নিজের জীবনকে বিভিন্ন বাস্তবধর্মী দক্ষতায় সজ্জিত করে তুললে এটি যে কেবল আমাদের শিক্ষাজীবনে প্রভাব রাখবে তা নয়, আমাদের দৃঢ় ব্যক্তিত্ববোধ জাগ্রত করবে। এসব দক্ষতা আমরা যেকোনো বয়সেই অর্জন করতে পারি, কিন্তু শিক্ষা জীবনে এর অর্জন আমাদের ব্যক্তিগত সাফল্যকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।
এমন কিছু দক্ষতা যা আমাদের শিক্ষাজীবনে শিখে রাখা প্রয়োজন:
১. সময় ব্যবস্থাপনা:
এই দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে এমন সর্বশ্রেষ্ঠ দক্ষতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সময় ব্যবস্থাপনা। সময়ের সঠিক বণ্টন শিখতে পারা যেকোনো ছাত্রের শিক্ষা, পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে অধিক সাফল্য বয়ে আনতে পারে। স্বল্প সময়ে অধিক কাজ করে জীবনের অতিরিক্ত চাপের মাত্রা হ্রাস করতে পারে।
২. আর্থিক সাক্ষরতা:
আমাদের প্রয়োজন হিসাবে বাজেট করা, অর্থের সংরক্ষণ করা এবং সে সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞানার্জন করা হলে শিক্ষার্থীরা অর্থের ব্যাপারে দায়িত্বশীল আচরণ করতে শিখবে। আর্থিক সাক্ষরতা একটি কম আলোচিত, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা যা শিক্ষার্থীদের কীভাবে বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অর্থ ব্যয় করতে, বিনিয়োগ করতে এবং সঞ্চয় করতে হয় তা শিখতে সক্ষম করে।
৩. কার্যকর যোগাযোগ:
বর্তমান চাকরির বাজারে মূল দক্ষতা হলো সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারার ক্ষমতা। নিজস্ব চিন্তাভাবনাগুলো কার্যকরভাবে প্রকাশ করার জন্য একটি দক্ষতা অর্জন করা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত এবং পেশাদার সাফল্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয়।
৪. ক্রিটিক্যাল থিংকিং:
চাকরিপ্রার্থীদের নিকট নিয়োগকর্তাদের প্রধান চাহিদা হলো সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা। এই দক্ষতা গড়ে তুলতে, শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা বাড়াতে হবে, বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থিত পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে এবং বিশ্লেষণ করে বোঝা শিখতে হবে।
৫. স্থিতিস্থাপকতা এবং অভিযোজনযোগ্যতা:
সদা বিকশিত শিক্ষার দুনিয়ায়, স্থিতিস্থাপকতা এবং অভিযোজনযোগ্যতার গুরুত্ব ভিন্নভাবে উল্লেখ করা আসলে খুব দরকার নেই। বিপত্তি এবং পরিবর্তিত পরিবেশকে বাধা হিসাবে বিবেচনা করার পরিবর্তে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ হিসাবে নিতে শিখতে হবে। ব্যর্থতাকে গ্রহণ করতে পারলে জীবনের স্থিতিস্থাপকতা বিকশিত হয়।
৬. ডিজিটাল সাক্ষরতা:
মানব অস্তিত্বের প্রতিটি ব্যাপারে ডিজিটাল প্রযুক্তি ছড়িয়ে আহচে। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষতা আগের তুলনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল সাক্ষরতা গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে শিখতে হবে, তথ্যের উৎস যাচাই করতে হবে এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাব বুঝতে হবে।
৭. ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স:
এই প্রযুক্তি দ্বারা চালিত বিশ্বে রোবট থেকে আমাদের পার্থক্য হলো সহানুভূতির শক্তিতে। সংবেদনশীল বুদ্ধিমত্তা গড়ে তোলার মধ্যে নিজের আবেগকে স্বীকৃতি দেওয়া, বোঝা এবং পরিচালনা করা এবং অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীলভাবে প্রতিক্রিয়া জানানোর দক্ষতা অর্জন আমাদের অন্যতম একটি শিক্ষা।
৮. লক্ষ্য নির্ধারণ এবং স্ব-অনুপ্রেরণা:
অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণে দক্ষতা থাকা শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা এবং দায়িত্বের বোধ গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করে। আত্মবিশ্বাস এবং অনুপ্রেরণা বাড়ানোর জন্য কীভাবে স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করা যায় তা বোঝা, ভবিষ্যতের জন্য তাদের সঠিক পরিকল্পনা রয়েছে এই ধারণাটিকে শক্তিশালী করতে শেখা আমাদের বিশেষ প্রয়োজন।
তানজিলা