স্মৃতির পাতায় বর্ণিল দিন
প্রতিটি জাতিরই নিজস্ব একটি ভাষা আছে এবং প্রত্যেক ভাষারই আছে সাহিত্য জগৎ। আর এই জগৎটাই সেই ভাষাকে সুন্দর ও সাবলীল রূপ দান করে অন্য ভাষাভাষী জাতির কাছে উপস্থাপন করে নিজেদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আরবি ভাষার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। এই ভাষা যেমন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও জীবন্ত ভাষা, তেমনি এর সাহিত্যকর্ম ও শ্রেষ্ঠত্বের অবস্থানে ১ম সারিতে অনড়। যুগশ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম ও সাহিত্যিক এই আরবি ভাষারই ফসল।
সাহিত্যের রূপ-লাবণ্য বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ১৯২১ সালে সর্বপ্রথম আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিভাগ প্রতিষ্ঠা হয়; সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া ১৯৭৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯৯১ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্রগুলো প্রতিষ্ঠা হয়।
এই সাহিত্যের প্রাঞ্জলতা, উদারতা ও সাবলীলতা এই বাঙালি কে উপলব্ধি করানোর জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মাঝে মাঝেই নানা বর্ণিল আয়োজন করে থাকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-১২-২০২৩, ‘বার্ষিক প্রীতিভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ দিনটি ছিল এইরকম সাহিত্যের রূপ-লাবণ্যে ঘেরা বর্ণিল দিন। ক্যাম্পাসে শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার টিএসসিসি-এর সামনে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠাটি। কী ছিল না সেই অনুষ্ঠানে? সাহিত্যের মূল্যবান সব শাখার বাস্তবিক রূপ দান করা হয়েছিল প্রত্যেকটা আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
বেলা ২টায় মধ্যাহ্নভোজের পর থেকেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এই প্রোগ্রামের সূচনা হয়। তারপর হামদ্-নাত এবং এর পরেই থাকে আরবি বিভাগের শিক্ষক মহোদয়দের বক্তব্য। প্রথমে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন অধ্যাপক ডা. আতোয়ার রহমান স্যার। তিনি অনুষ্ঠানের সুন্দর সমাপ্তির প্রত্যাশা এবং আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানান। এরপর ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য রাখেন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকম-লীদের মধ্যে অধ্যাপক ড. কামারুজ্জামান, ড. আবু সালেহ মোহাম্মদ ত্বহা, ড. সালেকুজ্জামান, ড. নেছার উদ্দিন, ড. মতিউর রহমান এবং ড. সেতাউর রহমান স্যারসহ আরও অনেকেই।
তারপরেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয় ছোট্ট একটি নাটিকা আজব ভাইভার মধ্য দিয়ে। এতে অভিনয় করেন ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহদী হাসান ও নেছার উদ্দিন চৌধুরী। চলতে থাকে নাটক পর্বের আরও একটি পরিবেশনা ‘লাশ বিড়ম্বনা’। এতে অভিনয় করেন ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান, জাহিদ হাসান, জিহাদ ও ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম ও ইমরান। পরবর্তী পর্বে রম্য বিতর্ক, ‘ফলের রাজ্যে আমি সেরা’।
আম, কাঁঠাল, তরমুজ ও কলাই ছিল সেরা হওয়ার কচকচানিতে। বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো বাউল গান। এই গান মঞ্চায়ন করেন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতি রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা’ সংগঠনের শিল্পীগণ। সবচেয়ে ঝমকালো আয়োজন ছিল এরাবিয়ান স্টাইলের শো অনুষ্ঠানটি। যেটি পুরো অনুষ্ঠানের মধ্যমণি হিসেবে কাজ করেছে।