শেহান, লিমন, কান্ত ও সঞ্জয়।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, মোট ৯ জনের নামে মামলা হয়েছে। থানায় আটককৃত ৫ জনকে কোর্টে চালান করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ফরিদ উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, র্যাগিংয়ের ঘটনার সময় পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ সেখানে যায়। পরে র্যাগিংয়ে জড়িতদের পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়। এরপর আজকে ভুক্তভোগীদের মধ্য থেকে মো. তারেক নামে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। ফলে আজকে (মঙ্গলবার) কুষ্টিয়া কোর্টে আসামিদের প্রেরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে সোমবার মধ্যরাতে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে। রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ৩৩০ নং কক্ষে এই ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ দিন ধরে র্যাগিংয়ের নামে জুনিয়রদের পর্ণ তারকার নাম ও তারকা সাজিয়ে অভিনয়, অশ্লীল কবিতা পাঠ, সিগারেট-গাঁজা খাওয়ার অভিনয় ও কল দিয়ে বাজে ভাষা বলানো ও বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটি আগামী রবিবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর ড. ফখরুল ইসলাম, হলের আবাসিক শিক্ষক রাসুল-ই-ইলাহী, সদস্য সচিব হলের সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমান।
লালন শাহ প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমি নিজেই এর আহ্বায়ক। আগামী রবিবারের মধ্যে আমরা সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, যেহেতু হলের বিষয়। হল বডি তদন্তের পর আমাদের প্রতিবেদন ও সুপারিশ পেশ করবে। তারপর আমরা যেখানে যা করার করবো। আমরা সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথেই বসেছি। এই ব্যাপারটা আমরা সিরিয়াসলি নিচ্ছি। কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
নুসরাত